জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এর উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে এই ওষুধ পাঠানো হয়। ডিলিয়ন’স বে থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে ভানুয়াতু পাহাড়ের বিপরীত দিকের গ্রাম ইরোম্যাঙ্গোতে উড়ে যায় এই ড্রোন।
ইউনিসেফ জানায়, ভানুয়াতু প্রশান্ত মহাসাগরের এক দ্বীপ যেখানকার বেশিরভাগ গ্রামই ভৌগলিকভাবে খুব দুর্গম। দ্বীপটির সঙ্গে একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা হলো নৌপথ। আর দ্বীপের ভেতরে আছে শুধু পায়ে হাঁটার পথ। এতে সময় লাগে কয়েক ঘণ্টা। তাই দ্বীপের বাসিন্দাদের প্রায়শই ওষুধ সংকটে ভুগতে হয়। দ্বীপটির মাত্র ২০ শতাংশ শিশু প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণের সুযোগ পায়।
তবে ড্রোনের মাধ্যমে এই অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ওষুধ সরবরাহের সম্ভাবনা দেখছে ইউনিসেফ। সংস্থাটি মনে করছে, এখানকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেলে ড্রোন পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে বিশ্বের অন্যান্য দুর্গম স্থানে।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর বলেন, আজকের ড্রোনের এই ছোট ফ্লাইট ভবিষ্যতের স্বাস্থ্যখাতের জন্য এক বড় যাত্রা। শিশুদের কাছে পৌঁছাতে যখন বিশ্বকে হিমশিম খেতে হচ্ছে তখন শেষ মাইলে থাকা শেষ শিশুটির জন্য ওষুধ প্রেরণে পরিবর্তনীয় ভূমিকা রাখতে পারে ড্রোন।
ইউনিসেফ প্রেরিত ড্রোনটি থেকে ওষুধ গ্রহণ করেন স্থানীয় নার্স মিরিয়াম নামপিল। প্রথমে ওষুধ গ্রহণ করে একটি শিশু। এরপর একে একে ১২টি শিশু এবং পাঁচ গর্ভবতী নারীকে ওষুধ দেওয়া হয় ড্রোনে উড়ে আসা ওষুধ থেকে।
ওষুধের মান বজায় রাখতে আর সেগুলোকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ঠাণ্ডা রাখতে ড্রোনে একটি ফোম বক্সের ভেতর বরফও সরবরাহ করা হয়। নার্স নামপিল বলেন, পাহাড় আর নদী পেরিয়ে সাধারণভাবে ওষুধ আনার সময় সঙ্গে বরফ বক্স বহন করা খুবই কষ্টের। বিশেষ করে বৃষ্টি আর পাহাড়ের পাথুরে ঢাল বেয়ে চলাচল অনেক বিপজ্জনক হয়ে যায়। মূল ভূখণ্ডে যাওয়া অনেক কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ। তাই আমি মাসে একবার শিশুদের জন্য ওষুধ আনতে যেতাম। ড্রোনের কারণে এখন মনে হচ্ছে ওষুধের আর কমতি হবে না এখানে।
ইউনিসেফ এর মতে, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে কোন বাণিজ্যিক ড্রোন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ওষুধ সরবরাহের ঘটনা এটিই প্রথম।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৮
এসএইচএস/জেডএস