ভারতের কেরালার ওয়ানাড় জেলায় ভারী বর্ষণে সৃষ্ট ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ভোরে ধসের ঘটনাটি ঘটে।
এনডিটিভিসহ ভারতের অন্যান্য সংবাদমাধ্যম বলছে, ভোরের দিকে তিনবার ধস নামে ওয়েনাগে। চার ঘণ্টায় পর পর তিনবার ধস হয়।
১৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। সংখ্যাটা শতাধিক।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় বহু এলাকায় উদ্ধারকারীরা পৌঁছতে পারেননি। ভারী বৃষ্টির কারণে আকাশপথেও উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্থানীয় আবহাওয়া কর্তৃপক্ষ বলছে, কেরালায় ভারী বৃষ্টিপাত এখনই থামবে না। আগামী বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) পর্যন্ত এ ধারা বহমান থাকতে পারে। ফলে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে পারে বলে উদ্বেগে রয়েছে প্রশাসন।
ওয়েনাড়ের মেপ্পাড়ির কাছে পাহাড়ি এলাকায় উদ্ধারকাজে নেমেছে স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসনসহ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিনা জর্জ জানিয়েছেন, সেনা ও নৌ-বাহিনীও উদ্ধারকাজে নেমেছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ২৫০ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। আপাতত অস্থায়ী শিবিরে রয়েছে তারা। কেরালার মুন্ডাক্কাই, ছুরালমালা, আট্টামালা, নুলপুঝা এলাকা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী এএনআইকে বলেছেন, আমাদের যোগাযোগব্যবস্থা উদ্ধার করতে হবে। হেলিকপ্টার আনা হয়েছে। আবহাওয়া খারাপ থাকায় কপ্টারে করে উদ্ধারকাজ সম্ভব হচ্ছে না। ৭০ জন আহত হয়েছে। হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে।
প্রশাসন বলছে, এই এলাকায় লাগাতার ভারী বৃষ্টির কারণেই এই ধস নেমেছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় কেরালায় ৩৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া ভবনের হিসাবে কোনো জায়গায় প্রতি ঘণ্টায় ১৬ থেকে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ধরা হয় সেখানে অতি ভারি বৃষ্টি হয়েছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় কেরালায় ঘণ্টায় গড়ে ১৫ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন মনে করছে, এই কারণেই ভোররাতে ধস নেমেছে ওয়েনাড় জেলার পাহাড়ি এলাকায়।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বিজেপিকর্মীরা যাতে এই পরিস্থিতিতে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন, তা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে নিশ্চিত করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তা দপ্তরের পক্ষ থেকে মৃতদের পরিবারকে দুই লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আহতদের ৫০ হাজার রুপি দেওয়া হবে।
বিজেপি সভাপতি নাড্ডা জানিয়েছেন, আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার ও ধ্বংসস্তূপ থেকে দেহ বের করে আনাই এখন লক্ষ্য সরকারের। তিনি বলেন, কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর সাহায্যও সেখানে পৌঁছেছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমেই কাজ চলছে। প্রাথমিক লক্ষ্য হলো, দেহ উদ্ধার ও যারা জীবিত রয়েছেন, তাদের প্রাণরক্ষা।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২৪
এমজে