ঢাকা, সোমবার, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২, ৩০ জুন ২০২৫, ০৫ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

দ্বিতীয় দিনেও পুড়ছে তুরস্কের ইজমির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬:৪৪, জুন ৩০, ২০২৫
দ্বিতীয় দিনেও পুড়ছে তুরস্কের ইজমির

তুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলীয় ইজমির প্রদেশের দাবানল এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ চারটি গ্রাম ও দুটি আবাসিক এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে।

সোমবার (৩০ জুন) দেশটির বনমন্ত্রী ইব্রাহিম ইউমাকলি জানান, ইজমিরের কুইউজাক ও দোয়ানবেই এলাকায় রাতভর ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে থাকায় আগুন আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে হেলিকপ্টার, অগ্নিনির্বাপক বিমান, অন্যান্য যানবাহন ও এক হাজারের বেশি কর্মী নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে, দাবানলের কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইজমির আদনান মেন্দেরেস বিমানবন্দরের কার্যক্রম।

তুর্কি গণমাধ্যমগুলোয় প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, পানি বহনকারী ট্রাক্টর ও হেলিকপ্টার দিয়ে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পাহাড়ি অঞ্চলজুড়ে পুড়ে যাওয়া গাছের ফাঁকে থাকা আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে।

এর আগে প্রবল বাতাসের কারণে কিছু সময় হেলিকপ্টার উড্ডয়ন বন্ধ রাখতে হয়। তবে দুটি পানি ছোড়ার বিমান ও একটি বড় ভূমিভিত্তিক দল আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিল।  

ইজমিরের গভর্নর সুলেইমান এলবান জানান, রোববার ইজমিরের সেফেরিহিসার ও মেন্দেরেস জেলার মাঝখানে প্রথম আগুনের সূত্রপাত ঘটে। প্রবল বাতাসের (ঘণ্টায় ১১৭ কিলোমিটার) কারণে তা দ্রুত বিস্তৃত হয়ে দাবানলে রূপ নেয়।

সেফেরিহিসারের পাঁচটি এলাকা দাবানলের মুখে পড়ায় সেখান থেকে স্থানীয়দের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান গভর্নর।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগুন তাদের ঘর বাড়ির দিকে চলে আসায় তারা নিজেরাই গাছ কেটে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়েছে। উর্কমেজ গ্রামে এমন পরিস্থিতি বেশি সৃষ্টি হয়েছিল।

ইজমির শহর থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরের গাজিয়েমির এলাকার একটি আবর্জনার স্তূপে নতুন করে আগুন লেগেছে। এ আগুন পাশের বনভূমি ও ওতোকেন্ট শিল্পাঞ্চলের দিকে ছড়িয়ে পড়েছে। এই অঞ্চলে রয়েছে বেশ কয়েকটি গাড়ি বিক্রয় কেন্দ্র, যার একটি ইতোমধ্যেই আগুনে পুড়ে গেছে বলে স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি জানিয়েছে।

তুরস্কের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভয়াবহ দাবানলের সম্মুখীন হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গ্রীষ্মকাল আরও বেশি উষ্ণ ও শুষ্ক হয়ে উঠছে, যার প্রভাবে দাবানলের ঘটনা বাড়ছে। গত বছরও ইজমিরের একই এলাকাকে গ্রাস করেছিল এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড।

তুরস্কের পাশাপাশি দক্ষিণ ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশেও দাবানল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রচণ্ড গরম থেকে বাঁচতে মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে।

ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় অড প্রদেশের করবিয়ের এলাকায় আগুন দেখা দিয়েছে, যেখানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। সেখানে একটি ক্যাম্পসাইট ও একটি পুরনো অ্যাবি নিরাপত্তার স্বার্থে খালি করে দেওয়া হয়েছে। গত সপ্তাহে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের দক্ষিণ উপকূলীয় বনাঞ্চলে দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় সেখান থেকেও লোকজনকে সরিয়ে নিতে হয়। পর্তুগালের দক্ষিণ অংশ, বিশেষ করে রাজধানী লিসবনসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সোমবার রাত পর্যন্ত লাল সতর্কতা দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সমুদ্র ও আবহাওয়া ইনস্টিটিউট।

এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।