ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ফ্রান্সের জিম্মি উদ্ধারকারী পুলিশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৮
মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ফ্রান্সের জিম্মি উদ্ধারকারী পুলিশ লে. কর্নেল আর্নদ বেলত্রেম। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: ফ্রান্সের ত্রেবেসে সুপার মার্কেটে সৃষ্টি হওয়া জিম্মি সংকট সামাল দিতে যেয়ে এক গুলিবিদ্ধ ফরাসি পুলিশ অফিসার মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। জিম্মিকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার বদলে নিজেকে হামলাকারীর হাতে তুলে দিতে চেয়েছিলেন এ সাহসী অফিসার।

শনিবার (২৪ মার্চ) ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রোর এক বিবৃতির বরাত দিয়ে এ খবর জানায় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। গুলিবিদ্ধ ওই পুলিশ সদস্যের নাম লে. কর্নেল আর্নো বেলত্রেমে।

তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

খবরে বলা হয়, হামলাকারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম রিদওয়ান লাকদিম। নিজেকে জঙ্গি সংগঠন ইসলামি স্টেটসের সদস্য বলে দাবি করে আসছেন ২৫ বছর বয়সী এ যুবক। পুলিশের পাল্টা হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন।  

ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে জানা যায়, লাকদিম মরোক্কোর নাগরিক। ২০১১ সালে অস্ত্র বহন ও ২০১৫ সালে মাদকের অপব্যবহারের অপরাধে তাকে দোষী করা হয়। এদিকে লাকদিমের সঙ্গী সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

হামলাকারীর গুলিতে তিনজন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। সুপার র্মাকেটে অবস্থানরত ব্যক্তিদের জিম্মি করে ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর প্যারিস হামলায় প্রধান অভিযুক্ত সালাহ আবদেসলামের মুক্তি দাবি করছিলেন হামলাকারী।

ফরাসি পুলিশের তদন্তে জানা যায়, শুক্রবার (২৩ মার্চ) সকালে লাকদিম কার্কাসোনি থেকে একটি গাড়ি ছিনতাই করেন। গাড়ির আরোহীকে খুন করে একটি বাসের ভিতর লুকিয়ে রাখেন এবং চালককে মারাত্মক জখম করেন। এরপর লাকদিম মর্নিং ওয়াক করতে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে গুলি করে জখম করে।

পুলিশের ধারণা মতে, এরপর কয়েক কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে তিনি ত্রেবেসে প্রবেশ করেন এবং ‘সুপার-ইউ’ নামে ওই সুপার মার্কেটে প্রবেশ করেন।  

প্রত্যক্ষদর্শীদের মাধ্যমে জানা যায়, কাউকে জিম্মি করার আগেই দু’জনকে গুলি করে হত্যা করেন লাকদিম। এদেরমধ্যে একজন কাস্টমার, অপরজন ওই স্টোরের কর্মচারী। গুলির শব্দে আতংকে অনেকে মার্কেটের কোল্ড রুমে গিয়ে লুকান।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরার কয়োম এক বিবৃতিতে জানান, হামলাকারীর হাত থেকে কয়েকজন জিম্মিকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয় পুলিশ। কিন্তু একজন নারীকে মানব বর্ম হিসেবে ব্যবহার করছিলেন লাকদিম।  

এসময় ৪৫ বছর বয়সী পুলিশ অফিসার বেলত্রেমে এগিয়ে আসেন। তিনি লাকদিমকে অনুরোধ করেন তাকে যেন জিম্মি হিসেবে নেওয়া হয় এবং বদলে যেন ওই নারীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কথাবার্তা চলার সময় হামলাকারীর অসতর্কতার সুযোগে জিম্মিকে মুক্ত করার প্রচেষ্টা চালালে দু'জনই গুলিবিদ্ধ হন।  

বাইরে থকে পুলিশ কয়েকটি গুলির আওয়াজ শুনতে পায়। দ্রুত মার্কেটের ভেতর ছুটে গেলে দেখা যায়, হামলাকারী গুলিতে নিহত হয়েছেন এবং বেলত্রেম গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন।

সাহসিকতার সঙ্গে জিম্মিকে হামলাকারীর হাত থেকে উদ্ধারের জন্য ওই পুলিশ অফিসারের ব্যাপক প্রশংসা চলছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৮
এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।