ঢাকা: ভেনিজুয়েলাকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি ঘোষণা করে নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এছাড়া দেশটির সাতজন কর্মকর্তার ওপর জারি করা হয়েছে ভ্রমণ ও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জোশ আরনেস্ট সোমবার এক বিবৃতিতে বলেন, ভেনিজুয়েলার জনগণের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত এবং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ভেনিজুয়েলার বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তাদের যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানাবে না। তাদের সম্পদ জব্দ এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থা ব্যবহারের পথ বন্ধ করা হবে।
এদিকে মার্কিন এ নিষেধাজ্ঞার তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ভেনিজুয়েলা। দেশটির প্রয়াত বিপ্লবী নেতা হুগো শ্যাভেজের উত্তরসূরী বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন তার সমাজতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করাই মার্কিন এ পদক্ষেপের উদ্দেশ্য।
বারাক ওবামাকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী অভিজাত শ্রেণীর প্রতিভূ আখ্যা দিয়ে ভেনিজুয়েলার জাতীয় টেলিভিশনে বক্তৃতায় মাদুরো বলেন, তার সরকারকে পরাজিত করতে এবং ভেনিজুয়েলাকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ভেনিজুয়েলার অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছেন।
তবে হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, যারা গণতান্ত্রিক পন্থা এবং প্রতিষ্ঠানকে অবজ্ঞা করেছে, সহিংসতা সংঘটন করেছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করেছে মার্কিন এ নিষেধাজ্ঞা তাদের উদ্দেশে।
এছাড়া ভেনিজুয়েলার প্রতি ছাত্রসহ সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি ভেনিজুয়েলার অভ্যন্তরীণ সমস্যার জন্য সবসময় যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করার প্রবণতার বিরুদ্ধেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে হোয়াইট হাউজ।
এ ব্যাপারে মুখপাত্র জোশ আর্নেস্ট বলেন, আমরা প্রায়ই দেখি যে ভেনিজুয়েলার সরকার তাদের সমস্যার থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অন্যান্য দেশকে দায়ী করে আসছে।
গত ডিসেম্বরের পর থেকে ভেনিজুয়েলার ওপর এ নিয়ে তৃতীয় দফায় অবরোধ আরোপ করলো যুক্তরাষ্ট্র।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা উল্টো ভেনিজুয়েলায় মার্কিন বিরোধী মনোভাব উস্কে দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের কারাকাস প্রতিনিধি ভার্জিনিয়া লোপেজ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞাকে ভুল হিসেবেই দেখছেন অনেকে।
অনেকের ধারণা এই পদক্ষেপ হুগো শ্যাভেজের সমর্থকদের মধ্যে শক্ত যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী মনোভাব তৈরি করবে, যারা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেয়ার ব্যর্থতায় বর্তমানে মাদুরো সরকারের প্রতিও বিরক্ত হয়ে পড়েছিলো। এর ফলে মাদুরো সরকারের সমর্থনের পাল্লা নতুন করে বৃদ্ধি পেলো।
বাংলাদেশ সময়: ১০১১ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৫