ঢাকা, রবিবার, ২৯ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েল ছেড়ে পালাচ্ছেন কেন ধনী ইসরায়েলিরা?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২৫
ইসরায়েল ছেড়ে পালাচ্ছেন কেন ধনী ইসরায়েলিরা?

অবরুদ্ধসহ বোমাবর্ষণ করে আগ্রাসন চালিয়ে ফিলিস্তিনের ভূখণ্ডে অবৈধ বসতি গড়লেও নিরাপত্তায়হীনতা ভুগছেন সেখানে বসবাসরত ধনী ইসরায়েলিরা। যে কারণে হাজার হাজার ইসরায়েলি কোটিপতি ইসরায়েল ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।

 

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) ইসরায়েলি চ্যানেল থার্টিন থেকে জানা গেছে, ২০২৪ সালে দেশটির এক হাজার ৭০০ ধনী নাগরিক দেশত্যাগ করেছেন। সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন সঞ্চয় করা অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র। এমনটা চলতে থাকলে তা দেশটির অর্থনীতির জন্য বড় আঘাত হয়ে দেখা দেবে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।

অভিবাসন পরিষেবার ক্ষেত্রে ব্রিটিশভিত্তিক বিশ্বনেতা হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স এবং দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক ডেটা ইন্টেলিজেন্স ফার্ম নিউ ওয়ার্ল্ড ওয়েলথের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০২৪ সালে মধ্য ইসরায়েলের তেল আবিব এবং হার্জলিয়ায় ২২ হাজার ৬০০ কোটিপতি বসবাস করছিলেন, ২০২৩ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ২৪ হাজার ৩০০ জন। অর্থাৎ গত বছরে ১ হাজার ৭০০ জনেরও মতো কোটিপতি ইসরায়েল ছেড়েছেন।

একই প্রেক্ষাপটে ওয়াইনেট জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২৪ সালের জুলাইয়ের মধ্যে হাই-টেকনোলজির প্রায় আট হাজার ৩০০ কর্মী ইসরায়েল ছেড়েছেন। এটি ওই শিল্পের শ্রমিকদের প্রায় ২ দশমিক ১ শতাংশ। প্রতিবেদনে একে ‘গভীর উদ্বেগজনক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি ২০২৫ সালে খাতটির সমস্যাজনক অবস্থার প্রতিফলন।

এর আগে গত বছরের অক্টোবরে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের প্রথম সাত মাসে ৪০ হাজার ৬০০ জন ইসরায়েলি দেশ ছাড়েন। যা ২০২৩ সালে প্রতি মাসে দেশত্যাগী ইসরায়েলিদের গড় পরিমাণের তুলনায় ২২০০ জন বেশি। ইসরায়েলের সেন্ট্রাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস (সিবিএস) এই তথ্য জানিয়েছিল।  

ইসরায়েল সরকারের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে মোট ৫৫ হাজার ৪০০ লোক দেশ ছেড়েছিল। অথচ, এর আগের এক দশকে প্রতিবছর গড়ে ৩৭ হাজার করে ইসরায়েলি দেশ ছেড়েছে। ২০২৩ সালে অবশ্য ২৮ হাজার ইসরায়েলি আবার নিজ দেশে ফেরত এসেছিলেন।

তবে বর্তমান সময়ে এই পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করেছে, যখন ইসরায়েলে অর্থনৈতিক সংকট বাড়ছে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধের পরে দেশটির দুর্বল অর্থনীতি এবং সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা আমদানি শুল্কের কারণে এমন হয়েছে।

মার্কিন আমদানির ওপর থেকে ইসরায়েল তার অবশিষ্ট শুল্ক প্রত্যাহার করার ঠিক একদিন পরে ৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্র এবং প্রতিপক্ষ উভয় পক্ষের ওপর শুল্ক আরোপ করে। একে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বিস্তারিত খবরটি হলো, ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ইসরায়েলের আরোপ করা সমস্ত শুল্ক প্রত্যাহারের একটি নির্দেশিকা স্বাক্ষর করেন। সেখানে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির ওপর শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করা একটি সংবেদনশীল সময়ে ইসরায়েলি অর্থনীতিকে সুরক্ষিত করার এবং ইসরায়েলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এক ইসরায়েলি পত্রিকায় বলা হয় , ব্রেন ড্রেন অর্থাৎ মেধাবীরা ইসরায়েল ছাড়ছে। কেননা, দেশ ছাড়ার এই তালিকায় ডাক্তার, বিজ্ঞানী, ফার্মাসিস্ট ও প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরাও রয়েছেন। তারা বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি ও নিরাপদ জীবনের আশায় ইসরায়েল ছাড়ছেন।

তথ্যসূত্র: আনাদোলু

বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০২৫
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।