ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নির্বাচন স্থগিত করতে ‘যুদ্ধ’ বাঁধাতে চেয়েছিলেন নেতানিয়াহু!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯
নির্বাচন স্থগিত করতে ‘যুদ্ধ’ বাঁধাতে চেয়েছিলেন নেতানিয়াহু!

চলতি বছরের এপ্রিলে ইসরায়েলের জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ডানপন্থী লিকুদ পার্টি খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। সেবার কোনো দল বা জোটই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিশ্চিত করে সরকার গঠন করতে না পারায় দেশটিতে পুনর্নির্বাচনের আয়োজন করা হয়।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলে সেই পুনর্নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা না হলেও বেসরকারিভাবে বলা হচ্ছে, এবারে নেতানিয়াহুর দলের অবস্থা আরও পড়তির দিকে।

সম্ভবত তার দল গতবারের চেয়েও কম আসন পেতে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে নতুন সরকার গঠনের স্বপ্ন তার জন্য আরও কঠিন হয়ে পড়বে।

এমনিতেই নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা আছে। ক্ষমতায় থাকায় নানাভাবে সেসব থেকে গা বাঁচিয়ে চলতে পারলেও হেরে গেলে তার রাজনৈতিক জীবন হুমকির মুখে পড়বে। এসব ছাড়াও ইসরায়েলিদের মধ্যে ‘যুদ্ধবাজ’ বলে পরিচত এ নেতার গ্রহণযোগ্যতা আগের চেয়ে অনেকটাই পড়তির দিকে। সব মিলিয়ে ইসরায়েলি এ নির্বাচন ঘিরে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।  

এরই মাঝে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, নিজের সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ‘সংশয়ী’ হয়ে ওঠা নেতানিয়াহু সম্ভবত এই মুহূর্তে পুনর্নির্বাচনের মুখোমুখি হতে চাইছিলেন না। নির্বাচন স্থগিত করতে তিনি ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ‘যুদ্ধ’ বাঁধানোর পরিকল্পনা করেন বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সূত্রে জানা গেছে।  

খবরে বলা হয়, পুনর্নির্বাচন স্থগিত করতে গাজায় যুদ্ধ পরিচালনার জন্য ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ওপর চাপ প্রয়োগ করেন নেতানিয়াহু। কিন্তু শেষমেষ সামরিক বাহিনী তার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কেএএন জানায়, পুনর্নির্বাচনের আগে নেতানিয়াহু জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মির বেন-শাব্বাতকে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিটির প্রধান হানা মেলসারের সঙ্গে এই বলে সাক্ষাৎ করতে বলেন যে, সম্ভাব্য যুদ্ধের কারণে সাধারণ নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে, তারা যেন এ ব্যাপারে প্রস্তুতি রাখে।  

গত সপ্তাহে গাজা থেকে ইসরায়েলের আশদদ শহরে নেতানিয়াহুর এক নির্বাচনী সমাবেশে দু’টি রকেট হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। সে সময় নেতানিয়াহু দ্রুত মঞ্চ থেকে নেমে নিরাপদ স্থানে সরে যান।  

পরে গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান চালানোর ব্যাপারে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেন।  

খবরে বলা হয়, নেতানিয়াহু সামরিক বাহিনীকে গাজা উপত্যকায় অভিযান চালানোর নির্দেশ দেওয়ার খুব কাছাকাছি ছিলেন। কিন্তু ইসরায়েলি অ্যাটর্নি জেনারেল আভিচাই মেন্দেলবিত তাকে ওই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, ২০১৮ সালে পাস হওয়া আইন অনুসারে মন্ত্রিসভার অনুমোদন ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী কোনো যুদ্ধের ঘোষণা দিতে পারবেন না। তেমন কিছু হলে তা আইনবিরুদ্ধ হবে এবং পরে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।  

শেষমেশ সুবিধা করতে না পেরে যুদ্ধ বাঁধানোর পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯  
এইচজে/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।