ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

তৈরি হচ্ছে কমদামি আইফোন মিনি!

সাব্বিন হাসান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৩
তৈরি হচ্ছে কমদামি আইফোন মিনি!

২০১৩ সালের পুরোটা সময়জুড়েই ছড়াবে বহুমাত্রিক ট্যাবলেটের উত্তাপ। তবে স্মার্টফোন যে পিছিয়ে থাকবে তা কিন্তু নয়।

এ বছর স্মার্টফোনের দাম আরও কমে আসবে। এ প্রতিযোগিতায় আইফোনও এগিয়ে আসছে। এরই মধ্যে কমদামি আইফোন তৈরির কাজও শুরু করেছে অ্যাপল। সংবাদমাধ্যম সূত্র এ তথ্য দিয়েছে।

সুদীঘ সময়ের দামের দাপট থেকে তাই প্রয়োজনের তাগিদেই পিছু হটতে বাধ্য হলো অ্যাপল। তবে সুফলটা যাবে আইফোন ভক্তদের অনুকূলেই। আইফোন ৫ মডেলের পরে নতুন ধারার আইফোন বির্নিমাণে দামে কতটা হেরফের আসবে তা এখনই নিশ্চিত করে জানা যাচ্ছে না।

অবয়ব তৈরির বাজেটকেই খানিকটা কাটছাট করছে অ্যাপল। এ কারণেই দাম কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। মূলত অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি অবয়বের পরিবর্তে পলিকারবোনিক প্ল্যাস্টিক দিয়ে পরের আইফোন তৈরি করা হবে। এতে আইফোনের পরের মডেল ভোক্তাদের জন্য সাশ্রয়ী করে তোলা সম্ভব হবে। অ্যাপলের মুখপাত্র সূত্রে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশ্বে আরও বেশি সংখ্যক গ্রাহকের জন্য আইফোনকে সাশ্রয়ী করে তুলতেই অ্যাপল এ উদ্যোগ নিচ্ছে। আলোচ্য বছরেই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ গুগল অ্যানড্রইডভিত্তিক নিজস্ব ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন বাজারে আনবে। ফলে বাজারের বৈরী চাপে পড়বে অ্যাপল। আর মূল পার্থক্যটা এনে দেবে দামের বৈষম্য। এ ভাবনা থেকেই অ্যাপল তুলনামূলক কমদামি স্মার্টফোন তৈরির দিকে ঝুঁকেছে। এমনটাই বলছেন বিশ্ববাজারের পণ্য বিশ্লেষকেরা।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে অ্যাপল স্মার্টফোনে ১৪.৬ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। কিন্তু ২০১১ সালের চতুর্থ এবং ২০১২ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে এ হার ছিল ২৩ ভাগে। বিখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসি এ তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে আইফোন আর্বিভাবের পর অ্যাপলের মুনাফার অঙ্কটা কোনোভাবেই নিম্নগতি প্রদর্শন করেনি। কিন্তু স্টিভের প্রস্থানের পর এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেনি অ্যাপল।

অ্যাপল ব্যর্থতাতেই স্যামসাং অনেকটাই এগিয়ে গেছে। তাই সাশ্রয়ী আইফোনের ‘মিনি’ সংস্করণ দিয়ে বিশ্বের প্রযুক্তিবাজারে আবারও উন্মাদনার উত্তাপ ছড়ানোর পরিকল্পনা করছে অ্যাপল।

এদিকে স্যামসাং ইলেকট্রনিকসের প্রবৃদ্ধি ২০১০ সালের ৮.৮ ভাগ থেকে ২০১২ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে এসে ৩১.৩ ভাগে উন্নীত হয়েছে। এটা নিঃসন্দেহে বড় অঙ্কের বাজার অগ্রগতির উদাহরণ।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের শেষের তিনমাসে ৮৫০ কোটি ডলারের মুনাফা অর্জিত হয়। এটি আগের ত্রৈমাসিকে ছিল ৮১০ কোটি ডলারের ঘরে।

কিন্তু অ্যাপলের এমন পিছিয়ে পড়ার চিত্র টেকগুরু স্টিভ জবসের আমলে কোনোভাবেই নজরে আসেনি। কিন্তু ২০১১ সালে স্টিভের প্রয়াণের পর টিম কুক অ্যাপলের সিইও পদের দায়িত্ব নিলে অ্যাপল পিছিয়ে যেতে থাকে। বিশ্বের কোটি কোটি আইফোন ভক্তদের চাহিদা ও প্রত্যাশার বিপরীতে তেমন চমকের পণ্য আনতে পারেনি অ্যাপল। ফলে স্মার্টফোন প্রতিযোগিতায় অ্যাপল খানিকটা গুটিয়ে গেছে।

ভোক্তাদের প্রত্যাশানুযায়ী পণ্য আনতে বেশ বিলম্ব আর দামের উচ্চহারের অনমনীয় মনোভাবের কারণে পিছিয়ে পড়তে শুরু করে অ্যাপল। এ দু সমীকরণে সফলভাবে এগিয়ে যায় স্যামসাং। ২০১২ সালে পুরোটা সময়েই বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোতে আইনি দ্বন্দ্বে উত্তাপ ছড়িয়েছে শীর্ষ এ দু নির্মাতা। তবে সুফলটা শেষ পর্যন্ত স্যামসাংই কুঁড়িয়েছে।

তবে আইফোনের দাম কমে আসলে এ বছর সমীকরণটা উল্টেও যেতে পারে। অর্থাৎ স্যামসাং এ বছর অ্যাপলের কাছে ধরাশায়ী হতে পারে। কিন্তু এ হিসাবটা মোটেও সহজ নয় এ দু শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের জন্য। অর্থাৎ এ বছরও স্মাটফোনের বিশ্বে টানাপোড়েন রেশটা থেকেই যাচ্ছে।

২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়ে আসা আইফোন(৪) মডেল অ্যাপলকে অনবদ্য সাফল্যেয় পৌঁছে দিয়েছে। এ মুহূর্তে ৬৪৯ ডলারে আইফোন(৫) পাওয়া যাচ্ছে। অ্যাপল ডটকম থেকেও এ দামে আইফোন(৫) কেনা যাবে। এ ছাড়া অ্যাপল যদি অ্যানড্রইড সিস্টেমের সঙ্গে আপোষ করে তাহলে দামের চ্যালেঞ্জটা অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

এ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে দু বছরের অপারেটর চুক্তিতে ১৯৯ ডলারে আইফোন(৫) বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ৯৯ ডলার কিংবা দু বছরের চুক্তির শর্তসাপেক্ষেও একেবারেই ফ্রি আইফোন(৫) পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ সুবিধা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই প্রযোজ্য।

এ মুহূর্তে খুদে আদলের আইপ্যাড, আইপ্যাড মিনি এবং আইপ্যাড ট্যাব ছাড়া তেমন কোনো পণ্যের সমারোহ নেই অ্যাপলের ঘরে। বলতে গেলে সবই পুরোনো হয়ে উঠেছে। তাই আলোচ্য বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে নতুন কোনো ঘোষণা না এলে এ বছরেও পিছিয়ে যেতে হতে পারে অ্যাপলকে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট বাজার গবেষকেরা।

বাংলাদেশ সময় ২০৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।