ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

সাক্ষাৎকারে সহিদুল ইসলাম

আউটসোর্সিং ও অনলাইনেই ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার

মনোয়ারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৩
আউটসোর্সিং ও অনলাইনেই ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার

ঢাকা: সময় এখন অনলাইনের। তাই ভবিষ্যতে আকর্ষণীয় ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহীদের জন্য অনলাইন জগতে বা আইটি সেক্টরের ক্যারিয়ার-ই সেরা।



বাংলাদেশের অনলাইনপ্রেমী তরুণদের কাছে বহুল আলোচিত সম্ভাবনার একটি হচ্ছে অনলাইন আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং। আউটসোর্সিংয়ের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতি ও ব্যক্তি অবস্থার মানোন্নয়ন করা সম্ভব।

বাংলানিউজকে কথাগুলো বলেন দেশের আইটি সেক্টরের একজন তরুণ উদ্যোক্তা। সহিদুল ইসলাম। তিনি ইটেক কর্ণার লিমিটেডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক।  

বাংলানিউজকে সহিদুল ইসলাম বলেন, ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যকে পুরোপুরি বদলে নিতে সক্ষম হয়েছেন অনেকেই। একটি লক্ষণীয় দিক হলো আমাদের দেশে গত কবছরে প্রায় ৩ গুণেরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে। এ উন্নতিকে সাধুবাদ জানাতেই হবে।

ধীর গতি ও উচ্চ মূল্যের ইন্টারনেট এবং ইলেকট্রিসিটি সমস্যার মধ্যে থেকেই আমাদের দেশের তরুণেরা নিজ চেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং আমাদের জন্য বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কর্মসংস্থানের জন্য উজ্জ্বল ও অবারিত দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে।

ফ্রিল্যান্সের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করে আমাদের দেশের অর্থনীতির চাকা স্থিতিশীল করার সুযোগ আছে। পড়ালেখার সঙ্গে বা পড়ালেখা শেষে ফ্রিল্যান্সিং আউটসোর্সিং করে যে কেউ গড়ে নিতে পারেন নিজের ক্যারিয়ার।

নিজের অভিজ্ঞতার প্রসঙ্গে সহিদুল ইসলাম বলেন, ই টেক কর্ণার লিমিটেড এমপাওয়ারিং দ্য নেক্সট জেনারেশন স্লোগানে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করে। দেশে আউটসোসিং খাতে দক্ষ জনবল ও একটি আউটসোর্সিং সেক্টরে বিশ্বমানের একটি প্রতিষ্ঠান তৈরিতে এগিয়ে আসেন প্যারাগন সিরামিকসের সিইও ও ফরিদপুর গ্রুপের এমডি ফারিয়ান ইউসুফ, পিআরআই’র জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান ও তারেক মোহাম্মদ নাজমুল হাসান। এ চারজন মিলেই প্রতিষ্ঠানটির শুরু।

প্রথম অফিস নেওয়া হয় পান্থপথের ফিরোজ টাওয়ারে। এখানেই চলছে সব কাজ। এ মাসেই মিরপুরে আরেকটি শাখা অফিস শুরু হচ্ছে। শুরুতে ১০ জন স্টাফ দিয়ে শুরু। এরপর ক্রমান্বয়ে ১৮ জন হয়েছে। আর সংখ্যা এখন বাড়ছেই।

ভবিষ্যতে লক্ষ্য হচ্ছে এ সেক্টরে একটি ওয়ার্কিং জোন তৈরি করা। সারাদেশে একটি দল আউটসোর্সিং করবে। ঢাকায় একটি বড় ভবনের পুরোটাই আউটসোর্সিং ওয়াকিং জোন তৈরিতে কাজ করছে। প্রথম অবস্থায় দেড় হাজার লোক কাজ করবে বলে আশা করি। আমাদের চুড়ান্ত লক্ষ্য আউটসোর্সিং খাতে দেশে নেতৃত্ব দেওয়া। এ খাতে কেউ কারো প্রতিযোগী না বলে আমরা বিশ্বাস করি।
 
অন্য খাতে ব্যবসা করার চেয়ে অনলাইননির্ভর ব্যবসা শুরু করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখন সময়ের নেতৃত্বে দিচ্ছে অনলাইন। এখন অনলাইনে-ই সব কাজ সম্ভব। গত কবছরে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিষয় হচ্ছে মোবাইল ফোন।

এখন স্মার্টফোন হচ্ছে প্রধান আকর্ষণ। মোবাইলের পর আউটসোর্সিং বিষয়টি জনপ্রিয় ও আলোচিত। এখন আইটি খাতে ও অনলাইনে বিনিয়োগকারীরা আগামীর ব্যবসায় নেতৃত্ব দিবে। কারণ অনলাইন সামাজিক যোগাযোগের এ যুগে প্রথাগত ধারণা একেবারেই অচল।

সহিদুল বলেন, বিশ্ব প্রেক্ষাপট ও দেশের সবদিক বিবেচনা করলে আউটসোর্সিং হচ্ছে সবচেয়ে যুগোপযোগি বিষয়। অনেকে বিনিয়োগের অভাবে ভালো ক্যারিয়ার করতে পারছে না। কিন্ত এ খাতে বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ নয়। এখানে একটি কম্পউটার আর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়া সম্ভব।

আমাদের প্রধান বিষয় আউটসোর্সিং খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা। বেশিরভাগ আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য প্রশিক্ষণ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া। কিন্তু আমরা এখানেই তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করি। প্রশিক্ষণের পর তারা এখানে আবার বাইরেও কাজ করতে পারেন। আমরা সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে থাকি। আমাদের প্রতিটি শিক্ষার্থীকেই রিসোর্সে পার্সন হিসেবে তৈরি করতে চাই।

এখন ৭টি ব্যাচে প্রশিক্ষণ চলছে। প্রতিটি ব্যাচে ১২ জন করে শিক্ষার্থী। এখন ৮৪ জন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। নতুন ভর্তি হয়েছেন আরও ২৩ জন। লক্ষ্য এ বছর ৫০০ স্টুডেন্ট তৈরি করা।

আমাদের কোর্সি ফি সবার নাগালে রেখে সর্বোচ্চ সেবা দেবার চেষ্টা করছি। প্রশিক্ষণের জন্য অনলাইন আউটসোসিং ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা। অ্যাডভান্স এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) ১৫ হাজার, গ্রাফিকস ডিজাইন ১৫ হাজার, গুগল অ্যাডসেন্স ১০ হাজার, এফিলিয়েট মার্কেটিং ১০ হাজার এবং ওয়েবপেজ ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট ২০ হাজার টাকা। মোট ৬টি কোর্স। বেসিক কম্পিউটার, আইএলটিএম। ইংরেজিতে দক্ষ বানানো হচ্ছে।  

আমাদের অফিসে আছে কেন্দ্রীয় ওয়াইফাই জোন, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণীকক্ষ, উচ্চগতির ইন্টারনেট, সর্বাধুনিক পিসি ছাড়াও সব ধরনের কারিগরি পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রতিদিন ক্লাস শেষে ক্লাস সিট ও কোর্স শেষে সব মিলিয়ে একটি পূর্ণ ই-বুক দেওয়া হয়। দেশের দক্ষ জনবল নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।

বাংলাদেশ সময় ১৭১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৩
সম্পাদনা: সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।