ইরান-ইসরায়েল চলমান যুদ্ধের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ফ্রান্সের অর্থনীতিতেও। যদিও পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির অর্থনৈতিক কর্তৃপক্ষ, তবে জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা এবং বৈশ্বিক পরিবহন ব্যবস্থায় বিঘ্ন ফ্রান্সের অর্থনীতিতে নতুন চাপ তৈরি করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুদ্ধের কারণে হরমুজ প্রণালীতে সম্ভাব্য বাধার আশঙ্কায় তেলের দাম বেড়েছিল। গোল্ডম্যান স্যাকস সতর্ক করেছে, ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছুঁতে পারে। এই মূল্যবৃদ্ধি ফ্রান্সসহ সমগ্র ইউরোপে জ্বালানির খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে ফ্রান্সের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফ্রাঁসোয়া ভিলরোয়া দ্যা গালো আশ্বাস দিয়েছেন, মুদ্রাস্ফীতি এখনো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ইউরোর স্থিতিশীল অবস্থান তেলের ঊর্ধ্বগতির নেতিবাচক প্রভাব অনেকটাই প্রশমিত করেছে। ফলে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি) সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে ভাবছে।
যুদ্ধবিরতির খবরে ইউরোপের শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে ফরান্সের ট্রাভেল ও লিজার খাতের শেয়ারমূল্য বেড়েছে, যদিও তেলের দাম কমায় জ্বালানি খাতের শেয়ার কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ঋণের বোঝা ফ্রান্সের অর্থনীতির জন্য বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করেছে। ২০২৪ সালে দেশটির বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৬.১% এবং সরকারি ঋণ জিডিপির ১১৩% ছুঁয়েছে, যা ইউরোপীয় গড়ের চেয়ে অনেক বেশি।
যুদ্ধের কারণে ফ্রান্সের পরিবহন খাতেও ফ্রান্সের পরিবহন খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কাতার, কুয়েত ও বাহরাইনের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় এয়ার ফ্রান্সসহ একাধিক বিমান সংস্থা রুট পরিবর্তন কিংবা ফ্লাইট বাতিলে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে বিমান চলাচল এবং ভ্রমণ ব্যয় উভয়ই বেড়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পরিস্থিতি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে এর প্রভাব আরও গভীর হতে পারে—বিশেষত জ্বালানি নির্ভর খাতগুলোতে। তবে আপাতত ফ্রান্সের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকরা সতর্ক ও প্রস্তুত রয়েছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
এমএম