ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ইউটিউব নিয়ে দেশজুড়ে ধুম্রজাল

সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৩
ইউটিউব নিয়ে দেশজুড়ে ধুম্রজাল

বাংলানিউজের প্রকাশিত ২২ জানুয়ারি ‘দেশে ইউটিউব দেখা যাচ্ছে’ এ খবরে দেশের ইউটিউব ভক্তদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। পাঠকদের অনেকেই বাংলানিউজে ফোন করে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

জানতে চেয়েছেন সম্পূর্ণভাবে কবে থেকে ইউটিউব দেখা যাবে বাংলাদেশে।

এ মুহূর্তে ঢাকা ছাড়াও দেশের বেশ কিছু জেলা শহরে বিচ্ছিন্নভাবে এবং থেকে থেকে ইউটিউব দেখা যাচ্ছে। অনেকেই ভাবছেন ইউটিউব খুলে দেওয়া হয়েছে। তাহলে কেন দেখা যাচ্ছে না। এ নিয়ে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সঙ্গে ভোক্তাদের কথার কাটাকাটিও হচ্ছে। ছড়িয়েছে পড়ছে নানা বিভ্রান্তি।

আসলে সরকারের পক্ষে ইউটিউব তদারকি প্রতিষ্ঠান বিটিআরসি এখনও ইউটিউব খুলে দেওয়ার বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়নি। এমনকি কবে নাগাদ ইউটিউব আবার খুলে দেওয়া হতে পারে তাও বলতে পারছে না বিটিআরসি। ইউটিউব বন্ধের কারণে প্রতিদিনের সম্ভাবনাময় এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের অনেক তথ্যই বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না।

এ মুহূর্তে দেশে বিচ্ছিন্নভাবে ইউটিউব দেখা গেলেও কোথাও আবার বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট কোনো ভিডিওচিত্রই দেখা যাচ্ছে না। তবে বাংলাদেশ ছাড়া অন্যসব দেশের ভিডিও দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে বিটিআরসি, সরকারি মহল এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র বাংলানিউজকে জানিয়েছে।

বিটিআরসির সহকারি পরিচালক (পিআর অ্যান্ড পাবলিকেশন) জাকির হোসেন খান বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, এখনও গুগলের সঙ্গে কোনো সমঝোতা হয়নি। তাই এ বিষয়ে এখনই সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কেন ইউটিউব দেখা যাচ্ছে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে।

সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ পাওয়া না গেলেও অচিরেই এ টানাপোড়েনের নিস্পত্তি হবে বলে দেশের অনেক প্রযুক্তিবিদ মন্তব্য করেছেন। বিকল্প পদ্ধতিতে ইউটিউব দেখা সম্ভব কি না এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কম্পিউটার প্রকৌশলী জানান, দেশের অনেকেই প্রক্সি সার্ভার দিয়ে এ সাইট দেখার চেষ্টা করছেন। আবার কেউ কেউ স্বাভাবিকভাবেই দেখতে পারছেন। কিন্তু একেবারেই দেখা যাচ্ছে না তা ঠিক নয়। সার্ভার পরিবর্তন করেও অনেকে এ সাইট দেখছেন বলেও জানা যায়।

এ ছাড়াও দেশের গুগল মুখপাত্রও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। ফলে বিষয়টা ঝুলেই যাচ্ছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন। এক্ষেত্রে সরকার অবশ্য শুরু থেকেই গুগলের অসহযোগিতাকেই দুষছেন। এ মুহূর্তে দেশের অ্যালেক্সা তালিকায় পঞ্চম অবস্থানে আছে ইউটিউব।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে ইউটিউব দেখা যাচ্ছে না। ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়া ‘ইনোসেন্স অব মুসলিম’ নামের বিশ্বব্যাপী বিতর্কিত এ ভিডিওচিত্র একেবারে মুছে ফেলার শর্তে গুগল এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারকে কোনো সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি।

তবে সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রথমে এ ভিডিও ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়লেও এখন আর তা শুধু ইউটিউবে সীমাবদ্ধ নেই। বিশ্বের অনেকগুলো সামাজকি গণমাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি সার্চ ইঞ্চিন অপটিমাইজেশনেও এ রেশ পাওয়া গেছে। তাই এ বিষয়ে ইউটিউব একক কোনো সিদ্ধান্ত নিলেও বিতর্কিত ভিডিওটি ইন্টারনেট থেকে একেবারে মুছে ফেলা কঠিন হবে।

তবে একটি নিষেধাজ্ঞার দ্রুত নিস্পত্তি না করে টানাপোড়েনের এ দীর্ঘসূত্রতা দেশের কোটি কোটি প্রযুক্তিপ্রেমীরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। সবারই প্রত্যাশা সরকার এবং গুগলের মধ্যে এ জটিলতার দ্রুত সমাধান। ডিজিটাল বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এমন সোচ্চার দাবি দীর্ঘদিন অপূরণীয় থাকতে পারে না। এমনটাই জানালেন সংশ্লিষ্ট বিশিষ্টজনেরা।

বাংলাদেশ সময় ১২২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।