স্বর্ণে বিনিয়োগ শুধু বিনিয়োগে বৈচিত্র্যই আনে না, বরং মুদ্রাস্ফীতির বিপরীতে নিরাপত্তাও দেয়। স্বর্ণ আবাসন কিংবা বন্ডের মতোই এক ধরনের সম্পদ, যা কয়েক বছর ধরে মুদ্রাস্ফীতিতে প্রতিবন্ধকের কাজ করছে।
গত কয়েক বছর ধরে মুদ্রাস্ফীতি ও সুদের হার বেড়েছে। এর বিপরীতে স্বর্ণের দাম তুলনামূলকভাবে স্থির রয়েছে, যা পণ্যের দাম বৃদ্ধি ও সুদের হার বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে টেক্কা দিতে পারছে।
স্বর্ণে বিনিয়োগের বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, স্বর্ণের বার, স্বর্ণ বিনিময় ব্যবসা তহবিল (ইটিএফ), স্বর্ণ মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইত্যাদি। এর সঙ্গে স্বর্ণের স্বতন্ত্র অবসর অ্যাকাউন্টে (আইআরএ) অনলাইন প্রোভাইডার বা স্ব-নির্দেশিত আইআরএ (এসডিআইআরএ) প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমেও বিনিয়োগ করা যায়।
যদি কেউ ভাবেন যে, তিনি স্বর্ণে বিনিয়োগ করে লাভ করতে পারবেন, তাহলে এই অনন্য বিনিয়োগ সুবিধা সম্পর্কে আরও জানতে বিনামূল্যের তথ্য কিটের সাহায্য নিতে পারেন।
মুদ্রাস্ফীতির সময়ে স্বর্ণ কীভাবে বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করে
স্বর্ণে বিনিয়োগ করে টাকা আয় কারও জন্য জরুরি নয়। কিন্তু অন্যান্য বিনিয়োগ, যা বাজার উন্নয়ন ও মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কায় প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে, তার বিপরীতে স্বর্ণ সাধারণত স্থির থাকে এবং টাকা রক্ষার বিশ্বাসযোগ্য উপায় হিসেবে কাজ করে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, যদি কেউ স্বর্ণে এক হাজার ডলার বিনিয়োগ করেন, মুদ্রাস্ফীতির মধ্যেও এর দাম একই বা খুব কাছাকাছি থাকে। অন্যদিকে শেয়ার ও আবাসনে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একই কথা বলা বলা যায় না।
সুদের হারের চেয়ে যখন মুদ্রাস্ফীতি দ্রুত হয়, তখন স্বর্ণে বিনিয়োগ বেশি লাভের। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের গবেষণা এমন তথ্য দিয়েছে। যখন মার্কিন ডলারে আগের মতো সুবিধা পাওয়া যায় না, তখন বিনিয়োগকারীরা বিকল্প কিছুর সন্ধান করেন। আর সেই বিকল্পের একটিই হলো স্বর্ণ।
গোল্ডসিলভার ডাটা বলছে, ২০০৭ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ২০০৯ সালের ৯ মার্চ সময়ের মধ্যে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ নেমে যায়। তবে স্বর্ণের সূচক বাড়ে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ। এরকম ঘটনা অনেকবার ঘটেছে। স্বর্ণ সাধারণত অর্থনৈতিক ঝড়েও টিকে থাকতে পারে।
অর্থনৈতিক সংকটের সময় স্বল্পমেয়াদি অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেলেও সেই থেকে স্বর্ণের দাম সামঞ্জস্যপূর্ণ রয়েছে। এটি একজন বিনিয়োগকারীকে ক্ষতি, ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়া ও ডলারের দামের অস্থিরতার মধ্যেও রক্ষা করে। পাশাপাশি এটি নগদ অর্থে রূপান্তরিত করাও সহজ।
তবে বিশেষজ্ঞরা মোট বিনিয়োগের ১০ ভাগের বেশি স্বর্ণে বিনিয়োগের পরামর্শ দেন না। ফলে এটি শুধু ঝুঁকিই সীমিত করে না, মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ইটিএফ ও শেয়ারের মতো অন্যান্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য সুযোগ তৈরি করে দেয়।
শেষকথা
স্বর্ণ আগে ডলারের সঙ্গে বিপরীত সম্পর্ক দেখাত। যখন ডলারের দাম পড়ে যেত, তখন স্বর্ণের দাম বাড়ত। বিনিয়োগে বৈচিত্র্য থাকায় মুদ্রাস্ফীতি কিংবা অর্থনৈতিক মন্দায় স্বর্ণে বিনিয়োগ আদর্শ হতে পারে। কারণ স্বর্ণের দাম দীর্ঘ সময় স্থিতিশীল থাকে।
গোল্ডসিলভার দেখিয়েছে, বছরের শুরু, মার্চ, এপ্রিলের প্রথম দিক অথবা জুনের মধ্যভাগ থেকে জুলাইয়ের প্রথম দিক স্বর্ণে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। আগে খোঁজ-খবর নিয়ে তারপর এই সম্পদে বিনিয়োগ করা বুদ্ধিমানের কাজ।
সিবিএস নিউজ থেকে অনুবাদ করা
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
আরএইচ