ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

আইসিটিতে বাংলাদেশ টার্নিং পয়েন্টে

আহ্‌সান কবীর, আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১২
আইসিটিতে বাংলাদেশ টার্নিং পয়েন্টে

বাংলাদেশের আইসিটি সাংবাদিকতায় সাব্বিন হাসান একটি পরিচিত নাম। আইসিটি বিষয়ে লেখালেখি করেছেন দেশের প্রায় সব দৈনিকে।

 শুরু ২০০০ সালে। বাংলাদেশের কারিকুলাম শিক্ষাভিত্তিক (শিক্ষা বোর্ড) ইংরেজি ব্যাকরণের প্রথম সফটওয়্যার কেয়ারের নির্মাতা। ২০০০ সালের এ ঘটনা মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। তার উদ্ভাবিত এ সফটওয়্যারটি আন্তর্জাতিকভাবেও আলোচিত হয়। এর ফলে সাব্বিন হাসান বিশ্বে ‍শিক্ষাভিত্তিক তরুণ সফটওয়্যার নির্মাতাদের তালিকায় চলে আসেন। বর্তমানে অনলাইন পত্রিকা বাংলানিউজের আইসিটি এডিটর। ২০১০ এর শুরুর দিকে বাংলানিউজে যোগ দেওয়ার আগে দৈনিক সমকালের তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সম্পাদক ছিলেন।

আগামী ১১ আগস্ট অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন সাব্বিন হাসান। নির্বাচনকে সামনে রেখে তার একটি সাক্ষাৎকার এখানে উপস্থাপন করা হলো।

আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম গঠনের পেছনের গল্পটা কি ছিল?

সাব্বিন হাসান: ২০০২ সালে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জ্যেষ্ঠদের উদ্যোগে এ সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন সাধারণ সদস্য ছিলাম।  এরপর সংগঠনের জ্যেষ্ঠদের অনুরোধে নির্বাহী কমিটিতে আসি।  যখন সংগঠন শুরু হয় তখন আইসিটির বিষয়টি মূলধারার সাংবাদিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। কিন্তু এখন আইসিটি দৈনিক পত্রিকাসহ সব ধরনের মিডিয়ায় সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে। প্রতিদিন আইসিটির আলাদা পাতা বের করছে দৈনিক পত্রিকাগুলো। এ ছাড়া অনলাইন এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াতেও শীর্ষ খবর হচ্ছে আইসিটি।

আপনিতো বিআইজেএফ এর বর্তমান অর্থ সম্পাদক। এবার সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন। জয়ের ব্যাপারে কতটা আশাবাদী?

সাব্বিন হাসান: আমি পজেটিভ। যারা দীর্ঘদিন ধরে এই সংগঠন করছেন তারা গতবার আমাকে সর্বাধিক ভোটে নির্বাচিত করেছেন। দীর্ঘদিন ‍আইসিটি সেক্টরে জড়িত আছি। সবার মাঝে আমার একটা সহজ পরিচিতি আছে। আর আইসিটি জার্নালিস্টরা কোনো অংশেই কম বিজ্ঞ নন। সে হিসেবে মনে করি, ভোটাররা সঠিক সিদ্ধান্তই নেবেন।

দেশের আইসিটি সেক্টরের বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত কি? এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?  

সাব্বিন হাসান: আইসিটি সেক্টরের বিস্তার নির্ভর করে ইন্টারনেটের প্রবৃদ্ধির ওপর। বাংলাদেশে বর্তমানে ইন্টারনেট ইউজারের সংখ্যা ৩ কোটি ২০ লাখ। ২০১৪ সাল নাগাদ এ সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এর সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে অচিরেই বাংলাদেশে আসছে থ্রিজি প্রযুক্তি। আউটসোর্সিংয়ে বিশ্বে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। এসব তথ্যে একটি বিষয়ই পরিষ্কার ফুটে ওঠে, তা হলো আসিটিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা উজ্জ্বল।

সেক্ষেত্রে আইসিটি সাংবাদিকতার ভূমিকাকে কিভাবে দেখছেন?

সাব্বিন হাসান: ডিজিটাল বাংলাদেশের যে রোডম্যাপ তাতে আইসিটি সাংবাদিকতার ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের লক্ষ্য পূরণে আইসিটি সাংবাদিকতা এখানে নিরলস অবদান রেখে যাচ্ছে। এ প্রক্রিয়াকে বেগবান করতে আইসিটি সাংবাদিকতার ভূমিকা অপরিসীম।

ঠিক এ কারণেই বিআইজেএফ এর সাংগঠনিক পদগুলোতে অবশ্যই যারা অভিজ্ঞ তাদের উপস্থিতি প্রয়োজন। এর সঙ্গে নতুনদের জন্যও একটা জায়গা তৈরি হচ্ছে।

বাংলাদেশের আইসিটি খাত সমৃদ্ধকরণে বিআইজেএফ এর ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত?

