ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

গুম হয়ে যাচ্ছে গুপ্তচররা, চীনে অসহায় সিআইএ!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১২ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৭
গুম হয়ে যাচ্ছে গুপ্তচররা, চীনে অসহায় সিআইএ! কারা বিশ্বাসঘাতকতা করছে, সে চিন্তায় গলদঘর্ম সিআইএ’র শীর্ষ পর্যায়

চীনে অচল হয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) গুপ্তচরবৃত্তি। ২০১০ সাল থেকে সেখানে দায়িত্বরত সিআইএ’র গুপ্তচরদের একের পর এক হত্যা বা কারাবন্দি করার মাধ্যমে চীনা কর্তৃপক্ষ এ ‘অর্জন’ দেখিয়ে চলেছে। 

রোববার (২১ মে) প্রকাশিত নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমনই খবর দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমটি বরাত দিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত ১০ বর্তমান বা সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার।

ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, চীনে ২০১০ সাল থেকে সিআইএ’র প্রায় ২০ জন গোয়েন্দা বা গুপ্তচরকে হত্যা বা কারাবন্দি করা হয়েছে। এর ফলে সেখানে সিআইএ’র কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে।

ওই কর্মকর্তারা বলেন, কয়েক দশকের মধ্যে সিআইএ’র অবস্থা এই মুহূর্তে সবচেয়ে বাজে চীনে। এটা প্রভাবশালী মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাটির জন্য বড়সড় ধাক্কাও। যদিও সিআইএ এই প্রতিবেদনের বিষয়ে এখনও কিছু বলেনি। স্বভাবতই গোয়েন্দা কার্যক্রম নিয়ে তাদের মুখ খোলারও কথা নয়।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সিআইএ’র গুপ্তচরদের এভাবে ধরে ধরে হত্যা বা কারাবন্দি চীন কোন সুবিধার জোরে করতে পারছে তা এখনও পরিষ্কার নয় ভার্জিনিয়ার (সিআইএ সদরদফতরস্থল) কাছে। সিআইএ’র কোনো গুপ্তচর বিশ্বাসঘাতকতা করে চীনের কাছে উল্টো তথ্যপাচার করছে কিনা অথবা চীনের গোয়েন্দা প্রযুক্তিবিদরা সিআইএ’র গোপন কার্যক্রমের সিস্টেম হ্যাক করে গুপ্তচরদের চিহ্নিত করে ফেলেছে কিনা—তাও তারা নিশ্চিত হতে পারছে না।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, প্রথম দিকে সরকারি একটি অফিসে এক গুপ্তচরকে চিহ্নিত করার পর তাকে সেই অফিসেরই চত্বরে গুলি করে হত্যা করা হয়। সেটা ছিল হয়তো সিআইএ’র অন্য গুপ্তচরদের জন্য সতর্কতা।

সাবেক দুই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ২০১০ সালের পর ১৮ থেকে ২০ গুপ্তচরকে হত্যা অথবা কারাবন্দি করা হয়েছে। কিন্তু প্রথমে একজনকে জনসম্মুখে হত্যার পর বাকিদের ব্যাপারে কোনো তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এভাবে গুপ্তচর হারাতে থাকার মতো মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষিতে সিআইএ চীনে তাদের বিশ্বাসঘাতক খোঁজা শুরু করেছে। এটা তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি বলে বিবেচিত হচ্ছে এই মুহূর্তে। এই বিশ্বাসঘাতক চিহ্নিত করার জন্য বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসের কর্মীদের ওপরও গভীর নজরদারি চালানো হচ্ছে। কারও কারও অতীত ইতিহাস-বর্তমান চলাফেরাও যাচাই-বাচাই করা হচ্ছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি জানাচ্ছে, সিআইএ’র কার্যক্রমে এভাবে মারাত্মক ধাক্কার বিষয়টি তদন্তে যোগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্ত অধিদফতরও (এফবিআই)। দু’টি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থাই যৌথভাবে এখন চীনে চলমান সব অভিযান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। একইসঙ্গে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম খোঁজখবর নিচ্ছে।

তবে ফলাফল কী দাঁড়াবে সেটা এখনই বলা না গেলেও চীন যে সহসা তাদের মাটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবে না, সেটা স্পষ্টতই অনুমান করা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।