ঢাকা, বুধবার, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৫ রবিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

তুরস্কে পিকেকে বিদ্রোহীদের হামলায় ১৫ সৈন্য নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৫
তুরস্কে পিকেকে বিদ্রোহীদের হামলায় ১৫ সৈন্য নিহত ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) বিদ্রোহীদের অতর্কিত বোমা হামলায় সেনাবাহিনীর অন্তত ১৫ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ‍আরও কিছু সৈন্য।

হামলার পর সৈন্যদের অস্ত্র-সরঞ্জামও লুটে নিয়েছে বিদ্রোহীরা।

রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের হাকারি প্রদেশের ডাগলিসা গ্রামে সৈন্যদের বহনকারী দু’টি গাড়ি লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়। হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতিও দিয়েছে পিকেকে’র সামরিক শাখা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (এইচপিজি)। হামলায় সেনাবাহিনীর ক্ষয়ক্ষতির কথা জানিয়ে টেলিভিশনে ভাষণ দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়্যব এরদোয়ানও।

এইচপিজির বিবৃতির বরাত স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, হাকারি প্রদেশে বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ডাগলিসা গ্রাম দিয়ে সেনাবাহিনীর দু’টি গাড়ি যাওয়ার সময় তাদের লক্ষ্য করে অতর্কিত কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে গাড়ি দু’টিতে থাকা ১৫ সৈন্য প্রাণ হারান। এরপর বিদ্রোহীরা সৈন্যদের অস্ত্র-বারুদ লুটে নেয়।

এ হামলার খবর পাওয়ার পর কড়া জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, হামলাকারীদের প্রাপ্য চূড়ান্ত জবাব দেওয়া হবে।

প্রেসিডেন্টের ভাষণের পরপরই সন্ধ্যায় হাকারি এলাকায় বিদ্রোহীদের ১২টি চিহ্নিত আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা চালাতে অভিযানে নামে সেনাবাহিনী। তাদের সঙ্গে পাঠানো হয় দু’টি যুদ্ধবিমান। এ অভিযানে নিহত হয় বেশ কিছু বিদ্রোহীও।

অভিযানের পর সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, বিদ্রোহীদের নিরস্ত্র করে তুরস্কের মাটি থেকে না হটানো পর্যন্ত সরকারি বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের হামলা-পাল্টা হামলার প্রেক্ষিতে বেশ ক’টি শহরে কার্ফু জারি করা হয়েছে। শতাধিক জেলাকে ঘোষণা করা হয়েছে ‘অস্থায়ী নিরাপত্তা জোন’।

রজব তৈয়্যব এরদোয়ানের সমালোচকরা মনে করেন, গত জুনে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে কুর্দি সমর্থিত দল পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (এইচডিপি) ১৪ শতাংশ ভোট বাগিয়ে নেয়। এর প্রভাবে সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভে ব্যর্থ হয় এরদোয়ানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি)। একেপির মতো কোনো দলই সংসদ গঠনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এবং কোনো জোট গঠন না হওয়ায় আগামী নভেম্বরে আবার নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘পিকেকে-নীতিতে নিশ্চুপ’ এইচডিপির সমর্থন কমানোর কৌশল হিসেবেই প্রেসিডেন্ট ‘বিদ্রোহী ও সেনাবাহিনী নিয়ে রাজনীতি’ করছেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ২০১৩ সালে সরকার ও পিকেকে বিদ্রোহীদের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত শান্তিচুক্তি হলেও দু’পক্ষের ভুল বোঝাবুঝিতে গত জুলাইয়ে সে চুক্তি ভেস্তে যায়। এরপরই ইরাকে পিকেকে বিদ্রোহীদের আস্তানায় অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আসছে পিকেকে বিদ্রোহীরাও। জুলাইয়ের পর থেকে তাদের হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর ৭০ সদস্য নিহত হয়েছেন। আর ১৯৮৪ সালে পিকেকে’র সশস্ত্র লড়াই শুরু হওয়ার পর তাদের হামলায় এ পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৫
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।