নারীদের ওপর নিপীড়নের বিষয়ে বছর তিনেক আগে সতর্ক করা সত্ত্বেও নতুন প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, সিরিয়ার অসহায় নারীদের ওপর নির্যাতন চলছেই। খাবারসহ ত্রাণ সামগ্রীর বিনিময়ে নারীদের যৌন কাজে বাধ্য করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) এর নতুন প্রতিবেদনে সিরীয় নারীদের প্রতি এ হিংস্রতার তথ্য উঠে আসার পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে। ঘৌতা শহরে সিরিয়া ও রাশিয়ার যৌথ বাহিনীর বিমান হামলায় যে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে, সেটিকে বিশ্ব দরবারে আরও জোরদারভাবে তুলে ধরছে এই প্রতিবেদন।
‘ভয়েসেস ফ্রম সিরিয়া-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, খাবার পেতে নারী ও বালিকারা ‘যৌন সেবা’ দিতে ‘ত্রাণকর্মীদের’ সঙ্গে অল্প কিছু সময়ের জন্য বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেন। কোথাও বিতরণকারীরা ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার নামে নারী ও কন্যা শিশুদের ফোন নাম্বার নিয়েছেন। তাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার বিনিময়ে ‘কিছু না কিছু’ আদায় করে ছাড়ছেন। অনেক নারীকে ত্রাণ দেওয়ার বিনিময়ে তার সঙ্গে বাড়ি যাওয়া, বিতরণকারীদের সঙ্গে একটা রাত কাটানোর মতো ঘটনাও ঘটছে।
যদিও জাতিসংঘ ও দাতব্য সংস্থাগুলো দাবি করছে ‘যৌন নিপীড়নের’ বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ‘শূন্য সহনশীলতা’র পর্যায়ে। যদি আঞ্চলিক অংশীদার সংগঠনগুলোর কেউ এ ধরনের নিপীড়নে যুক্ত হয়েও যায়, তবে এসব বিষয়ে তারা অবগত নয়।
সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো তৃতীয় পক্ষের ভাড়া করা লোকজনের মাধ্যমে বিপর্যয়স্থলে ত্রাণ বিতরণ করে থাকে।
ইউএনএফপিএ’র প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ত্রাণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে নারীদের ওপর নির্যাতন এতোটাই মারাত্মক আকার নিয়েছে যে, অনেক সিরীয় নারী এখন আর বিতরণ কেন্দ্রে যেতে চান না। কারণ স্বজন বা অন্যদের মনে এটা ঢুকে গেছে যে, ত্রাণ বাড়িতে আনার অর্থ হলো শরীর বেচে এসেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিরিয়ার ময়দানে তৎপর একজন ত্রাণ কর্মী দাবি করেন, কিছু মানবিক সহায়তা সংস্থা তাদের তৃতীয় পক্ষ ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের এ ধরনের নিপীড়নের বিষয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। কারণ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সহায়তা নিয়ে স্থানীয় তৃতীয় পক্ষ ছাড়া আন্তর্জাতিক কর্মীদের প্রবেশাধিকার নেই।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৮
এমইউএম/এইচএ/