ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘ভারতের হস্তক্ষেপ চায়নি মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্ট’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৮
‘ভারতের হস্তক্ষেপ চায়নি মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্ট’ সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করে গায়ের জোরে ক্ষমতা আঁকড়ে আছেন আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম। ছবি-সংগৃহীত

সার্কভুক্ত দক্ষিণ এশীয় দ্বীপদেশ মালদ্বীপে চলমান রাজনৈতিক সংকটে ভারতের হস্তক্ষেপ কামনা করেনি দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

ভারতীয় পত্রত্রিকার এহেন খবরকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে নাকচ করে দিয়েছে সেদেশের ডিপার্টমেন্ট অব জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিজেএ)।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, সোমবার মালদ্বীপের ইংরেজিভাষী দৈনিক সানঅনলাইনে (SunOnline) এসংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করা হয়।

তাতে দাবি করা হয়, মালদ্বীপের সুপ্রিম কোর্ট তাদের দেয়া ১ ফেব্রুয়ারি আদেশ বাস্তবায়নে নয়াদিল্লির সাহায্য ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছে মর্মে  বেশ কিছু ভারতীয় পত্রপত্রিকা প্রতিবেদন ছাপিয়েছে।  

প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুমকে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ প্রতিপালনে বাধ্য করার জন্য নয়াদিল্লির হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয় ভারতীয় পত্রপত্রিকায়।

সোমবার ডিজেএ-র তরফ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতীয় পত্রপত্রিকার এহেন খবরকে ‘সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন’ বলে নাকচ করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ ডিজেএ বা সুপ্রিম কোর্ট কোনো পক্ষ থেকেই নয়াদিল্লির কাছে এরকম কোনো সহায়তা বা হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়নি। ’

উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি সমুদ্রবেষ্টিত ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্রটির সুপ্রিম কোর্ট কারাগারে আটক সকল বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে মুক্তিদান, বিদেশে নির্বাসিত পার্লামেন্ট সদস্যদের বিনা বাধায় দেশে ফিরতে দেয়া এবং প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুমকে  গ্রেফতার করার জন্য এক আদেশ জারি করে।

আদেশে স্বেচ্ছানির্বাসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ এবং সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আদিবসহ বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে আনা ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ ও মামলা’  তুলে নিতে বলা হয়।

কিন্তু দেশটির পুলিশ, সেনাবাহিনী ও সরকার সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশকে অগ্রাহ্য করে রোববার দেশে ফেরা দুই এমপিকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে এবং পার্লামেন্ট অবরোধ করে অধিবেশন অনুষ্ঠানের পথ বন্ধ করে দেয়। এর আগে অ্যাটর্নি জেনারেলও পদত্যাগ করে সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

সংখ্যাগরিষ্ঠ বিরোধী দলীয় সদস্যপুষ্ট সংসদ তার কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। এর ফলে দেশটিতে সাংবিধানিক সংকট ঘনীভূত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম মূলত অসাংবিধানিক পন্থায় গায়ের জোরে ক্ষমতা আঁকড়ে আছেন।

বর্তমান প্রেসিডেন্ট গাইয়ুম-সরকার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, রাষ্ট্রদ্রোহসহ নানা মনগড়া অভিযোগে মামলা দিয়ে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট তাদের আদেশে সরকারের দেয়া এসব মামলাকে ভিত্তিহীন, রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসূত ও অন্যায় মামলা বলে আখ্যা দেয়।

রোববার সুপ্রিম কোর্ট দ্বিতীয় আরেকটি আদেশ জারি করে। নতুন আদেশে সরকারকে ১ ফেব্রুয়ারির আদেশটি বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। ‘আদেশ প্রতিপালনে কোনো আইনগত বাধা নেই’ বলেও নতুন আদেশে গাইয়ুম প্রশাসনকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আদেশের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম। প্রতিক্রিয়ায় তিনি সুপ্রিম কোর্টকে তাদের দেয়া আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়ার আহবান জানিয়েছেন।

কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বলে দিয়েছে, আদেশ প্রতিপালন করা ছাড়া অন্য কোনো পথ প্রেসিডেন্টের সামনে খোলা নেই। আদেশ ‘বাস্তবায়ন করতেই হবে’।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৮

জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।