ঢাকা: ওষুধ খেলেই জন্ম নেবে পুত্র সন্তান। এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভারতের যোগগুরু রামদেব একটি ওষুধ বিক্রি করছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) রাজ্যসভার অধিবেশনে ‘পুত্রজীবক বীজ’ বিক্রির বিষয় উত্থাপিত হলে তুমুল হইচই পড়ে যায়। বিরোধী দলের এমপিরা ওষুধটি বিক্রির জন্য রামদেবের ‘দিব্যা ফার্মেসি’কে অভিযুক্ত করেন।
এমপিরা ওষুধটির বিক্রিকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক উল্লেখ করে এর উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
রাজ্যসভার অধিবেশনে কে সি ত্যাগী ‘পুত্রজীবক বীজ’র একটি প্যাকেট সবাইকে দেখিয়ে বলেন, পুত্রসন্তানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই ওষুধ রামদেবের দিব্যা ফার্মেসি থেকে বিক্রি করা হচ্ছে।
এসময় ১৪ এপ্রিল দিব্যা ফার্মেসি থেকে ওষুধটি বিক্রির একটি রসিদও সবাইকে দেখান ত্যাগি। তিনি বলেন, হরিয়ানার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের (রামদেব) এই ওষুধ বিক্রি অবৈধ ও অসাংবিধানিক।
রামদেবের নাম উল্লেখ না করলেও ত্যাগি প্রশ্ন করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রগতিশীল নেতৃত্বের সরকার তাকে কি এই ওষুধ বিক্রির অনুমতি দিয়েছে?
এই হইচইয়ের মধ্যেই জয়া বচ্চন একটি প্যাকেট স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডার হাতে তুলে দেন।
এমপিদের তরফ থেকে ওষুধটি শিগগির নিষিদ্ধ ও বিক্রেতা সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবির প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, এটা সরকারের আয়ুষ মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। তবে, সরকার বিষয়টি দেখবে এবং যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। বিষয়টি গুরুতর, আমার হাতেও একটি প্যাকেট এসেছে।
লিঙ্গ বৈষম্যের ব্যাপারে বিজেপির সরকার অনেক বেশি সচেতন উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে ‘বেটি বাচাও, বেটি পড়াও’ প্রচারণা পর্যবেক্ষণ করছেন। কন্যা সন্তানের ব্যাপারে ওষুধটির নেতিবাচক প্রভাব খতিয়ে দেখবে সরকার।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, হরিয়ানায় দিনের পর দিন মেয়ে সন্তানের সংখ্যা কমছে। কন্যাভ্রূণ হত্যা রোধ ও সামগ্রিকভাবে কন্যা সন্তানের সুরক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তার স্বপ্নের প্রকল্পের সূচনার জন্য প্রথমেই বেছে নেন হরিয়ানাকই। সে রাজ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে মনোনয়ন দেন যোগগুরু রামদেবকেই। অথচ সেই রামদেবই পুত্র সন্তান লাভের জন্য নারীদের মধ্যে ‘ওষুধ’ বিক্রিতে অভিযুক্ত হলেন!
চন্ডিগড় ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে দিব্যা ফার্মেসির বিভিন্ন আউটলেট ঘুরে দেখা যায়, ওষুধটি পুত্র সন্তান লাভের নাম করেই বিক্রি হচ্ছে। ২০০ গ্রাম ‘পুত্রজীবক বীজ’র দাম রাখা হচ্ছে ৩০ রুপি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৫
এইচএ