গাজায় সামরিক অভিযান আরও বিস্তারের অনুমোদন দিয়েছেন ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা। দেশটির সরকারি টেলিভিশন ‘কান’ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে গত দুই মাস ধরে গাজায় চলা অবরোধ প্রত্যাহারের সম্ভাবনা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এর আগে, টেলিগ্রামে প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, ইসরায়েল গাজায় সম্পূর্ণ বিজয় অর্জন করবে। আমাদের সামরিক অভিযান আমরা চূড়ান্তভাবে শেষ করব।
গাজায় মানবিক সংকট দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠলেও নেতানিয়াহু সরকারের এই অবস্থান স্পষ্ট করেছে যে, ইসরায়েল এখনো যুদ্ধ থামানোর পথে হাঁটছে না।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সোমবার (৫ মে) ভোরে চালানো হামলায় কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স বিভাগ। এর আগের দিন, রোববার (৪ মে) সারা গাজাজুড়ে আরও ২৪ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের মধ্যে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫২ হাজার ৫৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৯১ জন।
তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ। তাদের হিসাব অনুযায়ী, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন এবং তারা সবাই মৃত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও ইসরায়েল এখনও বড় পরিসরে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে হামাসের বিরুদ্ধে আরও তীব্র সামরিক অভিযান চালাতে নতুন করে হাজার হাজার রিজার্ভ সেনাকে ডেকেছে ইসরায়েল। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান আয়াল জমির রোববার (৪ মে) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এই সপ্তাহে, আমরা গাজায় অভিযান তীব্র ও সম্প্রসারিত করার জন্য দশ হাজার রিজার্ভ সেনার কাছে খসড়া আদেশ পাঠাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য—জিম্মিদের মুক্ত করা এবং হামাসকে সম্পূর্ণ পরাজিত করা।
আইডিএফ প্রধান আরও জানান, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার ভেতরে ও মাটির নিচে থাকা হামাসের অবকাঠামো ধ্বংসে আরও অভিযান চালাবে।
এর আগে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানান, আন্তর্জাতিক চাপ ও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সত্ত্বেও হামলা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, যুদ্ধ থামবে না, যতক্ষণ না নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে।
এদিকে, যুদ্ধের শুরুর দিকে হামাস যেসব ইসরায়েলিকে জিম্মি করেছিল, তাদের অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। যাদের মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই যুদ্ধবিরতির সময় ছাড়া পেয়েছেন।
তবে সর্বশেষ প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির সুযোগেও ইসরায়েল সাড়া দেয়নি। বরং যুদ্ধ জোরদারের ইঙ্গিত দিয়ে এখন আরও বড় পরিসরে সামরিক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে দখলদার বাহিনী।
এমএম