ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

অনলাইন মিডিয়া প্রমাণ করে এদেশের মানুষ প্রযুক্তিমুখী: আবদুল মুক্তাদির

মনোয়ারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১২
অনলাইন মিডিয়া প্রমাণ করে এদেশের মানুষ প্রযুক্তিমুখী: আবদুল মুক্তাদির

ঢাকা: ঢাকার আগারগাঁওস্থ আইডিবি ভবনের বিসিএস কম্পিউটার সিটির কম্পিউটার মার্কেট হিসেবে দেশে ও বিদেশে পরিচিত। দেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে এ বিশেষায়িত বাজার।



বিসিএস কম্পিউটার সিটির সাধারণ সম্পাদক এএসএম আবদুল মুক্তাদির বর্তমান কম্পিউটার মার্কেট, কম্পউটারের চাহিদা, আগামীর প্রযুক্তি ও প্রযুক্তি জগতের বেশ কিছু বিষয়ে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি প্রযুক্তিপণ্য প্রতিষ্ঠান নেটস্টারের উদ্যোক্তা।

আবদুল মুক্তাদির বলেন, দেশে প্রযুক্তিপণ্যের বিকাশ ও সম্প্রসারণ, তৃণমূল পর্যায়ে তা ব্যবহারের সুযোগ তৈরি ও সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করছে বিসিএস কম্পিউটার সিটি। সঙ্গে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে এ মার্কেট।

ক্রেতাদের স্বার্থের ব্যাপারে তিনি বলেন, এখানে ক্রেতাদের সর্বোচ্চ স্বার্থ দেখা হয়। এ ছাড়াও মানসম্পন্ন পণ্য আমদানি নিশ্চিত করেছি। কোনোভাবেই যেন ক্রেতার স্বার্থ বিঘ্নিত না হয় এ বিষয়ে সচেষ্ট থাকা হয়।

দেশের এ মার্কেট অভ্যন্তরীণ চাহিদার কম্পিউটার পণ্য চাহিদার অনেকটাই পূরণ করে। ঢাকায় কম্পিউটারের অন্য মার্কেট থাকলেও সেখানে নানারকম দোকান থাকে। কিন্ত বিসিএস সিটির এ মার্কেটে শুধূই কম্পিউটার বিক্রি করা হয়। এ মার্কেট নিয়ে আরও এগিয়ে যাবো। দেশের প্রযুক্তিমনষ্ক মানুষও এগোবে।

এক সময় দেখা যাবে ঈদে কাপড়ের দোকানে যেমন ভীড় হয় কম্পিউটারে দোকানেও তেমনই হবে। মানুষ নিজেকে এগিয়ে রাখার জন্য কম্পিউটারে আরও অভ্যস্ত হবে। গ্রামের শিক্ষার্থীরাও এখন কম্পিউটারের কেনার কথা ভাবে। কারন এর প্রয়োজনীয়তা সবাই উপলব্ধি করতে পারছে।

অনেক মানুষ কম্পিউটার ব্যবহার না করলেও এর গুরুত্ব বুঝতে পারেন। এখন কম্পিউটার আর কারো কাছে অধরা কোনো যন্ত্র নয়।

তবে এটা কথা বলতেই হবে সাধারণ মানুষ চিন্তার মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশকে নিয়ে নিয়েছে। তাই প্রযুক্তি সেক্টর, অনলাইন সেক্টর বা তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে।

অনলাইন মিডিয়া বা বিভিন্ন সামাজিক সাইটের জনপ্রিয়তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনলাইন মিডিয়া বা আউটসোর্সিংয়ের জনপ্রিয়তাই প্রমাণ করে বাংলাদেশের মানুষ প্রযুক্তিমুখী। এখন অনেকগুলো অনলাইন পত্রিকা হয়েছে। আগামীতে হবে। অনেকের পাঠক সংখ্যা সাধারণ মানের পত্রিকার থেকে বেশি।

