ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২৬ জিলহজ ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ৪২ হাজার ল্যাপটপ দেবে সরকার

মফিজুল সাদিক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৪
শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ৪২ হাজার ল্যাপটপ দেবে সরকার

ঢাকা: দেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আইসিটি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য দেশের ৬৪টি জেলায় ৪২ হাজার ল্যাপটপ দেবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) অধিদফতর।

এর পাশাপাশি ১০টি ভ্রাম্যমাণ কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনেরও উদ্যোগ নিয়েছে অধিদফতরটি।



এতে করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশে ইন্টারনেটের আরো বিস্তৃতি ঘটবে। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীকে আইসিটি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশব্যাপী ইন্টারনেট ব্যবহারের নতুন এক বিপ্লব ঘটানো হবে।
 
অধিদফতর সূত্র জানায়, কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে সাইবার সেন্টার স্থাপন ও বিভিন্ন ভাষার দক্ষতা অর্জনের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে ৬৪ জেলায় দুই হাজার ‘কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব’ স্থাপন করবে আইসিটি অধিদফতর।
 
এসএসসি এবং এইচএসসি পর্যায়ে অত্যাধুনিক কম্পিউটার সুবিধার মাধ্যমে মাল্টিমিডিয়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে উৎসাহিতকরণ করতে চায় আইসিটি অধিদফতর। এতে করে ফ্রিল্যান্সিং ও আউট সোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া আইটি এনাবলড ভাষা শিক্ষার সুযোগ পাবে শিক্ষার্থীরা।

‘৬৪ জেলার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও ভাষা প্রশিক্ষণ ল্যাব’ স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এই উদ্যোগ নিয়েছে আইসিটি অধিদফতর। এ জন্য প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, যা সরকারি খাত থেকে মেটানো হবে।

জুলাই-২০১৪ থেকে জুন-২০১৬ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

প্রকল্প প্রসঙ্গে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বাংলানিউজকে জানান,  মূলত তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে। এটি দেশব্যাপী বাস্তবায়িত হলে তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশ আরো এগিয়ে যাবে।

তিনি আরো জানান, ৬৪ জেলার প্রায় অধিকাংশ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের আওতায় ল্যাপটপ ও কম্পিউটার দেওয়া হবে। প্রকল্পের আওতায় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলোতে এসএসসি ও এইচএসসি পর্যায়ে গ্রাফিক্স অ্যানিমেশন, ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা হবে।
 
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় দুই হাজার শিক্ষা কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হবে।
 
এছাড়া দু’হাজার ল্যাবের জন্য ৪২ হাজার ল্যাপটপ, দু’হাজার প্রিন্টার, দু’হাজার স্ক্যানার, দু’হাজার এলইডি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ৪২ হাজার হেডফোন, চার হাজার থ্রিজি পকেট রাউটার এবং দু’হাজার ল্যাঙ্গুয়েজ লার্নিং সফটওয়্যার সংগ্রহ করা হবে।
 
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জানান, এছাড়া প্রকল্পের আওতায় দুই হাজার ল্যাবে দুই হাজার ইন্সট্রাক্টর টেবিল, দুই হাজার কম্পিউটার টেবিল ও ৪২ হাজার কম্পিউটার চেয়ার সংগ্রহ করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১৬টি আইটি এবং অফিস ইক্যুইপমেন্ট এবং ৪৬টি আসবাব সংগ্রহ করা হবে।
 
কম্পিউটার শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, কম্পিউটার শিক্ষাকে সবখানে ছড়িয়ে দিতে ১০টি ভ্রাম্যমাণ কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হবে। এছাড়া শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের দুই হাজার শিক্ষকের জন্য একশটি ব্যাচে বিভিন্ন ভাষার প্রশিক্ষণ এবং দুটি ব্যাচে সহকারী প্রোগ্রামারদের ল্যাব-সাপোর্ট ট্রেনিং প্রোগ্রাম সম্পন্নকরণ করা হবে।

তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় একটি সেডান কার, একটি মাইক্রোবাস ও একটি ডাবল কেবিন পিকআপ ভ্যান কেনা হবে।
 
দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ার লক্ষ্যে নানা ভাষার প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে এ প্রকল্পের আওতায়। ইংরেজি (যুক্তরাষ্ট্র), ইংরেজি (যুক্তরাজ্য), ইংরেজি (অস্ট্রেলিয়া) ছাড়াও ফ্রেঞ্চ, জার্মান, জাপানিজ, কোরিয়ান, রাশিয়ান, আরবি প্রভৃতি ভাষা শেখানো হবে এই ল্যাবগুলোতে।

এদিকে, পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আইসিটি মন্ত্রণালয় থেকে ৪২ হাজার ল্যাপটপ কেনার জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ২৯৪ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া দুই হাজার প্রিন্টারের জন্য ৩ কোটি, দুই হাজার স্ক্যানারের জন্য এক কোটি, দুই হাজার এলইডি মাল্টিমিডিয়ার জন্য ১৬ কোটি, ৪২ হাজার হেডফোনের জন্য ২১ কোটি, চার হাজার থ্রিজি পকেট রাউডারের জন্য দুই কোটি এবং দুই হাজার ল্যাঙ্গুয়েজ লার্নিং সফটওয়্যারের জন্য ২০ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।

আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, প্রকল্পটির প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। আশা করি, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে। প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নতমানের কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

আইসিটি বিষয়ে নতুন প্রজন্মকে অনলাইন, ইন্টারনেট, অ্যানিমেশন, আউটসোর্সিং শিক্ষায় শিক্ষিত করে দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।   

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।