দুই দশকেরও বেশি আগে রাশিয়ার ক্ষমতায় আসেন ভ্লাদিমির পুতিন। তার শাসনামলে কোনো সেনা গোষ্ঠী বিদ্রোহ করবে, দুইদিন আগেও তা ছিল অকল্পনীয়।
তবে বিদ্রোহের অবসান ঘটেছে। বেলারুশের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো মধ্যস্থতায় ক্রেমলিন এবং ওয়াগনার গ্রুপের মধ্যে সমঝোতার পর ইয়েভজেনি প্রিগোজিন তার সেনাদলের মস্কো অভিযান বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
বলা হচ্ছে এই সমঝোতার অংশ হিসেবে ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহী সেনাদের কোনো বিচার হবে না। তবে ইয়েভজেনি প্রিগোজিনকে রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে চলে যেতে হবে।
সংকট আপাতত কেটে গেলেও রাশিয়ার সর্বক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট পুতিনকে যেন হঠাৎ করে বেশ দুর্বল এবং নাজুক মনে হচ্ছে। কোনো কোনো বিশ্লেষক বলতে শুরু করেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের শাসন কতটা নড়বড়ে অবস্থায় আছে, রাশিয়ার এই বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে তা উন্মোচিত হয়ে গেছে।
বিশেষ করে বিদ্রোহী ওয়াগনার গ্রুপের বিরুদ্ধে ‘রাশিয়ার পিঠে ছুরি মারার’ অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুতিন যেভাবে তাদের সঙ্গে সমঝোতা করতে বাধ্য হলেন, সেটি তার জন্য এক অপমানজনক পরাজয় বলে গণ্য করছেন অনেকে।
কেন আসলে প্রেসিডেন্ট পুতিনকে এ ধরনের সমঝোতায় যেতে হলো? ওয়াগনার গ্রুপের এই বিদ্রোহের পর রাশিয়ায় তার নিরঙ্কুশ ক্ষমতা, কর্তৃত্ব পুতিন কি আর টিকিয়ে রাখতে পারবেন?
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব দ্য ওয়ার ধারণা করছে, ক্রেমলিনকে সামনের দিনগুলোতে খুবই অস্থির পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।
রাশিয়ার পরিস্থিতির বিষয়ে এক পর্যালোচনায় সংস্থাটি লিখেছে, বিদ্রোহ হয়তো ব্যর্থ হয়েছে। আপাতত ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গে একটি সমঝোতার মাধ্যমে এ যাত্রায় সংকট এড়ানো গেছে। কিন্তু এটি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সরকার এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধের বিরাট ক্ষতি করেছে।
ইন্সটিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব দ্য ওয়ার তাদের পর্যালোচনায় আরও বলেছে, এই বিদ্রোহ রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর দুর্বলতা স্পষ্ট করে দিয়েছে। পুতিন যে তার দেশের ভেতরের হুমকি মোকাবিলায় সময়মতো নিজের নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যবহার করতে অক্ষম ছিলেন, সেটাও এই সংকটে প্রকাশ পেয়েছে। এসব বাহিনীর ওপর তার কর্তৃত্ব যেন অনেকখানিই ক্ষয়ে গেছে।
প্রসঙ্গত, ওয়াগনারের সৈন্যরা শনিবার ভোরে রোস্তভ-অন-ডন শহরে প্রবেশ করে এবং আঞ্চলিক সামরিক কমান্ড দখল করে নেয়। শনিবারের বিদ্রোহে দিনের বেশিরভাগ সময়, দক্ষিণ রাশিয়ান শহরটি ওয়াগনারের বিদ্রোহের কেন্দ্রে ছিল।
সূত্র- বিবিসি
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২৩
এমএইচএস