ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সিঙ্গাপুরে ‘মার্স’ সতর্কতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৮ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৫
সিঙ্গাপুরে ‘মার্স’ সতর্কতা ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সিঙ্গপুরে ‘মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রম (মার্স)’ আক্রান্ত প্রথম রোগী সনাক্ত হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র উল্লেখ করে এ ভাইরাসের সংক্রমণের ব্যাপারে জনসাধারণকে সতর্ক করে দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লী সেইন লুং।

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) ট্যান টক সেং হাসপাতালে (টিটিএসএইচ) সস্ত্রীক পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি সিঙ্গাপুরবাসীকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান।



সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ফেরা এক রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তার মধ্যে মার্স সংক্রমণের লক্ষণ পাওয়ায় ৪৮ ঘণ্টা নিবীড় পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে লী সেইন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে জন্ম নেওয়া ‘মার্স’ এখন দক্ষিণ কোরিয়াতেও সংক্রমিত হতে শুরু করেছে। আমাদের এখানে প্রথম রোগী সনাক্ত হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

লী বলেন, প্রতিমাসে ৪০ হাজার পর্যটক আমাদের এখানে আসেন। সেই সঙ্গে ছুটির মাস, যেমন জুনে সিঙ্গাপুরের অনেক পরিবারই ছুটি কাটাতে দক্ষিণ কোরিয়া বেড়াতে যান।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, মার্স আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য এরই মধ্যে ট্যান টক সেং হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশের অন্য কোনো হাসপাতালে এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হলেও তাকে এই হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ট্যান টক সেং হাসপাতালে মার্স সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসার জন্য মূল ভবন থেকে দূরে তবে সহজে যোগাযোগ করা যায়, এমন একটি আলাদা ভবনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মার্স আক্রান্ত রোগীদের সেবা দানকারী চিকিৎসক ও সেবিকাদের জন্য বিশেষ পোশাকেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে, মার্স সংক্রমণের আশঙ্কায় দুই সন্দেহভাজন রোগীকে পরীক্ষা করছে হংকং। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) দেশটির কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

ওই দুই রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া ক্লিনিকটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন দুই রোগী সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া সফর করে ফিরেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (০৯ জুন) প্রাণঘাতী মিডল ইস্ট রেসপাইরেটরি সিনড্রোম বা মার্সের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে হংকংয়ের নাগরিকদের দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণের ওপর সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে দেশটির সরকার।

অন্যদিকে, দক্ষিণ কোরিয়ায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মার্স ভাইরাসের সংক্রমণে ১০ জনের মৃত্যুর খবর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া একশ’ ২২ জন সংক্রমিত রোগী সনাক্ত হয়েছে বলে দেশটির স্বাস্থ্য অধিদফতরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

সংক্রমণের আশঙ্কায় সন্দেহজনক আড়াই হাজারের বেশি মানুষকে ‘সঙ্গরোধ’ (অন্যের সংস্পর্শ থেকে পৃথক করে রাখা) করে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ‘সঙ্গরোধ’ করে রাখাদের সেলফোন ট্র্যাক করারও পরিকল্পনা নিয়েছে সিউল প্রশাসন।

মার্স ভাইরাসের সংক্রমণে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ২০১২ সালের জুন মাসে সৌদি আরবে।

মার্স নামের এই আরএনএ ভাইরাসের সংক্রমণের প্রাথমিক উপসর্গ জ্বর আসা ও শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হওয়া। উপসর্গ দেখে প্রথমে মনে হবে, সাধারণ ঠাণ্ডা-সর্দির কারণেই এমনটা হচ্ছে। কিন্তু দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হলে পরবর্তীতে নিউমোনিয়া ও কিডনি বিকল হয়ে পড়ে রোগীর।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ২০১২ সালে সনাক্তের পর এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে এক হাজার দুইশ ৭১ জন মার্স আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে চারশ ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, মার্স ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর শঙ্কা আগের চেয়ে ৩৮ ভাগ বেড়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৭ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৫/ আপডেট: ১৫৪৬ ঘণ্টা
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।