ঢাকা: এয়ার এশিয়ার নিখোঁজ ফ্লাইট কিউজেড ৮৫০১ এর অন্তত ছয় আরোহীর মরদেহ জাভা সাগর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা।
জাভা সাগরের কালিমানতান দ্বীপের নিকটবর্তী সমুদ্রে ছয় মরদেহ ছাড়াও নিখোঁজ প্লেনটির ধ্বংসাবশেষের তিনটি খণ্ডও উদ্ধারের করার কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্দোনেশীয় উদ্ধার ও অনুসন্ধান অভিযানের প্রধান বলেন, ধ্বংসাবশেষগুলোর মধ্যে ফ্লাইট কিউজেড ৮৫০১ এর একটি এক্সিট ডোরও রয়েছে। ।
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ও উদ্ধার মন্ত্রণালয়ের পরিচালক এসবি সুপ্রিয়াদি বলেন, মরদেহগুলো এখনো অক্ষত রয়েছে। নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে এগুলোকে উপকূলে নিয়ে আসা হচ্ছে।
পাশাপাশি নৌবাহিনী কর্মকর্তা মানাহান সিমোরাঙকিংর বরাত দিয়ে স্থানীয় টিভি ওয়ান জানায়, ওই স্থানে অনেক আরোহীকে পাওয়া গেছে। তবে তারা জীবিত না মৃত সে বিষয়ে কিছু বলেননি ওই নৌ কর্মকর্তা।
ইন্দোনেশীয় কর্তৃপক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে ইন্দোনেশিয়ার সংবাদমাধ্যম জানায়, উদ্ধারকারীরা ওই স্থানে সাগরতলে একটি প্লেনের ছায়াও দেখতে পেয়েছেন। শনাক্ত করার এক ঘণ্টার মধ্যেই উদ্ধার করা হয় ছয়টি মৃতদেহ। স্থানটি ফ্লাইটটির যাত্রাপথের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত।
ইন্দোনেশিয়ার বিমান পরিবহন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক জোকো মুরজাতমোজো সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এখন ওই ধ্বংসাবশেষগুলো পরীক্ষা করে দেখছি। এগুলোর রং সাদা ও লাল। নিখোঁজ প্লেনটিও সাদা ও লাল রংয়ের পেইন্ট করা ছিলো যা এয়ার এশিয়া বিমান সংস্থার লোগোর অনুরূপ।
এর আগে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে ইন্দোনেশিয়ার বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা অগাস দুই পুতরান্তো এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ধ্বংসাবশেষ’ পাওয়ার কথা জানান।
তিনি বলেন, প্লেনটির রাডারের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগের স্থান থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ১০টি ‘ধ্বংসাবশেষ’ পাওয়া গেছে। এছাড়া সাদা রঙের ছোট ছোট আরো কয়েকটি ‘বস্তু’ পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অগাস বলেন, আমরা একটি জরুরি স্লাইড, প্লেনের দরজা ও চারকোণাকৃতি একটি বক্সের ছবি শনাক্ত করেছি। এ সময় তিনি প্লেনের দরজা, স্লাইড ও বক্সের ছবি সবার সামনে তুলে ধরেন।
ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভার সুরাবায়ায় অবস্থিত জুয়ানদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রোববার ভোরে স্থানীয় সময় ৫টা ৩৫ মিনিটে ওড়ার ৪৫ মিনিট পরই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সংযোগ হারিয়ে ফেলে এয়ার এশিয়ার এয়ার বাস ৩০০-২০০ প্লেনটি। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমান বন্দরে অবতরণ করার কথা ছিলো প্লেনটির।
ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, সামনে পড়া মেঘের স্তর এড়াতে কন্ট্রোল রুমের কাছে আরও উপরে ওঠার অনুমতি প্রার্থনা করেন প্লেনটির পাইলটরা। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্লেনটির সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে এরপরই তীব্র ঝড়ের মুখে পড়ে প্লেনটি।
প্লেনটিতে ৭ ক্রু ও ১৫৫ যাত্রী মিলিয়ে মোট ১৬২ জন আরোহী ছিলেন। এদের মধ্যে ২ পাইলট ৫ ক্রেবিন ক্রু ছাড়া ১৪৯ জন যাত্রীই ইন্দোনেশিয়ান। বাকি ছয়জনের মধ্যে তিনজন দ.কোরিয়ান, একজন মালয়েশিয়ান, একজন সিঙ্গাপুরিয়ান ও একজন ফরাসি।
** সমুদ্রে ভাসছে এয়ার এশিয়ার আরোহীদের মরদেহ
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৪