প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের একটি সংস্থা বলেছে, গাজার মানুষ দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত। গাজা উপত্যকার পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নজরদারির দায়িত্ব পালন করা জাতিসংঘের সংস্থা দ্য ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেইজ ক্লাসিফিকেশন বা আইপিসি বলছে, গাজায় খাদ্য নিরাপত্তা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে।
গাজা শহর এবং এর আশেপাশের এলাকা দুর্ভিক্ষের কবলে বলে নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি।
সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ দেইর আল-বালাহ এবং খান ইউনিস এলাকাও বিপর্যয়কর পরিস্থিতির শিকার হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
আইপিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার দুর্ভিক্ষ সম্পূর্ণরূপে মানুষের তৈরি এবং এটি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
আইপিসি নিজে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে না যে দুর্ভিক্ষ হচ্ছে কি না, তবে তারা এমন বিশ্লেষণ দেয় যা সরকার, সংস্থা ও সংস্থাগুলোকে দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে বিবৃতি বা ঘোষণা জারি করতে সহায়তা করে।
ইসরায়েল দাবি করেছে যে, আইপিসির প্রতিবেদন মিথ্যা ও পক্ষপাতদুষ্ট। তারা বলেছে, ইসরায়েল আইপিসির সর্বশেষ প্রতিবেদনের ফলাফল, বিশেষ করে গাজা শহরে দুর্ভিক্ষের দাবি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।
এদিকে জাতিসংঘের চারটি সংস্থা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং ক্ষুধা ও অপুষ্টিজনিত মৃত্যু রোধে নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বা এফএও, ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি বা ডব্লিউএফপি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও এই যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গাজার হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে "দুর্ভিক্ষ ও অপুষ্টিতে" ২৭১ জন মারা গেছে - যার মধ্যে ১১২ জন শিশুও রয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আইপিসি'র প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, যখন মনে হচ্ছে গাজার জীবন্ত নরক বর্ণনা করার জন্য আর কোনো শব্দ অবশিষ্ট নেই, ঠিক তখনই একটি নতুন শব্দ যোগ হয়েছে––দুর্ভিক্ষ।