ইসরায়েলি আগ্রাসনে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ফিলিস্তিনের শহর গাজা। অন্ধকারে ডুবে গেছে পুরো উপত্যকা।
আল জাজিরা বলছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়ায় গাজা এখন অন্ধকারে নিমজ্জিত। বুধবার (১১ অক্টোবর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার পর উপত্যকার বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে দেশটির সরকারি গণমাধ্যম বিবৃতি জারি করে ‘বিদ্যুৎ চলে যাবে’ বলে ঘোষণা দেয়।
হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর দখলদার ইসরায়েলিরা গাজার সব ধরনের সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ায় উপত্যকাটিতে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ ছাড়া হাসপাতালগুলোকে জরুরি জেনারেটরের ওপর নির্ভর করতে হবে। কিন্তু জ্বালানি সরবরাহ না থাকায় সে উপায়ও নেই।
হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষ বলছে, আমরা হয়তো আর দুই-চারদিন কাজ চালাতে পারব। এরপর সব শেষ হয়ে যাবে। বিদ্যুৎ না থাকায় হাসপাতালের ব্লকগুলোয় পানি ও লিফট থাকবে না। আজ রাত আমরা সম্পূর্ণ অন্ধকারে থাকব। বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে খবরাখবর রাখতে আমরা ফোন বা টেলিভিশন দেখতে পারব না।
চিকিৎসকরা বলছেন, গাজাকে কয়েক শতাব্দী পেছনে মধ্যযুগীয় যুগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গাজা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এ অবস্থায় বিশ্বের কাছে প্রাণ রক্ষার আকুতি জানিয়েছেন তারা।
গাজা শহরের শিফা হাসপাতালের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বেসামরিক নাগরিকদের সহায়তাকারী প্রথম প্রতিক্রিয়াকারীদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। এ অবস্থায় আমরা বিশ্বের কাছে এসওএস (সাংকেতিকভাবে সাহায্য কামনা) পাঠাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভুগছি এবং বিশ্ব এক আঙুলও নড়ছে না। আপনাকে অবশ্যই আমাদের সাহায্য করতে হবে।
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের হামলার পর গত রোববার থেকে গাজার ওপর ‘সর্বাত্মক অবরোধ’ আরোপ করে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্ট ঘোষণা দেন, গাজায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি খাদ্য বা জ্বালানি- কোনো কিছুই প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
অঞ্চলটির বাসিন্দাদের প্রায় ৮০ শতাংশ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তার ওপর নির্ভর করে। তাদের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ প্রতিদিনকার খাদ্য সহায়তার ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে। দুই গোষ্ঠীর যুদ্ধে উপত্যকাকে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে ফেলায় চরম মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে সেখানে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০২৩
এমজে