ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

নিজেরা ব্যবহারে ব্যর্থ, ৫ কোম্পানিকে অপটিক্যাল ফাইবার লিজ দিল রেলওয়ে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০২২
নিজেরা ব্যবহারে ব্যর্থ, ৫ কোম্পানিকে অপটিক্যাল ফাইবার লিজ দিল রেলওয়ে

ঢাকা: বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবহৃত অপটিক্যাল ফাইবার ৫টি কোম্পানিকে লিজ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর রেলভবনে বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি করেছে কোম্পানিগুলো।

 

এ সময় বাংলাদেশ রেলওয়ে নিজেদের অপটিক্যাল ফাইবার যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারেননি বলে স্বীকার করেন রেলমন্ত্রী। বলেন, যে ফাইবার আমরা লিজ দিচ্ছি, তা আমাদের নিজস্ব, ১৯৮৪ সালে স্থাপন করা হয়েছিল। রেলের নিজের জন্য তৈরি করা ডিজিটালাইজ পদ্ধতি থাকলেও সেই জায়গায় আমরা কিন্তু পিছিয়ে আছি। আমরা নিজেরাই এটা যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারিনি। পরিকল্পনা করছি কীভাবে রেলকে সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখা যায়।

চুক্তি অনুযায়ী বাহন লিমিটেড, সামিট লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও ফাইবার হোম লিমিটেড নামে এই পাঁচ প্রতিষ্ঠান রেলওয়ের নিজস্ব অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহারের সুযোগ পাবে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের সঙ্গে ৫টি প্রতিষ্ঠান অপটিক্যাল ফাইবার সংক্রান্ত চুক্তি করেছে। এরমধ্যে তিনটি এনটিটি ও দুটি মোবাইল কোম্পানি।

রেলের ভর্তুকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এবার ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে রেল ২৫০০ কোটি টাকা আয়ের টার্গেট করেছে। কিন্তু এই টার্গেটও পূরণ করতে পারি না। অথচ রেল এলাকায় বাজারসহ অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে। সেগুলোর সদব্যবহার করতে পারিনি।

রেলখাত দেশে দীর্ঘসময় অবহেলিত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন,  ভারতে রেলওয়ের উন্নয়ন হয়েছে ৪৭ সাল থেকেই। তারা কনটেইনার ব্যবসাসহ রেল থেকে নানা সেক্টরে আয় করেছে। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা হয়নি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় রেল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সে সময় রেলের ভৈরব ব্রিজ-হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।   ৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডণ্ডের  পরে রেলে কোনো বিনিয়োগ হয়নি। রেলের কোনো বাজেট ছিল না। বিএনপি ২০০১ সালে ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক দিয়ে বিদায় করলে রেলের আরও ক্ষতি হয়।

কোম্পানিগুলোকে লিজের অর্থ সঠিক সময়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাদের কাছে শত কোটি টাকা বাকি। এ নিয়ে কোর্টে মামলা হয়। এই যে লিজ দিচ্ছি আমরা (রেলওয়ে) আপনারা লিজ নিচ্ছেন, সময়মতো অর্থ পরিশোধ করবেন।

রেলওয়ে মহাপরিচালক ডি এন মজুমদার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে রেলওয়ে অবদান রাখছে। রেল শুধু যাত্রীসেবাই দিচ্ছে না, এখন ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে দেশকে ডিজিটাইজ করতেও কাজ করে যাচ্ছে।

রেল সচিব হুমায়ুন কবির বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে রেলওয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে প্রাইভেট সেক্টরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে। প্রাইভেট সেক্টরের অনেক অবদান আছে এ দেশের উন্নয়নে। রেল ও প্রাইভেট সেক্টর যৌথভাবে দেশকে ডিজিটাইজ করতে উদ্যোগ নিচ্ছে।

রেলওয়ে মহাপরিচালক ডি এন মজুমদারের সঞ্চালনায় ও রেল সচিব হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে রেলওয়ে, বাহন লিমিটেড, সামিট লিমিটেড, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড ও ফাইবার হোম লিমিটেডের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রথম অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করে। তখন টেলিযোগাযোগের জন্য ১৬০০ কিলোমিটার লাইন স্থাপন করা হয়। এরপরে ১০২২.৬৮ কিলোমিটার লাইন বাড়ানো হয়। সম্প্রতি ৫৮৩.০৬ কিলোমিটার ফাইবার ক্যাবল লাইন স্থাপন করা হয়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের বর্তমানে সর্বমোট ৩২০৫.৭৬ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার লাইন রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, ৩০ আগস্ট, ২০২২
এনবি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।