বাংলাদেশের কোনো রোগীকে চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কলকাতার জেএন রায় হাসপাতাল।
বাংলাদেশে ভারতের পতাকা অবমাননার প্রতিবাদ হিসেবে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হাসপাতালটির কর্মকর্তা শুভ্রাংশু ভক্ত ভারতের সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আজ এই মর্মে নোটিশ জারি করেছে যে এখন থেকে আগামী অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত জে এন রায় হাসপাতাল কোনো বাংলাদেশি রোগীকে ভর্তি করবে না এবং চিকিৎসাসেবা দেবে না। বাংলাদেশের নাগরিকরা ভারতের প্রতি যে অসম্মান প্রদর্শন করেছে, তার জেরেই নেওয়া হয়েছে এ সিদ্ধান্ত।
তিনি আরও বলেন, দেশ সবার উপরে। দেশের ওপরে কিছু হতে পারে না। চিকিৎসাসেবা একটি মহৎ পেশা কিন্তু দেশের মর্যাদা সর্বাগ্রে। অন্যান্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানেরও এই পথ অনুসরণ করা উচিত।
শুভ্রাংশু ভক্ত আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা বর্তমানে সেখানে ব্যাপকভাবে ভারতবিদ্বেষ দেখতে পাচ্ছি।
এর আগে কলকাতা প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ইন্দ্রনীল সাহা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, তিনি বাংলাদেশি রোগী দেখা বন্ধ করে দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘বুয়েট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে ভারতের জাতীয় পতাকা পড়ে আছে! আমি আপাতত চেম্বারে বাংলাদেশি রোগী দেখা বন্ধ করে দিচ্ছি। আগে দেশ, আয় পরে। আমি আশা করি সম্পর্ক স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য ডাক্তাররাও একই কাজ করবেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মাটিতে ভারতের এবং ইসরায়েলের পতাকার নকশা এঁকে সেটির উপর হেঁটে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন ছবি ভাইরাল।
অন্যদিকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার ইস্যুতে একইরকম কাণ্ড ঘটেছে কলকাতায়।
সেখানে বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে সহিংস বিক্ষোভে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কুশপুতুল জ্বালানো হয়। পোড়ানো হলো বাংলাদেশের পতাকা। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং প্রধান উপদেষ্টার কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর জঘন্য কাজের তীব্র নিন্দা জানায় বাংলাদেশ সরকার। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিবৃতিতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় বাংলাদেশ সরকার।
এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার যেকোনো ধরনের সহিংস কার্যকলাপের নিন্দা করে। একইসঙ্গে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশন এবং ভারতে বাংলাদেশের অন্যান্য কূটনৈতিক মিশনের পাশাপাশি কূটনীতিক এবং অ-কূটনৈতিক সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২৪
এসএএইচ