ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬ রবিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

আয়লানই শেষ নয়, সমুদ্রে সমাধি আরও ৭০ শিশুর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
আয়লানই শেষ নয়, সমুদ্রে সমাধি আরও ৭০ শিশুর ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আয়লান কুর্দি। কোনো ঘূর্ণিঝড় বা ভূমিকম্প কিংবা উল্কাপিণ্ডের নাম নয় এটি।

তবু এ নামেই চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় দিনে কেঁপে উঠেছিল পুরো বিশ্ব। এখনও মানুষের মন থেকে মুছে যায়নি নামটি। এরই মধ্যে জানা গেল, তিন বছর বয়সী আয়লান কুর্দিই শুধু নয়, ঝুঁকিপূর্ণভাবে ইউরোপ পাড়ি জমাতে গিয়ে এরপর আরও সত্তরটির বেশি শিশুর প্রাণ গেছে সাগরগর্ভে।

বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বেসরকারি শিশু সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন। এ সময় জানানো হয়, দিন দিন এজিয়ান সাগর প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে।

বিবৃতিটির আগের দিনই, বুধবার (২৮ অক্টোবর) এজিয়ান সাগরে গ্রিক উপকূলের কাছে একটি কাঠের নৌকা ডুবে নিখোঁজ হয়েছেন অন্তত ৩৪ জন। এদের মধ্যে পাঁচ শিশুও রয়েছে।

সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, ২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত তুরস্ক থেকে গ্রিস পাড়ি দেওয়ার সময় সাগরে ডুবে ৬৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বুধবারের নৌকাডুবির ঘটনায়ও নিখোঁজ পাঁচ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

২ সেপ্টেম্বর তুরস্কের পূর্বাঞ্চলীয় সমুদ্র সৈকত থেকে উদ্ধার করা হয় আয়লানের মৃতদেহ। গত ১ সেপ্টেম্বর ১২ সিরীয় ইউরোপ পাড়ি জমাতে তুরস্কের বোদরাম উপদ্বীপ থেকে গ্রিসের এজিয়ান দ্বীপের উদ্দেশে দু’টো নৌকায় চেপে রওয়ানা হয়। এই ১২ জনের মধ্যে বাবা মা আর ভাইয়ের সঙ্গে আইলানও ছিল। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ আর বৈরী আবহাওয়া তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছাতে দেয়নি। মায়ের কোল থেকে আয়লান ও তার ভাইকে যেন ছিনিয়ে নিল সমুদ্র। ভাসিয়ে নিল তুরস্কের সৈকতে। আর তার মা ভেসে গেলেন দূরের অন্য এক সৈকতে।

তুর্কি সংবাদসংস্থা দোগান’র (ডিএইচএ) ফটো-সাংবাদিক নিলুফার দেমির সৈকতে আয়লান কুর্দির মুখ থুবড়ে পড়ে থাকার দৃশ্য তার ক্যামেরায় ধারণ করেন। তারপর সংবাদমাধ্যমে তা প্রকাশ হলে দুনিয়াজুড়ে সৃষ্টি হয় আলোড়ন।

গ্রিক দ্বীপ লেসবসে সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মী ও’সুলিভান বলেছেন, অভিবাসন প্রত্যাশীদের ইউরোপ পাড়ি জমাতে নিরাপদ ও বৈধ রুটের ব্যবস্থা করাই এ সংকট নিরসনের একমাত্র সমাধান। এ ব্যবস্থা করলেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগড় পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা থেকে মানুষকে বিরত রাখা যাবে।

তিনি বলেন, পিচাবোর্ডের ওপর শিশুদের আমরা কাদায় মাখামাখি হয়ে ঘুমিয়ে থাকতে দেখেছি। তাদের নীল ঠোঁট আর হাত আমাদেরকে দেখতে হয়েছে। শীত আসছে, এখনই ব্যবস্থা নেওয়া না গেলে অভিবাসন প্রত্যাশী শিশুদের মৃত্যুর হার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৫
আরএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।