চৌধুরী অনিন্দিতা রায় সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল (সিওমেক) কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। সামনেই তার ফাইনাল পরীক্ষা।
একদিকে মায়ের অসুস্থতা তার উপর পরীক্ষার চাপ থাকলেও তাকে কাবু করতে পারেনি। আর এটা সম্ভব হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির নতুন সংস্করণ ‘আইনস্টাইন’ এর কারণে। বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের বিভিন্ন সূত্র যেমন অসম্ভবকে করেছে সম্ভব। তেমনি এ যুগের ‘আইনস্টাইন’ অনিন্দিতা রায়ের মতো হাজারো শিক্ষার্থীকে মুঠোফোনে বার্তা প্রেরণ করে দূভোর্গ থেকে দিয়েছে চিরমুক্তি।
এ অত্যাধুনিক সিস্টেমটি শিক্ষায় কারিগরি সহায়ক প্রতিষ্ঠান ‘অরবান্ড’ (www.orbund.com) এর একটি টেকনো সাপোর্ট। অরবান্ড ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ইএসএনির্ভর বাংলাদেশি মালিকানায় শিায় প্রযুক্তি সহায়ক একটি প্রতিষ্ঠান।
এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি তার কাজের ও সেবার জন্য প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। অরবান্ড শুধু ৩৬৫ দিন ২৪ ঘণ্টা হিসাবে সেবা প্রদানই নয়, সার্বণিক মনিটরিংও করে থাকে। যাতে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করতে সম্ভব হয়। বিশ্বের প্রায় ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, কলেজ ট্রেনিং প্রতিষ্ঠান ও স্কুলে অরবান্ড শিা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি সফল ব্যবহার হচ্ছে।
আইনস্টাইন মূলত অনলাইনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, কার্যক্রম ও স্টাফদের একক নেটওয়ার্ক সিস্টেমের আওতায় এনে কাজের ব্যবস্থা করে। ফলে একক ব্যবস্থাপনার কারণে রেকর্ড বা তথ্য দলিলগুলো অন্য কোন সিস্টেমে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
শিকরা সহজে তাদের গ্রেড বইগুলো দেখতে পারেন। যে কোনো স্থান থেকে সহজে তাদের পাঠ্যসূচি তৈরি করতে পারেন। এ সিস্টেম শিক্ষার্থীদের সতর্কবার্তা মেইল বা মোবাইল ফোনে এসএমএস এর মাধ্যমে প্রেরণ করে থাকে।
এর সঙ্গে শিক প্রদত্ত যে কোনো বার্তা, ঘোষণা বা গ্রেডগুলো ছাত্রদের অনলাইনে প্রেরণ করে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটকে ‘আইনস্টাইন’ সিস্টেমটি সহজেই এর সিস্টেমে যুক্ত করে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের আলাদাভাবে কোনো কিছু যেমন ঘোষণা, ঘটনার কার্যলিপিসহ কোনো কিছু আপলোড করতে হয় না।
এ সিস্টেম বিভিন্ন অনলাইন জিজ্ঞাসা, আবেদন ও কাস এ লিপিবদ্ধ সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহণ ও পরিচালনা করে থাকে। অরবান্ডের আইনস্টাইন সিস্টেম বিভিন্ন সহায়তা ও সুবিধা দিয়ে থাকে।
প্রশাসনিক কার্যক্রমে আইনস্টাইন
প্রশাসনে কর্মকর্তারা আইনস্টাইন ব্যবহারের ফলে যে কোনো স্থান থেকে কাজ করার সঙ্গে অনলাইনে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার ফলে ডাটা অ্যান্ট্রি বিষয়ক ঝামেলা কমে। আর প্রশাসনিক ব্যয়ও কমে যায়।
