ঢাকা, রবিবার, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৬ মে ২০২৪, ১৭ জিলকদ ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

যে কারণে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৩
যে কারণে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ?

ইসরায়েলের বিচার বিভাগ সংক্রান্ত আইনগুলোতে বড় রকমের পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার। এসব পরিবর্তনের ঘোষণা ইসরায়েলে এবং অধিকৃত এলাকাগুলোতে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের মধ্যেও তীব্র উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

এদিকে ঘোষণার প্রতিবাদ জানাতে ইসরায়েলের সড়কে নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। শনিবার তেল আবিব, জেরুজালেম ও হাইফা শহরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে।

এর আগে কখনও দেশটিতে এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি।

ষষ্ঠ বারের মতো ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন নেতানিয়াহু। পেয়েছিলেন উগ্র ডানপন্থীদের সমর্থন। ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগের কিছু সংস্কারের পরিকল্পনা করেছেন।

তার বিরোধীরা বলছেন, এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট দুর্বল হয়ে পড়বে।

সমালোচকরা এসব উদ্যোগকে ‘অভ্যুত্থান’, ‘ক্ষমতার পটপরিবর্তন’ ইত্যাদি নানা শব্দে আখ্যায়িত করছেন।

কেন এই বিক্ষোভ হচ্ছে

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এর আগে ২০২১ সাল পর্যন্ত টানা ১২ বছর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

তবে এবার তিনি যে সরকার গড়েছেন - তাকে বলা হচ্ছে ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে উগ্র ডানপন্থী সরকার।  তার কোয়ালিশনে অংশীদার দলগুলোর মধ্যে আছে অতি উগ্র ডানপন্থী, কট্টর জাতীয়তাবাদী ও অত্যন্ত গোঁড়া ইহুদি রাজনৈতিক দলগুলো।

ক্ষমতায় এসেই এ সরকার ঘোষণা করে যে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি নির্মাণ সম্প্রসারণ হচ্ছে তাদের এক নম্বর অগ্রাধিকার।

ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর লাখ লাখ ফিলিস্তিনি পরিবার  ভিটেমাটি ছাড়া হয়েছিলেন, আর ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল জর্ডন নদীর পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয়।

আন্তর্জাতিক আইনে এখানে ইহুদি বসতি নির্মাণ অবৈধ হলেও ইসরায়েল এ পর্যন্ত পাঁচ লাখ ইহুদির জন্য বসতি নির্মাণ করেছে।

শুধু তাই নয়, আল-জাজিরার এক রিপোর্টে বলা হচ্ছে- নেতানিয়াহু কোয়ালিশন গঠনের জন্য একটি কট্টরপন্থী দলকে এমন অঙ্গীকারও করেছেন যে তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের অংশে পরিণত করবেন।

অধিকৃত পশ্চিম তীরে বাস করেন প্রায় আড়াই লক্ষ ফিলিস্তিনি।

নেতানিয়াহুর পরিকল্পনা কী?
নেতানিয়াহু সরকারের আনা পরিকল্পনাটিতে ইসরায়েলের বর্তমান বিচার বিভাগে ব্যাপক কিছু পরিবর্তন আনার কথা বলা হচ্ছে।

এতে ইসরায়েলের হাইকোর্টের ক্ষমতা কমানো হবে ও পার্লামেন্টের সদস্যরা এমন সব আইন পাস করতে পারবেন - যা আদালত এর আগে খারিজ করে দিয়েছে বা কার্যত অসাংবিধানিক বলে মত দিয়েছেন।

বিচারমন্ত্রী ইয়ারিভ লেভিন বলেন, নতুন পরিকল্পনায় ইসরায়েলের ১২০ আসনের পার্লামেন্ট বা কনেসেটের ক্ষমতা এমনভাবে বাড়বে যে তারা সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ৬১ জন এমপির সমর্থন পেলেই– সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত উল্টে দিতে পারবেন।

পরিকল্পনায় আরও বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগে রাজনীতিবিদদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ করা হবে। মন্ত্রীরা তাদের নিজস্ব আইনি উপদেষ্টা নিয়োগ করতে পারবেন।

এ ছাড়াও আরও অনেকগুলো পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে এ পরিকল্পনায়।

লেভিন বিচারপতিদের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এমন কিছু লোক এখন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে যাদের জনগণ ভোট দেয়নি। ’

তিনি যুক্তি দেন যে প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলোর ফলে ইসরায়েলি বিচার ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে ও এর ওপর জনগণের আস্থা ফিরে আসবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৯, জানুয়ারি ২৩, ২০২৩
এমএইচএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।