জাতিসংঘ বলছে, রুজি-রুটির সন্ধানে শিশুরা স্কুল ছেড়ে দিয়ে যে ক্রমবর্ধমান হারে কাজে যোগ দিচ্ছে তাতে কয়েক লক্ষ শিশুর ভবিষ্যত ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গিলবার্ট হউংবো বলেছেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে অর্জিত সামাজিক অগ্রগতি হারিয়ে যাচ্ছে বা রিগ্রেশন হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখনই জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন। মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে করোনার প্রভাব যুক্ত হয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ করেছে। সমস্যাটি আরও খারাপ হতে থাকবে, যদি না আমরা এখন কাজ শুরু করি ।
জাতিসংঘের তথ্যে দেখা গেছে ২০২০ সালের গোড়ার দিকে প্রায় ১৬ কোটি শিশু শিশুশ্রমের শিকার হচ্ছে এবং এটি বন্ধ করার জন্য বিশ্বব্যাপী যে প্রচেষ্টা তা গত ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো থমকে গেছে। টোগোর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মিঃ হাউংবো বলেন, প্রাথমিক তথ্য থেকে বোঝা যায় এই প্রবণতা (থমকে যাওয়ার) অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয়ের ওপর চাপ, ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি; কিছু পরিবারের জন্য দিনে একবারও খাবার না পাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করেছে। যার ফলে কিছু পিতামাতা তাদের সন্তানদের যৌন কাজে ঠেলে দিচ্ছেন।
কেনিয়ার উপকূলীয় শহর মোম্বাসায়, ১৪ বছর বয়সী এক মেয়ে বিবিসিকে জানায়, তার মা, সে এবং তার দুই ভাইবোনের জন্য খাবার ও স্কুলের ফি জোগাড় করতে পারছে না, তাই তার নিজের কাজের সন্ধান করা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।
মেয়েটি জানিয়েছে বাড়তি উপার্জনের জন্য, সে পুরুষদের সাথে ঘুমাচ্ছেন, কাপড় ধোয়া ও চুল বাঁধানোর কাজ করছে।
মেয়েটির মা বলেন, একটি শিশুকে এমন কিছু করতে বলা সহজ নয় কিন্তু মহামারী চলাকালীন চাকরি হারানোর পরে তিনি তার পরিবার চালাতে অক্ষম হয়ে পড়েছিলেন।
মোম্বাসার একটি পতিতালয় চালান এমন এক মহিলা বিবিসিকে জানিয়েছে, যুবতী মেয়েদের মাঝে অর্থের উপার্জনের মরিয়া চেষ্টা তার ব্যবসা বাড়াতে সাহায্য করছে।
ইউনিসেফের সামাজিক নীতি ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিচালক নাটালিয়া উইন্ডার-রসি বলেন, অনেক পরিবারকে সত্যিই এমন অসম্ভব সব কঠিন সিধান্ত নিতে হচ্ছে যা দীর্ঘমেয়াদে শিশুদের বিকাশ প্রভাবিত করবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৩
এমএম