কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। গত মঙ্গলবারের এ হামলা নিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকের আগে সর্বসম্মতভাবে দেওয়া এক বিবৃতিতে ১৫ সদস্য রাষ্ট্রই কাতারের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে এবং পরিস্থিতি প্রশমনের আহ্বান জানায়।
ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের খসড়া করা ওই বিবৃতিতে ইসরায়েলের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি। তবে বলা হয়, পরিস্থিতি প্রশমন অত্যন্ত জরুরি এবং কাতারের সঙ্গে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা সংহতি প্রকাশ করছে। একইসঙ্গে জোর দেওয়া হয়, গাজায় যুদ্ধ ও ভোগান্তি বন্ধ করা এবং জিম্মিদের মুক্তি, যাদের মধ্যে কয়েকজন হামাসের হাতে নিহত হয়েছেন, এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। বর্তমানে গাজায় ৪০ জনেরও বেশি জিম্মি আটক আছেন, যাদের মধ্যে কেবল ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হামলা ও হতাহত
মঙ্গলবার দোহায় এই নজিরবিহীন হামলায় পাঁচজন হামাস সদস্য নিহত হন। তবে ফিলিস্তিনি সংগঠনটি জানিয়েছে, তাদের শীর্ষ নেতৃত্ব হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গেছে। এ ঘটনায় এক কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। এতে পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা তীব্রভাবে বেড়ে গেছে।
হামলার সময় দোহায় বৈঠকে বসেছিলেন হামাস নেতারা। বৈঠকের আলোচ্যসূচি ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত নতুন শান্তি চুক্তি।
সাধারণত জাতিসংঘে ইসরায়েলকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এবার ওয়াশিংটন থেকে তীব্র ভর্ৎসনা এসেছে। কার্যনির্বাহী মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডরোথি শে বলেন, কাতারে একতরফা বোমাবর্ষণ, একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র যেটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে থেকে সাহসিকতার সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার ঝুঁকি নিচ্ছে। এ ধরনের হামলা ইসরায়েল বা আমেরিকার লক্ষ্য কোনোভাবেই অগ্রসর করে না।
তবে তিনি আরও যোগ করেন, তার মানে এই নয় যে কেউ ইসরায়েলের জিম্মিদের ঘরে ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ভাষা ব্যবহারে আপত্তি জানিয়েছিল। তবুও বিবৃতিটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টতই এখনো ইসরায়েলের পাশে আছে। নিরাপত্তা পরিষদেও তাদের রক্ষা করবে। তবে কাতারে এই হামলা মার্কিনিদের অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে। আগামী ঘণ্টায় বা কয়েক ও দিনে হোয়াইট হাউস থেকে বিষয়টি সম্পর্কে আরও স্পষ্ট কোনো বিবৃতি আসতে পারে।
হামলার পরপরই হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আগে থেকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়নি। পরে খবর পেয়ে তিনি তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে নির্দেশ দেন কাতারকে সতর্ক করতে। তবে তখনই হামলা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
এমজে