সিরিয়া নিযুক্ত মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা এসওএইচআর বৃহস্পতিবার এই প্রাণহানির তথ্য দিয়ে বলেছে, এটা স্মরণাতীতের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। লাগাতার হামলায় পঙ্গুত্ব বরণ করেছে বা আহত হয়েছে আরও ২ হাজার ১২০ জন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, রোববার বোমা হামলা শুরুর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আড়াই শতাধিক মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার ভোর না হতেই খবর মেলে ৪০৩ জনের প্রাণহানির, যাদের মধ্যে ১৫০ জনই শিশু এবং বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
ঘুউতার বাসিন্দারা বলছেন, শহরের বেশিরভাগ বাসিন্দাই এখন বাস্তুচ্যুত। এখন তারা না কোথাও নিজেদের লুকোতে পারছেন, না করতে পারছেন অন্য কিছু।
রাফাত আল-আবরাম নামে একজন গাড়ির মেকানিক বলেন, তিনি যে সড়ক দিয়ে তার গ্যারেজে যান, সে সড়ক গত কয়েকদিনের হামলায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। সেজন্য এখন কিছু সরঞ্জাম নিয়ে তিনি এখানে-ওখানে ঘুরে ঘুরে কাজ করেন।
তিনি বলেন, আমার চোখের সামনে দেখলাম মা-বাবারা তাদের সন্তানদের মরদেহ বুকে জড়িয়ে আহাজারি করছেন। তাদের গাড়িতে তুলতে তুলতে অনেক সময় আমিও কান্না থামাতে পারি না। যে পরিস্থিতি দেখতে হচ্ছে, একেবারেই ভয়ানক ও মর্মান্তিক।
নিসমা আল-হাতরি নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, প্রতিদিন সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বাড়ি পরিষ্কার করতে হয়, কারণ পাশের কোনো ভবনে গোলাবর্ষণের কারণে আমাদের বাড়িটাই কংক্রিট বা ভাঙাচোরা আবর্জনায় ভুতুড়ে হয়ে ওঠে। তারপর আমরা কোনো একটি কক্ষে লুকিয়ে থাকি। আসলে আমরা বুঝতে পারছি না, এটা কি একসঙ্গে বাঁচার চেষ্টা, নাকি মরার ফাঁদ!
এসওএইচআর বলছে, ২০১৩ সালে রাসায়নিক অস্ত্রের হামলার পর কয়েকদিনের মধ্যে এতো বেশি বেসামরিক মানুষের মৃত্যু এটাই প্রথম।
সিরিয়ায় জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্টেফান মিস্তুরা এই বিপুলসংখ্যক প্রাণহানিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জরুরি ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পূর্বাঞ্চলীয় ঘুউতা শহরে মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ। সেজন্য লাগাতার বোমা ও গোলাবর্ষণ বন্ধ করতে এখনই যুদ্ধবিরতি দরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮
এইচএ/