কোলকাতা: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দ্রুতগামী একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি ট্রেনের সংঘর্ষে ৬০ জন যাত্রী নিহত হয়েছেন। সোমবার খুব সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
কোলকাতা থেকে ২৬০ কিলোমিটার উত্তরে বীরভুম জেলার একটি রেলস্টেশনে একটি ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিলো। এ সময় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটির সঙ্গে একই রেললাইন ধরে পেছন থেকে আসা আরেকটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ৬০ জন যাত্রী নিহত ও প্রায় ১২০ জন আহত হন।
পশ্চিমবঙ্গের ত্রাণ বিষয়ক মন্ত্রী মুর্তজা হুসেইন বলেন, “মৃতের বেড়ে ৬০ জনে দাঁড়িয়েছে। আমরা গ্যাস কাটার ও অন্য যন্ত্রপাতি পাঠিয়েছি যাতে দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম চালানো যায়। ” নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে বলেও তিনি আশঙ্কা করেন।
জরুরিকর্মীরা মৃতদেহ ও আহতদের দুর্ঘটনার স্থান থেকে টেনে বের করছে। পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানান, “নিহতের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে গেছে। আমরা এখনো কিছু মৃতদেহ বের করার চেষ্টা করছি। ”
দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের বেঁচে যাওয়া একজন যাত্রী বলেন, “আমি ট্রেনের মধ্যে গভীর ঘুমে ছিলাম। এক সময় হঠাৎ বিস্ফোরণের মতো শব্দ শুনতে পাই এবং ঘুমের জায়গা থেকে পড়ে যায়। তারপর চারদিকে আতঙ্ক। ” এছাড়া বেঁচে যাওয়া রজনি ধর জানান, তিনি জোরে একটি শব্দ শুনতে পান এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের এখনো সন্দেহ রয়েছে, এই বিপর্যয়ের পেছনে কারা জড়িত। ” তিনি নিহতদের প্রত্যেক পরিবারের জন্য পাঁচ লাখ রুপি ও আহতের এক লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
স্থানীয় রেলের ট্রাফিক ম্যানেজার সুনীল ব্যানার্জি বলেন, “নিহত সবাই অসংরক্ষিত বগির যাত্রী ছিলেন। ফলে আমরা তাদের কারোরই নাম-ঠিকানা পাইনি। ” দুর্ঘটনার কারণ এখনো জানা যায়নি। সচরাচর ওই বগিতে যাত্রীরা ঠাসাঠাসি করে যাতায়াত করেন।
এর দুই মাসেরও কম সময় আগে পশ্চিমবঙ্গে আরেকটি ট্রেন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় প্রায় ১৫০ জন নিহত হয়েছিলেন। ওই ঘটনার জন্য মাওবাদীদের দায়ী করা হয়ে থাকে।
রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত উচ্চগতির ট্রেন ভারতে এখনো দূরপাল্লার যাত্রীদের এখনো মূল ভরসা। ভারতে প্রতিদিন এক কোটি ৮৫ লাখ মানুষ এসব ট্রেনে যাতায়াত করেন। প্রতিবছর গড়ে ৩০০টা দুর্ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১০