ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার মেয়ররা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৭
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার মেয়ররা স্বদেশে-বিদেশে সমালোচনায় পুড়ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন ছোট-বড় শহরগুলোর মেয়ররা। ট্রাম্প নিজের বহুল পরিকল্পিত অভিবাসন নীতি সংস্কারে সহযোগিতা না করলে নগরগুলোকে অর্থ যোগান দেওয়া হবে না জানিয়ে আদেশ জারির পরও তার বিরুদ্ধে এ প্রতিবাদ চলছে।

নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, বোস্টন, টেক্সাস, নিউ হ্যাভেন, সাইরাক্রজ ও অস্টিনের মতো শহরগুলোর মেয়ররা ট্রাম্পের আদেশের জবাবে উল্টো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট এ ধরনের অবস্থানে চলে গেলে তারাও সমানভাবে লড়াই করবেন।

কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্ক নগরীর মেয়র বিল ডে ব্লাসিও বলেন, “আমরা আমাদের জনগণকে সুরক্ষা দিতে সব রকমের পদক্ষেপ নেবো।

তারা কোথা থেকে এলো বা তাদের ধর্ম কী সেটা দেখা আমাদের বিবেচ্য নয়। ”

আর শিকাগোর মেয়র রাম এমানুয়েল ঘোষণা দেন, “আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই; আমরা একটি নিরাপদ শহরে থাকছি। আমাদের মধ্যে কোনো অপরিচিত নেই। ”

তিনি নগরবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, “তুমি যদি আমেরিকা গড়ার স্বপ্ন দেখো তবে স্বাগত, তুমি কি পোল্যান্ড না পাকিস্তান থেকে এলে, নাকি আয়ারল্যান্ড, ইন্ডিয়া বা ইসরায়েল থেকে এলে, নাকি মেক্সিকো বা মলদোভা থেকে এলে, অথবা তোমার দাদা-নানারা কোথা থেকে এসেছেন তা আমেরিকানদের কাছে বিবেচ্য নয়। ” 

অনুমোদন ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অভিবাসীদের আটক করে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে ট্রাম্প সম্প্রতি ওই আদেশ জারি করেন। তার জবাবে ক’দিন ধরে শহরগুলোর মেয়র ও কর্মকর্তারা এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে আসছেন।  

তাদের এই জবাবের মধ্যেই শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) অভিবাসন বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন ট্রাম্প। সেই আদেশের আওতায় মার্কিন মুলুকে যেকোনো ধরনের শরণার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকবে আগামী ৪ মাস। আর সিরিয়ার ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত। ট্রাম্প তার আদেশে সিরিয়া ছাড়াও মুসলিমপ্রধান আরও ৬টি দেশের ভিজিটর বা দর্শনার্থী প্রবেশ পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছেন ৩ মাসের জন্য। সে ৬টি দেশ হলো ইরাক, ইরান, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া ও সুদান।  

কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রমে বাধ্য করতে ট্রাম্পের ওই আদেশ জারির পর সান ফ্রান্সিসকোর মেয়র এড লি আরেক শহর ওকল্যান্ডের মেয়র  লিবি স্কফের সঙ্গে যৌথভাবে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, “আমরা কোনো হুমকি বা রাজনৈতিক প্রভাবে আত্মসমর্পণ করবো না। আজ এই উপসাগরীয় এলাকা সত্যিকারার্থে আমাদের অংশগ্রহণমূলক মূল্যবোধ, সমবেদনা ও সমতার প্রশ্নে এক সারিতে দাঁড়িয়েছি। আমরা আমাদের বাসিন্দা, শহর ও দেশকে বিভাবিজত করার যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। ”

বোস্টনের মেয়র মার্টিন জে ওয়ালশ বলেছেন সবচেয়ে কড়া কথা, “আজ যারা হুমকিবোধ করছো, বিপদ শঙ্কায় ভুগছো তোমরা বোস্টনে নিরাপদ। তোমাদের সুরক্ষিত রাখতে আমরা সাধ্যের মধ্যে সবকিছু করবো। প্রয়োজনে আমরা নগর হলকে তোমাদের আশ্রয়কেন্দ্র বানাবো। ”

এমনকি নিজের অফিসকেও অভিবাসীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র বানানোর কথা বলেন ওয়ালশ। বোস্টন মেয়র বলেন, “তারা আমার অফিস ব্যবহার করতে পারে, এই ভবনের যেকোনো অফিস তারা ব্যবহার করতে পারে। তারা এই ভবনকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল ভাবতে পারে। ”

এদিকে ট্রাম্পের ওই আদেশ জারির পর ক্যালিফোনিয়ার সিনেটরদের একটি দল জানিয়েছে, তারা সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডারের সঙ্গে আলাপ করে আদালতে আশ্রয় নেবেন। তারা মনে করেন, স্থানীয় সরকারকে প্রভাবিত করতে ট্রাম্পের এই আদেশ সংবিধানের ১০ম সংশোধনীর লঙ্ঘন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৭
এইচএ/

আরও পড়ুন
** অভিবাসী প্রবেশে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা অবৈধ

** শরণার্থী নিষেধাজ্ঞায় ট্রাম্পের সমালোচনা জুকারবার্গের
** শরণার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ
** বাংলাদেশিদের যুক্তরাষ্ট্র না ছাড়ার পরামর্শ আইনজীবীদের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।