এ পদ্ধতির মাধ্যমে ট্রান্সক্রিপ্ট, কার্যপ্রণালীর পুঞ্জিকা, ব্যক্তিগত বার্তা প্রেরণ, কন্ট্রাক্ট ব্যবস্থাপনা, খবর এবং বিভিন্ন ঘোষণা প্রদান, সেমিস্টার রিপোর্ট, উপস্থিতির রিপোর্ট, টিউশন পেমেন্ট ব্যবস্থাপনা, ইমেল ও এসএমএস এ সতর্ক বার্তা প্রেরণ। এছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তাদের তথ্যলিপিবদ্ধ রাখা, বিভিন্ন ইস্যু পর্যালোচনা ও অনুযোগের জবাব প্রদান ও চিঠিপত্র, লেভেল ও আইডি কার্ডগুলো প্রিন্ট দেওয়া যায়।
শিক্ষার্থীদের কার্যক্রমে আইনস্টাইন
আইনস্টাইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহজে প্রত্যেক কাসের শিক্ষার উন্নতি অনুসরণ করতে পারে। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ‘ইউজার নেম‘ ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। ফলে প্রতিটি শিক্ষার্থী ঘরে বসেই একাডেমিক সব রেকর্ড দেখার সুযোগ পাবেন।
শিক্ষার্থীরা রিয়েল টাইমে তাদের প্রোগ্রেস রিপোর্ট ও ভিন্ন করণীয় অ্যাসাইনমেন্টগুলো দেখে নিতে পারে এবং যেসব কাজ বাকি বা করতে হবে তাও দেখে নিতে পারে। শিক্ষার্থীরা বার্তা প্রেরণের মাধ্যমে শিকদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করতে পারে।
এছাড়াও হোমওয়ার্ক অ্যাসাইনমেন্ট, একাডেমিক প্রতিবেদন, অনলাইনে বিভিন্ন প্রতিবেদন উপস্থাপন, কাসের পাঠ্যক্রম আলোচনা, বিভিন্ন পরীক্ষা পাঠক্রমের তালিকা, ব্যক্তিগত বার্তা আদান-প্রদানসহ ও অনলাইনে পেমেন্ট প্রদান করতে পারে।
শিক্ষকদের কার্যক্রমে আইনস্টাইন
শিকরা ‘আইনস্টাইন’ পদ্ধতি ব্যবহারে কাসের কার্যক্রম, বিভিন্ন হোমওয়ার্ক অনলাইনে প্রদান ও গ্রহণ করতে পারেন। ফলাফল প্রতিবেদন তৈরি করে শিক্ষার্থীদের প্রেরণ করে তাদের সহায়তা সম্ভব হয়। এগুলো ছাড়াও আছে পাঠ্যক্রম পরিকল্পনা, উপস্থিতির তথ্য, প্রোগ্রেস রিপোর্ট তৈরি, কাস সিডিউল, প্রশিক্ষণ উপাদান তৈরি, কাসের পর্যালোচনা এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য আদানপ্রদান সুবিধা।
শিক্ষকদের সুবিধা
শিক্ষার মান্নোয়নে আধুনিক শিার ব্যবস্থা করা। যে কোনো স্থান থেকে (কাসের দূরে বা ছুটিতে থেকে অথবা ভ্রমণে থাকলেও) কাজ করার সুবিধা। অতিথি শিক হিসেবে পাঠদানের সুবিধা পাওয়া যায়। নিজের আইসিটি দতা বাড়ানো সম্ভব। অতিথি শিক হিসেবে পাঠদানের সুবিধা পাওয়া যায়।
এ ওয়েবনির্ভর ভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে অরবান্ডের প্রধান আরিফ জোয়ার্দ্দার জানান, ‘অরবান্ড’ কে বেছে নেওয়ার কারণ হলো অরবান্ড ভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ই-লার্নিং এর সুবিধাসহ ইউকে, ইউএস ও ক্যারিবিয়ানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক সুবিধা দিয়ে থাকে।
আরিফ জোয়ার্দ্দার আরও বলেন, এ সিস্টেমের মাধ্যমে উন্নত ই-লার্নিং সুবিধার কারণে বিভিন্ন অতিপ্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এদেশে থেকেই বিদেশে শিাগ্রহণ করতে পারবেন। এর মধ্যে মাস্টার্স ইন রেডিও লজিক্যাল টেকনোলজি অন্যতম। সঙ্গে প্রতিবেশী দেশসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা যারা অরবান্ডের নেটওয়ার্কের আওতায় আছে তারা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৩৫২, ডিসেম্বর ২০. ২০১০