ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কী হবে মোদী কিংবা বিরোধীরা ২৭২ আসন না পেলে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, জুন ৪, ২০২৪
কী হবে মোদী কিংবা বিরোধীরা ২৭২ আসন না পেলে?

ভারতে ৪৭ দিনের নির্বাচনী কার্যক্রম শেষে ভোট গণনা শুরু হয়েছে। বিজেপি নাকি কংগ্রেস, এনডিএ নাকি ইন্ডিয়া জোট, কারা বিজয়ী হয়ে নতুন সরকারের দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন তা জানা যাবে আজই (৪ জুন)।

গত ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

লোকসভা নির্বাচনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হলো বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) এবং বিরোধী ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স (ইন্ডিয়া)।

বিজেপি হলো ভারতীয় জনতা পার্টি যারা টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছে। এনডিএ জোট জয়ী হলে বিজেপি নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় বসবেন।

অন্যদিকে ‘ইন্ডিয়া’ হলো একসময়ের প্রভাবশালী কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলোর জোট।  রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা। বর্তমান সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।

এ ছাড়া অনেক আঞ্চলিক দলও রয়েছে যেগুলো এ নির্বাচনে লড়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আম আদমি পার্টি (এএপি- বর্তমানে দিল্লি ও পাঞ্জাবের ক্ষমতায়) ও তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি- পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায়)।

লোকসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার জন্য দরকার অন্তত ২৭২টি আসন। মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে জানা যেতে পারে ভারতের নতুন সরকারের দায়িত্ব কারা পাচ্ছে।

তবে এর আগে বিভিন্ন নির্বাচনে এমনও হয়েছে যে, কোনো দল বা জোটই এ ম্যাজিক নম্বর ছুঁতে পারেনি। এ ধরনের পরিস্থিতি ‘ঝুলন্ত সংসদ’ নামে পরিচিত।

ঝুলন্ত সংসদ কী?
লোকসভায় কোনো দল বা জোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ২৭২ আসন পেতে ব্যর্থ হলে এ ধরনের পরিস্থিতি ঝুলন্ত সংসদ নামে পরিচিত। এমন দৃশ্যপটে অন্যান্য দলের সমর্থন ছাড়া কোনো রাজনৈতিক দল এককভাবে সরকার গঠন করতে পারে না। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি একক-বৃহত্তর দলকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানান। রাষ্ট্রপতি নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য একক-বৃহত্তর দলের নেতাকে সাধারণভাবে ১০ দিনের সময় দেন।

যখন লোকসভায় কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে পারে না এবং নিম্নকক্ষে ঝুলন্ত সংসদ পরিস্থিতি দেখা দেয়, তখন কিছু সম্ভাব্য বিষয় ঘটতে পারে।  

কোয়ালিশন বা জোট সরকার গঠন
জোট সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনায় বসে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছাতে পারে। জোট সরকার সাধারণত জোটের সবচেয়ে বড় দলের নেতার নেতৃত্বাধীন হয়ে থাকে।  

মাইনরিটি সরকার
লোকসভায় সবচেয়ে বড় দল সংখ্যালঘু সরকার গঠনের চেষ্টা করতে পারে। এক্ষেত্রে সংখ্যালঘু সরকারে বিল পাস করতে এবং আস্থা ভোট পেতে একক বৃহত্তম দলের অন্যান্য রাজনৈতিক দল বা নিম্নকক্ষের স্বতন্ত্র সদস্যদের সমর্থনের প্রয়োজন হবে।

নতুন করে নির্বাচনের আহ্বান
যদি কোনো দল বা জোট সরকার বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সরকার গঠন না করতে পারে, তবে রাষ্ট্রপতি লোকসভা বিলুপ্ত ঘোষণা করে নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিতে পারেন। এটি তখনই ঘটে যখন জোট সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সমস্ত আলোচনা ব্যর্থ হয়।

যে যে সময়ে ভারত ঝুলন্ত সংসদের সাক্ষী
১৯৬৭ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর কোনো দল বা জোট সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এতে ঝুলন্ত সংসদ পরিস্থিতি দেখা দেয়। পরে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে একটি জোট সরকার গঠিত হয়।

১৯৮৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর কোনো দল বা জোট সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। এতেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেবার ভিপি সিংয়ের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠিত হয়।  

১৯৯৬ সালে কোনো দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হলে আরও একবার সংসদ ঝুলে যায়। সেবার প্রথমে এইচডি দেবেগৌড়া এবং পরে আইকে গুজরালের নেতৃত্বে জোট সরকার গঠিত হয়।

টাইমসনিউজনাউ ও বিবিসি অবলম্বনে

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৯ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০২৪
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।