মানুষ ব্লগে লিখছে, ফেসবুকে সব কথা প্রকাশ করছে একটা আলাদা জগতে বাস করছে। । সব মিলিয়ে আমরা প্রযুক্তির সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছি। এখন সবকিছু অনলাইনে হচ্ছে। কেনাকাটা, লেনদেন, যোগাযোগ সবকিছুই। অনলাইনে না থাকা মানে অফ থাকা। সবার হাতে স্মার্টফোন, কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকে। ফলে জীবনযাত্রার প্রযুক্তির প্রভাব স্পষ্টভাবেই দেখা যাচ্ছে। এটা বলা যায় আগামীর ব্যবসায় প্রযুক্তিপণ্যই নেতৃত্ব দেবে।

সাম্প্রতিক উদ্যোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ঈদে প্রিয়জনকে কম্পিউটার উপহার দিন’ এমন বার্তায় গেল ঈদে ‘ঈদ ফ্যাস্টিভ্যাল ২০১২’ আয়োজন করেছিলাম। আমরা চাই শুধু জামাকাপড় বা জুতা নয় মানুষ ঈদে আরও বেশি বেশি কম্পিউটার কিনতে অভ্যস্ত হোক।

মানুষকে আমরা প্রযুক্তিপণ্যের ব্যাপারে অনেক বেশি আগ্রহী করতে চাই। এজন্য আমাদের  প্রযুক্তিকেন্দ্রিক উৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত। আমরা সিটি আইটি ফেয়ার ছাড়াও নানা সময়ে নানা আয়োজন করে থাকি। এখন প্রিয়জনকে প্রযুক্তিপণ্য উপহার দেওয়ার প্রচলন শুরু হয়েছে। এ ধারাকে আরও সক্রিয় করতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

এ শিল্পের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে কিছুটা এগিয়ে গেলেও হার্ডওয়্যার তৈরিতে একেবারে পিছিয়ে। তবে আশাবাদি থাকতে চাই। বাজারে চাহিদার কারণে ভবিষ্যতে বিশ্বের নামিদামি সব ব্র্যান্ড হয়তো বাংলাদেশে তাদের নির্মাণ কারখানা প্রতিষ্ঠা করবে। যেমনটি হয়েছে চীনে। তখন এসব পণ্যের দাম আরও কমবে। প্রযুক্তির বাজারের সেই দিনে বেশি দূরে নয়। বাংলাদেশে প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা এভাবে অব্যাহত থাকলে এমন অর্জন কঠিন কিছু নয়।

প্রযুক্তি শিক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ। কিন্ত পৃষ্টপোষকতা কম। সরকারকে এ ব্যপারে উদ্যোগী হতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে কোর্সে বিভিন্ন প্রকল্পের পৃষ্ঠপোষকতার জন্য বিপুল অর্থ খরচ করে থাকে।

শুধু তাই নয়, তাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তৈরি প্রকল্পগুলোর বাণিজ্যিকায়নের দায়িত্ব নিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে সেসব দেশে প্রতিবছরই নিত্যনতুন প্রকল্পের ভিত্তিতে তৈরি হয় নতুন নতুন প্রযুক্তিপণ্য।

আমাদেরকেও এ পথ অনুসরণ করতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের বিপুল জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে। বর্তমান বিশ্বের প্রযুক্তিগত সুবিধার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। এ মুহূর্তে তথ্যপ্রযুক্তিই দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত। তাই এই খাতকে এগিয়ে নিলে জাতি আরও উন্নত হবে। আমরা কম্পিউটার ব্যবসায়ীরা এজন্য কাজ করছি। আমি দেশের শিল্পপতিদেরও এ সেক্টরে বিনিয়োগের আহ্বান জানাই। কারণ প্রযুক্তি ব্যবসাই ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবে।

বাংলাদেশ সময় ১৭৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০১২
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।