ঢাকা: সারদা কাণ্ডে সিবিআই (কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা) তলবে হাজিরা দেয়ার পর থেকেই রহস্যময় নীরবতা বজায় রেখে চলেছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ম্যান মুকুল রায়।
আর এ সময়ই যেন একটু একটু করে তার দূরত্ব বেড়ে যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতার বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
শনিবার কলকাতার কালীঘাটের বাড়িতে তৃণমূলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মুকুলকে একেবারে দলেরর সাধারণ সদস্যের স্তরে নামিয়ে আনেন দলীয় নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
বৈঠকে মমতা অনেকটা স্পষ্টই বুঝিয়ে দিলেন, মুকুলের সঙ্গে দলের আর কোনো সম্পর্ক নেই। বৈঠকেই ২১ জনের সমন্বয়ে গঠিত হয় দলের নতুন জাতীয় কর্মসমিতি। তাতেও নাম নেই মুকুলের।
সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হয়েছেন মমতার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সুব্রত বক্সী।
এর আগে মাত্র এক সপ্তাহ আগেই এই সুব্রত বক্সীকেই মুকুলের পাশাপাশি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিলো। তখনই বোঝা গিয়েছিলো সামনে মুকুলের সামনে দুর্দিন। কিন্তু এত দ্রুত যে তার ডানা চূড়ান্তভাবে ছেটে দেবেন মমতা তা যেন ছিলো মুকুল রায়ের কল্পনারও অতীত।
অবশ্য ঝানু রাজনীতিক মুকুল রায় তারপরও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে সংযত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘দল যা ভালো বুঝেছে তাই করেছে। আমার কোনো মন্তব্য নেই। ’ তবে জানিয়েছেন সময়ই বলে দেবে এই সিদ্ধান্ত সঠিক না বেঠিক।
অবশ্য লড়াইয়ের ময়দান এখনই না ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে নিজের সম্পর্কে তিনি বলেছেন, আমি এত তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে যাওয়ার মানুষ নই।
১৯৯৭ সালে যখন তার হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম হয় তখন দলের নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও দলের সাধারণ সদস্যও ছিলেন না। সদস্য হন পরে। সেই দল তার সঙ্গে এই আচরণ করবে তা যেন ছিলো মুকুলের কল্পনারও অতীত।
এদিকে শনিবার দলীয় বৈঠকে মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন দল-বিরোধী কর্মকাণ্ড কিছুতেই বরদাস্ত করবেন না তিনি।
মমতা বলেন, দলকে বেকায়দায় ফেলার জন্য কেউ কেউ প্রকাশ্যে নানা মন্তব্য করেছে। যারা দল ভাঙ্গার চেষ্টা করছে তারা সফল হবে না। দলের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র তৃণমূল বরদাস্ত করবে না।
তৃণমূলের নবগঠিত জাতীয় কর্মসমিতিতে একমাত্র সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সীই। চেয়ারপার্সন মমতা বন্দোপাধ্যায়। ভাইস চেয়ারম্যান দীনেশ ত্রিবেদী এবং সুলতান আহমেদ। চারজন যুগ্ম মহাসচিব ডেরেক ও ব্রায়েন, শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিম এবং কাকলি ঘোষ দস্তিদার। ট্রেজারার তমোনাশ ঘোষ।
জানা গেছে, এই কমিটিই এখন থেকে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দলের তরফে যোগাযোগ রাখবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৯ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৫