ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

বিশ্ব শান্তির জন্য ইরান বড় হুমকি: মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৫
বিশ্ব শান্তির জন্য ইরান বড় হুমকি: মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহু

ঢাকা: বিশ্ব শান্তির জন্য ইরানকে হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

মার্কিন রিপাবলিকান পার্টির আমন্ত্রণে মঙ্গলবার (৩ মার্চ)  মার্কিন কংগ্রেসে বক্তব্য রাখার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।



ইরান-মার্কিন পরমাণু আলোচনা দেশটিকে থামানোর চেয়ে আরো বেশি প্রশ্রয় দেবে উল্লেখ করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইরানের সন্ত্রাসী, দালালরা গাজা, লেবাননে সহিংসতা ছড়াচ্ছে। ইরানের সমর্থনেই সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সেখানকার অধিবাসীদের হত্যা করছে। শিয়া মিলিশিয়ারা ইরাকে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে ওই দেশটির সমর্থনেই। শুধু তাই না, লোহিত সাগরীয় অঞ্চলের অস্থিরতা এই ইরানের কারণেই।

তিনি বলেন, গত সপ্তাহে শুরু হওয়া যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনা চলাকালেও তারা হরমুজ প্রণালীতে একটি মার্কিন বিমানে হামলা করেছে। গত ছত্রিশ বছর ধরেই ইরান এভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আসছে।

তিনি বলেন, কয়েক ডজন মার্কিন নাগরিক তেহরানে বন্দি হয়ে আছেন। বৈরুতে শত শত মার্কিন সেনা হত্যা করেছে এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। এছাড়া ইরাক ও আফগানিস্তানে হাজার হাজার মার্কিন নারী-পুরুষ হতাহতের জন্যও ইরান দায়ী।

নেতানিয়াহু বলেন, ইরানের এই সন্ত্রাস রুখতে আমাদের সবাইকে একসারিতে দাঁড়াতে হবে।

ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে ইরানের অবস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, আইএসআইএস এর বিরুদ্ধে ইরানের যুদ্ধ তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু করে দিতে পারে না। ইরান ও আইএস প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেন, উভয় পক্ষই ইসলামিক জঙ্গিবাদের মুকুটের জন্য লড়ছে। উভয়ই প্রথমে আঞ্চলিক এবং পরে বিশ্বজুড়ে ইসলামি জঙ্গিবাদের সাম্রাজ্য কায়েম করতে চায়।

নেতানিয়াহু বলেন, এই চুক্তিতে ইরানের পরমাণু বোমা তৈরির কর্মসূচি সমান্যতমও বন্ধ করা যাবে না। হয়তো কর্মসূচিতে কিছুটা ভাটা পড়বে কিন্তু কিছুতেই তা বন্ধ হবে না।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলার ইচ্ছে তার নেই কিন্তু ইরান ইস্যু বৈশ্বিক। ইসরায়েলের জাতীয় নির্বাচনের ঠিক দু’সপ্তাহ আগে নেতানিয়াহু এ বক্তব্য দিলেন।

চলতি মাসেই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থামাতে এবং এর সূত্র ধরে দেশটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে চলমান আলোচনা একটা সমাধানে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এদিকে হোয়াইট হাউজের সাথে কোনো আলোচনা না করেই ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে এভাবে কংগ্রেসে বক্তব্য দিতে আমন্ত্রণ জানানোয় নাখোশ হয়ে আছে ওবামা প্রশাসন। চলতি সফরে ওবামার সাক্ষাতও পাচ্ছেন না নেতানিয়াহু।

পাশাপাশি নেতানিয়াহুর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এতে নতুন কিছু খুঁজে পাননি উল্লেখ করে বারাক ওবামা বলেছেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী কোনো বিকল্প প্রস্তাব দেননি।

বেশ কিছুদিন ধরেই নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিনিময়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধের ব্যাপারে একটা সমাধানে পৌঁছাতে চাইছে ছয় জাতি ব্লক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং চীন। তবে ইরান সবসময়ই তার পরমাণু কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ বলে অভিহিত করে আসছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এ পরমাণু চুক্তির বিষয়ে আলোচনার ব্যাপারেও আগ্রহ দেখিয়ে আসছে দেশটি।

তবে ইরানের সঙ্গে যে কোনো চুক্তির বিরোধিতা করে নেতানিয়াহু কংগ্রেসে তার বক্তব্যে বলেন, নেতিবাচক চুক্তির চেয়ে কোনো চুক্তি না হওয়াই ভালো। চলমান আলোচনার প্রেক্ষিতে যে চুক্তি হতে চলেছে, তা খুবই নেতিবাচক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।