ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

টেলিটকে অভিযোগের পাহাড়, চটেছেন প্রতিমন্ত্রী

হেড অফিসের মাথাগুলো সরান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
হেড অফিসের মাথাগুলো সরান

ঢাকা: বিটিসিএল থেকে আসা অদক্ষ কর্মকর্তাদের হাতে পরিচালিত রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটককে ‘বাগে’ আনতে উদ্যোগ নিচ্ছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। নানা অভিযোগের মুখে থাকা এই প্রতিষ্ঠানটি কেন অব্যাহত লোকসান দিয়ে যাচ্ছে তা অনুসন্ধানে উঠে পড়ে লেগেছেন প্রতিমন্ত্রী।


 
টেলিটক নিয়ে নানা সমালোচনার মধ্যে বুধবার (১৮ নভেম্বর) গুলশানে টেলিটকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসতে যাচ্ছেন তারানা হালিম।

দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ওই বৈঠকে লোকসানের কারণ ও গ্রাহক সেবার নিম্নমান নিয়ে জানতে চাইবেন টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গিয়াস উদ্দিনসহ কর্মকর্তাদের কাছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানটির সংযোগ (সিমকার্ড) গ্রাহকের কাছে থাকলেও সার্ভিস সেভাবে পায় না বলে নিজেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারানা হালিম। সচিবালয়ে একাধিক বৈঠকেও এ ব্যাপারে নিজের অবস্থান তুলে ধরে টেলিটকের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চান প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু কোন সদুত্তর দিতে পারেনি টেলিটক এমডি।
 
এদিকে টেলিটক পরিদর্শনে যাওয়ার আগে নিজের ফেসবুক পেজে টেলিটকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও অভিমত জানতে চেয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। গ্রাহকের অভিযোগ ও পরামর্শ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সামনে উপস্থাপন করা হবে বলেই ওই পোস্টে ঘোষণা দিয়েছেন তারানা হালিম।
 
তিনি লিখেছেন, ‘দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, যারা রাষ্টায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক এর উন্নয়ন কামনা করেন, অনুগ্রহ করে আপনাদের পরামর্শ এবং অভিযোগগুলো এখানে লিখুন। টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের এগুলো একটি সভায় প্রদর্শন করা হবে, যাতে তারা এর নেটওয়ার্ক এবং সেবার মান উন্নয়ন করতে পারেন। ’
 
সোমবার রাত ও মঙ্গলবার সকালে ফেসবুকে প্রতিমন্ত্রীর এই স্ট্যাটাসের পর অসংখ্য অভিযোগ পড়েছে টেলিটকের এমডি এবং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিওআইপি ব্যবসা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়ছে। নানা অভিযোগ ও পরামর্শ নিয়ে মন্তব্য করেছেন শত শত মানুষ।
 
মন্তব্যের ঘরে একজন লিখেছেন, হেড অফিসের মাথাগুলো সরান, ভিওআইপি ব্যবসা করে সব আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ। কোটি টাকার মারসিডিস বেঞ্চ আর দামি উপহার পেয়ে যারা দেশের সার্থকে ডুবায়, তাদের ঘাড় ধরে বের করে দিন। ’
 
নেটওয়ার্ক কাভারেজ বাড়ানো, সেবার মান বৃদ্ধিতে কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের সংখ্যা বৃদ্ধি, কম রেটে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবি, নারীদের জন্য বিশেষ সিম ব্যবস্থা করার পরামর্শ আসে এসব মন্তব্যে।
 
কর্মকর্তাদের অবহেলায় ডুবতে বসা টেলিটক নিয়ে নিজে বার বার প্রশ্নের মুখে পড়ছেন প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
 
গত ১২ নভেম্বর জাতীয় সংসদে প্রশ্ন-উত্তর পর্বে প্রতিমন্ত্রী জানান, অপারেটরটির লোকসানের পরিমাণ ৪০ কোটি টাকা। সব মোবাইল অপারেটর লাভ করলেও টেলিটক কেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছে না তা তার বোধগম্য নয় বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
 
টেলিটককে ‘রি-ব্র্যান্ডিং’র এর উদ্যোগের কথা জানান প্রতিমন্ত্রী। লোগোর কারণে গ্রাহক কম থাকা নিয়ে টেলিটকের লোগো পরিবর্তনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব জমা দিয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
 
সরকারি এই মোবাইল কোম্পানির যাত্রা শুরু হয় ২০০৫ সালে। পথচলার শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি লাভের মুখ দেখেনি।  
 
     টেলিটক পার্ট-২
** অবৈধ ভিওআইপি কারবারে শীর্ষে টেলিটক!

বাংলোদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
এমআইএইচ/এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।