তুরস্কে রোববার (১৪ মে) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচনে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে বিরোধী জোট।
এদিকে, জনমত জরিপে এরদোয়ানের চেয়ে কিলিকদারোগলু কিছুটা এগিয়ে আছেন। এরই মধ্যে তার সমর্থকরা নির্বাচনে জেতার সাহস নিয়ে স্বপ্ন দেখচ্ছেন। তারা আশা করছেন তাদের নেতা ৫০ শতাংশ বেশি ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় লাভ করবেন।
কোনো প্রার্থী ভোটারদের ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দুই সপ্তাহ পর দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর রোববারের নির্বাচনে কেউ যদি অর্ধেকের বেশি ভোট পান তাহলে তিনিই সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।
গত ৮ মার্চ পরিচালিত একটি জরিপের ফলে দেখা গেছে, বিরোধী জোটের প্রার্থী কিলিকদারোগলু ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এরদোয়ানের বিরুদ্ধে এগিয়ে রয়েছেন। যেখানে এরদোগানের সমর্থন দেখানো হয়েছে ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
জরিপটির ফলাফলে আরও দেখা গেছে, প্রধান বিরোধী জোটকে সমর্থন করছেন ৪৪ দশমিক ১ শতাংশ ভোটার। অপরদিকে একে পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটের সমর্থন দেখা যাচ্ছে ৩৮ দশমিক ২ শতাংশ।
অন্যদিকে গত ৬-৭ মার্চ একটি জরিপ পরিচালনা করে আলফ রিসার্চ। যেখানে দেখা যায়, কিলিকদারোগলুর সমর্থন রয়েছে ৫৫ দশমিক ১ শতাংশ। বিপরীতে এরদোয়ানকে সমর্থন করছেন ৪৪ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ।
এ ছাড়া কিলিকদারোগলুর রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি) ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এগিয়ে রয়েছে। আর একে পার্টির সমর্থন দাঁড়িয়েছে ৩১ শতাংশ। এ জরিপে প্রধান বিরোধী ব্লকের সমর্থন দেখানো হয়েছে ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ। অপরদিকে একে পার্টি ও তার মিত্র এমএইচপির সমর্থন দাঁড়িয়েছে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ।
পিয়ার রিসার্চ তাদের জরিপে দেখিয়েছে, কিলিকদারোগলু ৫৭ দশমিক ১ শতাংশ সমর্থন নিয়ে এরদোয়ানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। জরিপটির ফলাফলে এরদোয়ানের সমর্থন দেখানো হয়েছে ৪২ দশমিক ৯ শতাংশ। এ জরিপ অনুযায়ী, প্রধান বিরোধী জোটের সমর্থন ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ এবং একেপি (একে পার্টি) ও এমএইচপি জোটের সমর্থন রয়েছে ৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ। জরিপটির ফল প্রকাশ হয়েছে গত ১০ মার্চ।
এছাড়া ওআরসি রিসার্চ তাদের ফলাফলে দেখিয়েছে যে, কিলিকদারোগলুর সমর্থন ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ। যেখানে এরদোয়ানের সমর্থন রয়েছে ৪৩ দশমিক ২ শতাংশ। জরিপটি পরিচালনা করা হয় গত ৪-৬ মার্চ। তখন কিলিকদারোগলুকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিরোধী জোটের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি।
শুক্রবার (১২ মে) কিলিকদারোগলু তার সমর্থকদের সামনে হাজির হন। এ সময় তার জোটের সমর্থকরাও একত্র হয়, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। সমর্থকরা প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে এতে যোগ দেন। এ সময় কিলিকদারোগলু তার সমর্থকদের ‘শান্তি ও গণতন্ত্র’ পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি বলেন, ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চান ভোটাররা।
কিলিকদারোগলু’র দল মূলত ধর্মনিরপেক্ষ হলেও তিনি হিজাবধারী নারীদের কাছেও পৌঁছানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। তার জোটের ছয়টি দল বিভিন্ন স্লোগানে ও গানে ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে।
ভোটের আগে উত্তেজনা এত বেশি বাড়ছে যে কিলিকদারোগলু আঙ্কারায় চূড়ান্ত সমাবেশের মঞ্চে বুলেট-প্রুফ পোশাক পরেছিলেন। এর আগে তিনি অন্য একটি সমাবেশে যোগ দেন।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার (১১ মে) চার প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় নকল সেক্স ভিডিও ছড়িয়ে তাকে টার্গেট বানানো হয়েছে।
রাশিয়াকে এ ব্যাপারে দোষারোপ করলেও ক্রেমলিন ভিডিওগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করছে।
পুতিনের সঙ্গে সার্বক্ষণিক সম্পর্ক বজায় রাখা এরদোয়ান তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে সতর্ক করে বলেছেন, আপনি যদি পুতিনকে আক্রমণ করেন, আমি কিন্তু বসে থাকব না।
২০০৩ সাল থেকে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী ও ২০১৪ সাল থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় রয়েছেন।
আরও পড়ুন: দুর্বল হয়ে পড়েছেন এরদোয়ান?
নির্বাচনী প্রচারণায় ফিরেছেন এরদোয়ান
সূত্র: বিবিসি
বাংলাদেশ সময়: ২০০৮ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০২৩
জেএইচ