ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বিশ্ব নেতাদের সহায়তার আশ্বাস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বিশ্ব নেতাদের সহায়তার আশ্বাস ডি-৮ সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের নেতারা

উন্নয়নশীল আটটি দেশের সংগঠন ডি-৮’র নবম সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তারা প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের পাশে থাকার। তবে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাবে কীভাবে তা নিয়ে কোনো কার্যকর বক্তব্য উঠে আসেনি।

তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে দুইদিনের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। এতে উঠে এসেছে রোহিঙ্গাদের কীভাবে তাদের রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে।

তাদের দুঃখ, দুর্দশার কথা।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান বলেছেন, সমস্যার একটি সমাধান চাই। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য যা করছে তা প্রশংসনীয়।

তিনি মিয়ানমারের রাজনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতিশিলতা কামনা করেন। পাশাপাশি বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠী ও তাদের আশ্রয়দাতা বাংলাদেশের পাশে থাকার ঘোষণা দেন।  

এরদোয়ান অন্তত তিনবার রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আবেগপূর্ণ বক্তব্য রাখেন। প্রতিবারই বাংলাদেশের প্রশংসনীয় ভূমিকা এবং আশ্রয় দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ভূয়সী প্রশংসা করেন। বক্তব্যে রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানতিনি রোহিঙ্গা বোঝা গ্রহণের কথা জানান। আরও জানান, আশ্রয়কেন্দ্র তৈরিতে কাজ করবেন। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরিতেও।

মালয়েশিয়ার ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী জাহিদ হামিদি সম্প্রতি কক্সবাজার সফর করে এসেছেন। তিনি আবারও বিশ্বকে সংকট মোকাবেলায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।  

ইরানের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসহাক জাহাঙ্গীরী সহযোগিতার ধারা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।

সম্মেলনে কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল এই সম্মেলনে অংশ নেয়। নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের নেওয়া রোহিঙ্গা বিষয়ক সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরেন। বলেন, বাংলাদেশ দরজা খুলে দিয়েছে। তাদের সবরকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এই সংকট সমাধানে জাতিসংঘে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেছেন।  

১০০ কোটি মুসলিমের ডি-৮ ভুক্ত আটটি দেশের উন্নয়নের ধীরগতির কথা তুলে ধরে শাহরিয়ার আলম ডি-৮ দেশগুলোর অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের বিষয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, উন্নয়নে বাস্তব ফলাফল নিয়ে আসতে হবে। সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ ও প্রকল্প গ্রহণের নতুন যুগে প্রবেশের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তিনি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং ডি-৮ প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) পূর্ণ বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

সম্মেলনে ডি-৮ ইস্তাম্বুল ঘোষণা ২০১৭ এবং ডি-৮ ইস্তাম্বুল প্ল্যান অব অ্যাকসন ২০১৭ গৃহীত হয়।

প্রতিমন্ত্রী আস্থা প্রকাশ করে বলেন, এই দুটি ডকুমেন্ট বাস্তব ফলাফল ভিত্তিক প্রকল্প ও নীতিপদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে।

প্রতিমন্ত্রী দুটি টিভি ও রেডিওতে সাক্ষাতকার দেন। এতে তিনি আনাদুলু এজেন্সি ও টিআরটি ওয়াল্ডে রোহিঙ্গা সমস্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন, বাংলাদেশ-তুরস্ক সম্পর্ক এবং ডি-৮ সহযোগিতা ও সম্ভাবনা তুলে ধরেন।

সম্মেলনে তুরস্ক, নাইজেরিয়া, আজারবাইজান ও গিনির প্রেসিডেন্ট, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী, ইন্দোনেশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট, মালয়েশিয়ার ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী, ইরানের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বেশিরভাগ সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা যোগ দেন।

তুরস্কের প্রেসিডেন্টের অটোমান প্রসাদে মধ্যাহ্ন ভোজ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্মেলন শেষ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।