ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ফের ইরানের প্রেসিডেন্ট হলেন ‘সংস্কারবাদী’ রুহানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০৯ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৭
ফের ইরানের প্রেসিডেন্ট হলেন ‘সংস্কারবাদী’ রুহানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি

ঢাকা: সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনযাত্রাকে ‘সংস্কার’ করতে থাকা হাসান রুহানির ওপরই ভরসা রাখলো ইরানের জনগণ। তাকে দেশের প্রেসিডেন্ট পদে পুনর্নির্বাচিত করেছে তারা। এর ফলে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে (আগামী চার বছর) মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দেশটির নেতৃত্বে থাকবেন তিনি।

শুক্রবার (১৯ মে) দিনভর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পর শনিবার (২০ মে) দুপুরে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ‘আরআইআইএনএনে’ এ ফলাফল জানানো হয়েছে। এতে বেসরকারিভাবে রুহানিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।

নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ‘জাতীয়তাবাদী ও রক্ষণশীল’ ইব্রাহীম রাইসি।

৫ কোটি ৬০ লাখ ভোটারের মধ্যে অধিকার প্রয়োগ করেন ৪ কোটির কিছু বেশি ভোটার। ভোট গণনার পর প্রাপ্ত ফলাফলে দেখা যায়, রুহানি ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন, অপরদিকে রাইসি পেয়েছেন ৩৯ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট। অবশ্য কিছু এলাকায় এখনও ফল ঘোষণা বাকি থাকলেও সেসব এলাকা রুহানির অনুসারীদের প্রভাবিত।  

আগের খবর
** রুহানি নাকি রাইসি, কে হচ্ছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট?
এ ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রীয় টিভি আরআইআইএনএন রুহানিকে অভিনন্দন জানানো শুরু করলেও নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনেছেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইব্রাহীম রাইসি। তার অভিযোগ, রুহানি বিধিবহির্ভূতভাবে ভোটকেন্দ্রগুলোতে অপপ্রচার চালিয়ে ফলাফল প্রভাবিত করেছেন।

নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা মডারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির প্রার্থী রুহানি এবং কমব্যাট্যান্ট ক্লার্জি অ্যাসোসিয়েশনের প্রার্থী রাইসির মধ্যে হলেও এতে আরও লড়েছিলেন আরেক সংস্কারপন্থি মুস্তাফা হাশেমিতাবা ও রক্ষণশীল মুস্তাফা মিরসালিম। মাঠে ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের সমর্থন পাওয়া সাবেক গোয়েন্দা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা হামিদ বাঘেইও।

পশ্চিমা পর্যবেক্ষকদের মত, কট্টর জাতীয়তাবাদী মাহমুদ আহমাদিনেজাদের পর ক্ষমতায় আসা হাসান রুহানি ইরানকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে সংস্কার করে বিশ্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেছেন। এমনকি তেহরানের রহস্যময় পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করে পশ্চিমাদের সঙ্গে ২০১৫ সালে ঐতিহাসিক চুক্তিও করেছেন। এই ভোটে রুহানি জিতে যাওয়ায় প্রমাণ হয়েছে, ইরানিরা তার সেই সংস্কারের ধারাকে পছন্দ করেছে।

তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইব্রাহীম রাইসি মাঠে নেমেছিলেন ‘সবকিছু বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার’ বিরোধিতাকে প্রধান প্রচারাস্ত্র বানিয়ে। তিনি নির্বাচনী প্রচারণাগুলোতে বলেছিলেন, ‘সমস্যার সমাধানে আমাদের তারুণ্যের হাত ব্যবহারের পরিবর্তে তারা দেশের অর্থনীতি বিদেশিদের হাতে তুলে দিচ্ছে। ’ ‘আধুনিক’ ইরানিরা রাইসির এই রক্ষণশীলতাকে মেনে নেয়নি বলেই ফলাফলে প্রতীয়মান হলো।

ইরান মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম কেন্দ্র রাষ্ট্র হওয়ায় এ নির্বাচনের দিকে নজর ছিল বিশ্ববাসীর। বিশেষত এ অঞ্চলে ভূ-রাজনীতিতে জড়িত যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, তুরস্ক, সৌদি আরব, ইসরায়েল, সিরিয়া স্বভাবতই গভীর নজর রাখছিল ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলের দিকে। হাসান রুহানি নির্বাচিত হওয়ায় স্বভাবতই সুবাতাস বইছে পশ্চিমা বলয়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৭/আপডেট ১৫৫১ ঘণ্টা
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।