ঢাকা: দিল্লিতে নিরঙ্কুশ ও অবিস্মরণীয় জয়ের পথে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (এএপি)। ভোট গণনার সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী ৭০ আসনের দিল্লির বিধানসভার প্রায় সব আসনেই এগিয়ে রয়েছে আম আদমি পার্টি।
এনডিটিভিতে প্রকাশিত গণনার সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী দিল্লির বিধান সভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টি ৬৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এগিয়ে রয়েছে মাত্র ৩টি আসনে। অপরদিকে কোনো আসনেই এগিয়ে নেই মাত্র এক বছর আগেও দিল্লির ক্ষমতায় থাকা ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।
অথচ ভোটের আগের জনমত জরিপের ফলাফলেও বিজেপির থেকে খুব বেশি এগিয়ে ছিলো না আপ। তাদের ঠিক ঘাড়েই নিঃশ্বাস ফেলছিলো বিজেপি। মঙ্গলবার সকালে কিন্তু ভোট গণনা শুরু হতেই পাল্টে যেতে থাকে হিসাব-নিকাশ। বেশিরভাগ আসনেই আম আদমি পার্টির প্রার্থীদের থেকে অনেক পিছিয়ে বিজেপির প্রার্থীরা।
যদিও অানুষ্ঠানিকভাবে এখনও ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি, তবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আম আদমির এই থাকার প্রবণতা বহাল থাকবে তা এক প্রকার নিশ্চিত।
দিল্লির মসনদ পেতে এবার চমক হিসেবে কিরণ বেদীকে নামিয়েও হালে পাল পায়নি বিজেপি। আম আদমিকে মোকাবেলায় মাঠে নেমেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এছাড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার প্রায় সব সদস্য, বিজেপির ১২০ জন লোকসভা সদস্য এবং সমমনা মৌলবাদী হিন্দু সংগঠন আরএসএস (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংস্থা) এর এক লাখ কর্মী নেমেছিলেন প্রচারণায়। ভারতীয় মিডিয়ারও প্রভাবশালী একটি অংশেরও আনুকূল্য পায় বিজেপি।
কিন্তু বিজেপির সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় একজন মাত্র ব্যক্তির ক্যারিশমায়। তার নাম আরবিন্দ কেজরিওয়াল। বিজেপির সব কারিগরির সামনে বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান তিনি। অথচ মাত্র এক বছরেরও কম সময় আগ যখন দিল্লির সরকার থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন কেজরীওয়াল তখন সমালোচকরা ‘ভাগওয়া’ বা পলায়নপর’ হিসেবে চিহ্নিত করতে শুরু করে তাকে। তবে দিল্লির সাধারণ ভোটাররা যে সমালোচকদের কথায় কান দেয়নি তা তো ভোটের ফলেই পরিষ্কার।
এবারের ভোটের সবচেয়ে অবাক করা বিষয়টি হলো গণনার সময় একটি আসনেও কংগ্রেসের এগিয়ে না থাকা। অথচ মাত্র এক বছর আগেও দিল্লি ও কেন্দ্রের ক্ষমতায় ছিলো দলটি। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোটারদের এই মুখ ফিরিয়ে নেয়া দলটির ইতিহাসে নজিরবিহীন। এবারই প্রথমবারের মত দিল্লির বিধানসভায় একটি আসনও না পাওয়ার লজ্জাজনক রেকর্ড গড়ার পথে কংগ্রেস।
এ পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটিতে। ইতোমধ্যেই দলের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে মিছিল করে জানিয়ে দিয়েছেন ‘রাহুল ভাগাও, প্রিয়াঙ্কা লে আও’। অর্থ পরিষ্কার, রাহুলের নেতৃত্বে আর আস্থা নেই তৃণমূলের নেতাকর্মীদের, তারা চাইছেন প্রিয়াঙ্কাকে।
শনিবার অনুষ্ঠিত হয় দিল্লির বিধানসভার ভোট। মঙ্গলবার ভারতীয় সময় সকাল আটটায় ১৪টি কেন্দ্রে রক্ষিত ২০ হাজার ইলেক্ট্রিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) একযোগে শুরু হয় ভোট গণনা।
ইভিএম মেশিনে দ্রুতগতিতে ভোট গণনা চলার কারণে আর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই ৭০টি আসনের চূড়ান্ত ফলাফল এসে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
** আম আদমির জয়ে দিল্লিতে ঝাড়ু সঙ্কট!
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৫