সাব্বিন হাসান: বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আইসিটিতে বাংলাদেশ বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ ও টার্নিং মুহূর্তে আছে। সে বিবেচনায় বিআইজেএফ এর নির্বাচন খুবই গুরত্বপূর্ণ। আর একই সঙ্গে এই নির্বাচনে যোগ্য ব্যক্তি বিশেষ করে সাংগঠনিক দক্ষতা আছে এমন ব্যক্তিদের নির্বাচিত হওয়া প্রয়োজন। যোগ্য ব্যক্তিরা নির্বাচিত হলেই আমরা যে ধরনের শক্তিশালী ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে চাই, তা বাস্তবায়ন সম্ভব। বিআইজেএফ দেশের প্রতিটি মানুষকে আইসিটি লিটারেট পারসনে পরিণত করার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। আইসিটিকে এখন বলা হয় নলেজ ইন্ডাস্ট্রি। এই নলেজ ইন্ডাস্ট্রি বা জ্ঞানভিত্তিক শিল্পের সুফল সবার হাতে পৌঁছে দিতে বিআইজেএফ সরাসরি দায়িত্ব পালন করতে পারে।

সংগঠনের অনেক পুরনো সদস্য আছেন, প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য আছেন যারা আসলে চান এ প্রতিষ্ঠান একটি যৌক্তিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে দেশের আইসিটির বিকাশে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখুক।

অন্যান্য পদে কারা কারা নির্বাচন করছেন?

সাব্বিন হাসান: এবারের নির্বাচনে মোট ১২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে এরই মধ্যে ৭জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইত্তেফাকের আইসিটি ইনচার্জ মোজাহিদুল ইসলাম ও কালের কণ্ঠের জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক মুহম্মদ খান। সহ-সভাপতি পদে একক প্রার্থী যুগান্তরের আইসিটি ডিপার্টমেন্ট ইনচার্জ তারিক রহমান।

এদিকে জয়েন্ট সেক্রেটারি পদে একক প্রার্থী কালের কণ্ঠের বিজনেস এডিটর মাসুদ রুমি, কোষাধ্যক্ষ পদে একক প্রার্থী সমকালের আইসিটি পেজ ইনচার্জ হাসান জাকির, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একক প্রার্থী সকালের খবরের আইটি পেজ ইনচার্জ তারিকুর রহমান খান বাদল, গবেষণা সম্পাদক পদে একক প্রার্থী নয়া দিগন্তের সহ-সম্পাদক (আইসিটি) নাজমুল হোসেন। আর নির্বাহী সদস্যপদে লড়ছেন মাসিক কম্পিউটার জগতের সহকারী সম্পাদক এম এ হক অনু ও সংবাদের স্টাফ রিপোর্টার (আইসিটি) কাওসার উদ্দিন।

আইসিটি সাংবাদিকতায় কি করে এলেন?

সাব্বিন হাসান: আইসিটি সাংবাদিতকতায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছি। শুরুটা ২০০০ সালে। বাংলাদেশের কারিকুলাম শিক্ষাভিত্তিক (শিক্ষা বোর্ড) ইংরেজি ব্যাকরণের প্রথম সফটওয়্যার কেয়ার প্রকাশের পর মিডিয়ায় তা আলোচিত হয়। বাংলাদেশে প্রায় সবকটি দৈনিকে বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। এ উদ্ভাবনা নিয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়। এসব ঘটনায় আইসিটি জার্নালিজমে উৎসাহবোধ করি। বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখির সূত্রে ২০০৫ সালে দৈনিক সমকালে যোগ দিই। এরপর ২০১০ থেকে বাংলানিউজে।

নির্বাচন বিষয়ে সর্বশেষ আপডেট?

সাব্বিন হাসান: আগামী ১১ আগস্ট এ নির্বাচন ঢাকার সোনারগাঁও রোডে অবস্থিত বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। এর আগে ৪ আগস্ট প্রার্থী পরিচিতি সভাও একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন মোস্তফা জব্বার। নির্বাচন বোর্ডের অপর দুজন সম্মানিত সদস্য হলেন পল্লব মোহাইমেন এবং মুনির হাসান।

বাংলাদেশ সময় ১৭২৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১২

সম্পাদনা:জুয়েল মাজহার, কনসালট্যান্ট এডিটর[email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।