ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

সবার জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরিতে একসঙ্গে ইউএনডিপি-জিপি-বিডা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২২
সবার জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরিতে একসঙ্গে ইউএনডিপি-জিপি-বিডা

ঢাকা: সবার জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে দ্রুত এগিয়ে যেতে ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও গ্রামীণফোন (জিপি) যৌথভাবে ‘ফিউচারনেশন: গ্রাজুয়েট এমপ্লয়মেন্ট ইন প্রাইভেট সেক্টর’ কর্মসূচি উন্মোচন করেছে।  

বৈশ্বিক অতিমারি কাটিয়ে উঠতে তরণদের সঙ্গে নিয়ে তাদের দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের অর্থনিতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন খাতের যৌথ উদ্যোগ, ফিউচারনেশন, উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, উদ্যোগ ও বিনিয়োগের সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে।

 

রোববার (৭ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। সভাপতিত্ব করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, ইউএনডিপির স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজর রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, বিডার ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশনের নির্বাহী সদস্য মোহসিনা ইয়াসমিন, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি ও গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান।  

ফিউচারনেশন ‘হোম-গ্রোন অ্যাপটিটিউড অ্যাসেসমেন্ট টুল’ তৈরি করেছে, যা করপোরেট ও বেসরকারি খাতকে তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা থাকা উপযুক্ত কর্মী খুঁজে পেতে সহায়তা করবে। এ প্রোগ্রামের জন্য ওয়ালটন, আকিজ, প্রাণ-আরএফএল, আবুল খায়ের গ্রুপ, নাসির গ্রুপ, নগদ এবং এসিআইসহ স্বনামধন্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে সম্ভাব্য নিয়োগদাতা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ফিউচারনেশনের জন্য সম্ভাব্য অ্যাকাডেমিয়া হিসেবে কাজ করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।  

স্বাগত বক্তব্যে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী বলেন, বিশ্বব্যাপী চাকরির বাজার প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে। দ্রুতগতিতে অর্থনীতি ও প্রযুক্তির বদলে যাওয়ার ফলে নতুন বাস্তবতার সঙ্গে তরুণরা যেন খাপ খাইয়ে নিতে পারেন আমাদের তা নিশ্চিত করতে হবে।  

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালমান এফ রহমান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পর সরকার এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে (ফোরআইআর) সফলভাবে অংশ নেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে। এজন্য সরকার আইসিটির বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে, দেশের সমৃদ্ধি ধরে রাখর যা পূর্বশর্ত। গ্রামীণফোন, ইউএনডিপি ও বিডার উদ্যোগে ফিউচারনেশনের এ আয়োজনকে আমি সাধুবাদ জানাই।  

আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এক অনন্য অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু এ সুফল পেতে হলে টেকসই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি ও তরুণদের ডিজিটাল দক্ষতায় দক্ষ করে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। দেশকে সার্বিকভাবে ডিজিটালি কানেক্টেড করার মাধ্যমে শহর ও গ্রামাঞ্চলের মধ্যে বৈষম্য কমাতে আমাদের অবশ্যই একযোগে কাজ করতে হবে। ফিউচারনেশন সেই লক্ষ্যে যৌথ প্রয়াসেরই ফলাফল।  

ইউএনডিপির স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজর রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক একটি ভিডিও বার্তায় ফিউচারনেশন প্রসঙ্গে তার মতামত জানিয়ে বলেন, উন্নত গ্রুমিং এবং বাস্তবসম্মত যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ফিউচারনেশন তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য যোগ্য করে তুলতে তাদের দক্ষতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনীর সহায়তায় দক্ষতা তৈরির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রটির পেছনে এমন যৌথ প্রচেষ্টা দেখতে পেরে আমি আনন্দিত। এ ধরনের উদ্যোগ তরুণদের দক্ষতার উন্নয়ন করতে এবং হাতে-কলমে কাজের জন্য প্রস্তুত করতে নিঃসন্দেহে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

টেলিনরের ইভিপি ও হেড অব এশিয়া ইয়র্গেন সি. আরেন্টজ রোস্ত্রুপ তার ভিডিও বার্তায় বলেন, তরুণদের জন্য সুযোগ করে দেওয়া যেকোনো জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বাংলাদেশের জন্যও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিগত ২৫ বছর ধরে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে আসছে গ্রামীণফোন। টেলিনরে আমরা বিশ্বাস করি যেকোনো শক্তিশালী পার্টনারশিপ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।  

গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী আজমান বলেন, আমি ভবিষ্যতের শিল্পখাতের জন্য বাংলাদেশের তরুণদের প্রস্তুত করে তোলার ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে কাজ করার প্রচুর সম্ভাবনা দেখছি। এটি করার এখনই সময়। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উন্নত জাতিতে পরিণত হওয়ার অগ্রযাত্রায় সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে তরুণরা। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাত থেকে নেতৃত্ব দিতে পেরে এবং ইউএনডিপি ও বিডার সঙ্গে একসঙ্গে ফিউচারনেশনের মাধ্যমে তরুণ জনশক্তির বিকাশে অবদান রাখতে পেরে গ্রামীণফোন গর্বিত।    

প্ল্যাটফর্মটি উন্মোচনের পর একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বক্তব্য দেন বিডার ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশনের নির্বাহী সদস্য-৩ মোহসিনা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, ইউনিলিভার বাংলাদেশ ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার, ইউএনডিপির পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী, টেলিনরের এসভিপি ও হেড অব এক্সটারনাল রিলেশনস এশিয়া হাকোন ব্রুয়াসেত জোল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিই সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক রাশেদুর রহমান। ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ ভ্যান নুয়েনের ভোট অব থ্যাংকস দেওয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০১০২ ঘণ্টা, আগস্ট ০৮, ২০২২
এমআইএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।