ঢাকা, বুধবার, ৫ আষাঢ় ১৪৩২, ১৮ জুন ২০২৫, ২১ জিলহজ ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য, চড়া হচ্ছে তেলের দাম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৪৬, জুন ১৭, ২০২৫
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য, চড়া হচ্ছে তেলের দাম

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের উত্তেজনায় আবারও আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ছে তেলের দাম। যদিও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো তেল-গ্যাস স্থাপনায় আঘাত লাগেনি, তবে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা বাজারে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত, ব্রেন্ট ক্রুড বা হালকা অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ব্যারেলপ্রতি ১ দশমিক ৫৬ ডলার বা ২ দশমিক ১ শতাংশ।  

এই গ্রেডের তেলের দাম এখন ব্যারেল-প্রতি  ৭৪.৭৯ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট  বা অপরিশোধিত তেলের মিশ্রণের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৪২ ডলার বা প্রায় ২ শতাংশ, ব্যারেল-প্রতি বর্তমান দাম ৭৩ দশমিক ১৯ ডলার।

সেশনের শুরুতে উভয় তেলের দাম ২ শতাংশেরও বেশি বেড়ে গেলেও দিনজুড়ে বেশ ওঠানামা দেখা গেছে।

এদিকে ইসরায়েলের হামলায় ইরানের দক্ষিণ পার্স গ্যাসক্ষেত্রে আগুন লাগার পর কিছু অংশে গ্যাস উৎপাদন আংশিক বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া ইরানের শারান তেল ডিপোতেও আঘাত হেনেছে ইসরায়েল।

তবে তেল সরবরাহে বড় ধরনের বাধা এখনও দেখা যায়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, বড় ঝুঁকি হচ্ছে হরমুজ প্রণালী, কিন্তু সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা এখন কম।

স্যাক্সো ব্যাংক (ডেনিশ বিনিয়োগ ব্যাংক, যা অনলাইন ট্রেডিং এবং বিনিয়োগের জন্য বিখ্যাত)-এর বিশ্লেষক ওলে হ্যানসেন বলেন, হরমুজ বন্ধ হলে ইরান নিজেও রাজস্ব হারাবে, আর আমেরিকা চায় তেলের দাম ও মুদ্রাস্ফীতি কম থাকুক।  

তবে মঙ্গলবার হরমুজের কাছে দুটি তেলবাহী ট্যাংকারের সংঘর্ষ ও আগুন লাগার ঘটনা পরিস্থিতির অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

যুদ্ধের আওতায় থাকা অঞ্চলে ইলেকট্রিক জ্যামিং (ইলেকট্রনিক যুদ্ধের একটি রূপ যেখানে জ্যামারগুলি শত্রুর রাডারের দিকে হস্তক্ষেপকারী সংকেত বিকিরণ করে, অত্যন্ত ঘনীভূত শক্তি সংকেতসহ রিসিভারকে ব্লক করে) বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

তবে বাজারে সরবরাহ সংকট এখনও দেখা যায়নি। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থা তাদের সর্বশেষ মাসিক প্রতিবেদনে জানায়, তেল চাহিদার পূর্বাভাস কমিয়ে ধরা হয়েছে প্রতিদিন ২০ হাজার ব্যারেল, আর সরবরাহ বৃদ্ধির পূর্বাভাস বাড়িয়ে ধরা হয়েছে ২ লাখ ব্যারেল থেকে ১৮ লাখ ব্যারেল পর্যন্ত।

এ ছাড়া আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার সংক্রান্ত বৈঠকের দিকেও নজর রাখছে বিনিয়োগকারীরা। এই পরিস্থিতি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে তেলের দাম আরও বাড়তে পারে। আবার যদি উত্তেজনা দ্রুত কমে যায়, তাহলে বাজার স্থিতিশীল হওয়ার সম্ভাবনাও আছে। সবকিছু এখন নির্ভর করছে ভূরাজনৈতিক অগ্রগতির ওপর।

এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।