এক সাম্প্রতিক পডকাস্টে মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ ভারতীয় বংশদ্ভূত মার্কিন প্রযুক্তি বিশ্লেষক দ্বারকেশ প্যাটেলের সঙ্গে এক আলোচনায় অংশ নেনে। সেখানে উঠে আসে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
আর তা হল: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) কি মানুষের সম্পর্ককে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করতে পারে?
এ বিষয়ে জাকারবার্গ বলেন, প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন যোগাযোগের ধরন পরিবর্তন করছে, এবং এখন এ প্রশ্নটি কেবল কল্পনা নয়, বাস্তবের সম্মুখীন হওয়ার সময় এসেছে।
তিনি তুলে ধরেন, কীভাবে মানুষ আজকাল এআই-কে মানসিক সমর্থন, পরামর্শ, এমনকি বন্ধুত্বের জন্য ব্যবহার করছে, যা শুধু প্রযুক্তি নয় বরং সমাজ ও মনস্তত্ত্বেও গভীর প্রভাব ফেলছে।
এআই আজকাল শুধু প্রযুক্তিগত সহায়তার বিষয় নয়, এটি মানুষের জীবনে আরও ঘনিষ্ঠভাবে প্রবেশ করেছে। চ্যাটবট, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে এআই বন্ধুর মতো সেবাগুলি, আজকাল অনেকেই মানসিক সহায়তার জন্য ব্যবহার করছে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যেমন রেপ্লিকা, ক্যারেক্টার.এআই এবং মেটার নিজস্ব এআই ফিচার, যেখানে এখন মানুষের সাথে এআইও গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম।
জাকারবার্গ বলেছেন, এআই-র ভূমিকা বুঝতে হলে আগে ব্যবহারকারীদের আচরণ বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন যে, মেটা এআই অনেক ব্যবহারকারীকে কঠিন বা আবেগপূর্ণ আলাপচারিতায় সাহায্য করছে, যেমন প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে সমস্যা নিয়ে কথা বলা বা অফিসে বসের সঙ্গে আলোচনা করা। জাকারবার্গের মতে, এআই এখন মানুষের সম্পর্কের বিকল্প নয়, বরং তাদের সম্পর্ককে আরও সমৃদ্ধ এবং সহায়ক করছে।
তিনি আরও বলেন, অনেক মানুষের সামাজিক চাহিদা পূর্ণ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে, এআই মানুষের সঙ্গীর অভাব পূরণ করতে সহায়ক হতে পারে, বিশেষ করে যারা নিঃসঙ্গতা বা সামাজিক উদ্বেগে ভোগেন। তবে তিনি নিশ্চিত করেন, এআই কখনওই বাস্তব বা মানবিক সম্পর্কের বিকল্প হতে পারবে না। বরং এআই মানুষকে নতুন ধরনের যোগাযোগের সুযোগ এবং সহায়তা দিতে সাহায্য করবে।
মার্ক জাকারবার্গ জানালেন, এআই-র ব্যক্তিগতকরণের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর সাথে সম্পর্ক আরও গভীর এবং বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠছে, কারণ এআই ব্যবহারকারীর আবেগ ও প্রাসঙ্গিক প্রতিক্রিয়া অনুযায়ী আরও উন্নত সেবা প্রদান করতে সক্ষম হচ্ছে। তবে, এই অগ্রগতি কিছু নৈতিক প্রশ্নও উত্থাপন করছে, যেমন—এটি ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলছে।
অবশেষে, মেটা তাদের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এআই ব্যবহার বাড়ানোর দিকে এগোচ্ছে, যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ এবং মেটাভার্স। জাকারবার্গের মন্তব্য ইঙ্গিত দেয় যে, মেটা ভবিষ্যতে আরও গভীরভাবে এআই-ভিত্তিক সামাজিক ফিচারের দিকে এগোবে, বিশেষ করে ব্যবহারকারীর মানসিক স্বাস্থ্য, আবেগগত সহায়তা এবং বুদ্ধিমত্তা খাতে।
এমএম