বিশ্বে একটানা রেকর্ড তাপমাত্রার দিন আপাতত শেষ হয়েছে ৷ গত ১৩ মাস ধরে এই একটানা রেকর্ড তাপমাত্রা অবস্থান করছিল৷
ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বায়ুমণ্ডল ও সমুদ্রপৃষ্ঠে রেকর্ড তাপমাত্রার সাক্ষি পৃথিবী। কয়েক বছর আগের রেকর্ডের তুলনায় যা গড়ে প্রায় এক চতুর্থাংশ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
সাম্প্রতিক কয়েক দশক ধরে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে বাড়ছে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা। গত কয়েক বছরে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক রেকর্ড ভেঙে চড়েছে উষ্ণতার পারদ। তাই মাত্র ০.০৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম গরমে এখনই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে নারাজ বিজ্ঞানীরা। বরং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিশ্ব উষ্ণায়নের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবগুলোই ভাবাচ্ছে তাদের।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়নকে মাপতে আপেক্ষিক হিসাবে ১৫০ বছর আগের পৃথিবীর তাপমাত্রাকে মাপকাঠি ধরা হয়। তাহলে বর্তমানে উষ্ণায়নের মাপকাঠি হল ১৮৫০-১৯০০ সালের মাঝামাঝি সময়ের পৃথিবী। এ সময়ের মধ্যে শিল্পের এত অগ্রগতি হয়নি। ফলে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের মাত্রা ছিল কম। তাই বায়ুমণ্ডল ও সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রাও কম ছিল। সেই তুলনায় ২০২৪ সালের জুলাই ১.৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ, যার মধ্যে প্রায় ১.৩ ডিগ্রির জন্য মাঝের দশকগুলোয় শিল্পায়নের ক্ষতিকর প্রভাব দায়ী।
আরেকটি কারণ হলো এল নিনো। এটি মূলত প্রশান্ত মহাসাগরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এক উষ্ণ সমুদ্রস্রোত। এর ফলে সারা পৃথিবীতে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ে, বদলায় দক্ষিণ গোলার্ধের পূবালী বায়ুর গতিপথও। এর উল্টো ঘটনার নাম লা নিনা। এই সময় পূবালী বায়ুর গতি বাড়ে, কমে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা। ভারী বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার প্রভাব পড়ে ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমারসহ দক্ষিণের অন্যান্য দেশগুলোতেও। এল নিনো কিংবা লা নিনা আসতে পারে তিন থেকে সাত বছর অন্তর।
আবহবিদরা বলছেন, চলতি এল নিনো চক্রটি শুরু হয়েছিল এক বছর আগে, ২০২৩ সালের শেষে তা চরমে পৌঁছয়। এটি নির্বিষ মদে যাওয়ায় খানিক কমেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২৪
এসকে/এমজে