ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

ইন্টারনেট শাসনহীন গণমাধ্যম: কপিল সিবাল

সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৩
ইন্টারনেট শাসনহীন গণমাধ্যম: কপিল সিবাল

ইন্টারনেটকে শাসন করা যায় না। ভারতের ইউনিয়ক কমিশন এবং তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী কপিল সিবাল এ কথা বললেন দৃঢ়চিত্রে।

ভারত সরকারের ইন্টারনেট শাসনের যৌক্তিক সমালোচনা করেই এ উক্তি করেছেন কপিল সিবাল। সংবাদমাধ্যম সূত্র এ তথ্য দিয়েছে।

এ মুহূর্তে শুধু ভারত নয়, বিশ্বের সব দেশের জন্যই ইন্টারনেট গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য মানবাধিকার। ইন্টারনেটই একটি স্বাধীন মত প্রকাশের সংস্কৃতি। দিল্লিতে ‘গুগল বিট টেন্ট’ শীর্ষক সম্মেলন ভারতের তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী এসব কথা বলে দেশজুড়ে ইন্টারনেটপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।

ইন্টারনেট শাসনহীন গণমাধ্যম। একে কোনোভাবেই শাসন করা যায় না। আর সাময়িক নিয়ন্ত্রণও টেকসই হয় না। এ মাধমে প্রতিদিন যে কোনো বিষয়ে কণ্ঠহীনভাবে সোচ্চার বক্তব্য তুলে ধরা যায় সমাজের সামনে। এটি নিজে থেকেই জনমত দ্বারা শাসিত হয়।

একেবারে নিয়ম ছাড়া ক্রিকেট বা বেজবল কোনোটাই খেলা সম্ভব নয়। ইন্টারনেটও ঠিক তেমনই। তবে একে চাপিয়ে দেওয়া কোনো নিয়মে নয়, বরং নিজস্ব নিয়মের গন্ডিতেই এ সংস্কৃতি পরিচালিত হয়। ইন্টারনেটের নিয়মনীতি আর শাসন দুটোই চলে নিজস্ব দিকনির্দেশনায়।

ইন্টারনেট স্বাধীনতার এ যুগে ভারত সরকারের ওয়েব এবং সামাজিক মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণের অব্যাহত প্রচেষ্টার কঠোর সমালোচনা করেন এ তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী। গত বছর ভারত সরকার টুইটারের বেশ কিছু অ্যাকাউন্ট জব্দ এবং গুগলকে তাদের পরিচালিত কিছু ইউটিউব ভিডিও একেবারে মুছে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে প্রথম ছয় মাসে ভারত সরকার গুগলের কাছে ৫৯৬টি অনুরোধ জানায়। আর এ বছরের পরবর্তী ছয় মাসে এ অনুরোধ বেড়ে ২,৪৩১টি হয়। এ ছাড়াও এ সময়ে ৪,১০৬ জন ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে ভারত সরকার সুনির্দিষ্ট তথ্য দাবি করে গুগলের কাছে। এ পরিসংখ্যান ভারত সরকারের তথ্যসংস্কৃতির ওপর কড়া দৃষ্টিভঙ্গীর কথাই সুস্পষ্ট করে।

এসব কিছুর পরও ইতিবাচক অর্থে সিবাল বলেন, ভারত সরকার ওয়েবে তথ্য স্বাধীনতা দিতে বদ্ধ পরিকর। আমরা স্বাধীন মতে প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং কোনোভাবেই এ স্বাধীনতা কমিয়ে আনার চেষ্টাকে মেনে নেওয়া হবে না।

তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী কপিল সিবাল আরও বলেন, সরকার ইন্টারনেটকে ভারতের নাগরিক অধিকার হিসেবে বিবেচনা করছে। এ প্রত্যয়ে ভারত সরকার এরই মধ্যে দেশের ১ লাখ ৫৫ হাজার পোস্ট অফিসকে ইলেকট্রনিক সুবিধার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।

যদিও টুইটারে ভারত সরকার কর্তৃক জনসাধারণের ইন্টারনেট ব্যবহারের গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করার বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে।

ইন্টারনেটকেন্দ্রিক সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী প্রসঙ্গে কপিল সিবাল বলেন, সরকার ইন্টারনেট স্বাধীনতার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল। এ ছাড়াও গণমতের এ ফোরামকে দেশের স্বার্থে কাজে লাগানোর কথাও বলেন তিনি।

টুইটারের একজন সক্রিয় ভক্ত লিখেছেন, এটা ইন্টারনেট স্বাধীনতার সময়। কিন্তু সরকার আরোপিত ইন্ডিয়ান আইটি অ্যাক্টের ‘৬৬-এ’ ধারায় রাজনীতিবিদদের প্রতি জনমতের সমালোচনা করার নৈতিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রচেষ্টাকে কোনোভাবেই সরকারের ইন্টারনেটভিত্তিক ইতিবাচক মনোভাবের পরিচয় তুলে ধরে না।

বাংলাদেশ সময় ২১৫৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।