ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

করোনার চিকিৎসায় ‘গেম চেঞ্জার’ ওষুধ পেয়ে গেছে রাশিয়া!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪২ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২০
করোনার চিকিৎসায় ‘গেম চেঞ্জার’ ওষুধ পেয়ে গেছে রাশিয়া!

কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় শুরু থেকেই নানা ওষুধ ছিল আলোচনায়। বিশ্বের বহু দেশ পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করছে এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের সারিয়ে তুলতে। অনেকেই সাফল্য পাচ্ছেন বলেও খবর মিলছিলো বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে। থেমে ছিল না অন্যতম ভুক্তভোগী দেশ রাশিয়াও। নানা চেষ্টার পর দেশটি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য এমন একটি ওষুধের অনুমোদন দিয়েছে যাকে বলা হচ্ছে ‘গেম চেঞ্জার’। এটি দিয়ে দেশটিতে আগামী সপ্তাহে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা শুরুর প্রস্তুতি চলছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলের পর সবচেয়ে বেশি প্রায় ৪ লাখ ১৫ হাজারের মতো মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে রাশিয়ায়। দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৮৫৫ জনের।

এমন সময় ‘গেম চেঞ্জার’ ওষুধ খুঁজে পাওয়ার খবর শুধুমাত্র রাশিয়া নয় সুসংবাদ পুরো বিশ্বের জন্যই।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানাচ্ছে, রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসায় অ্যাভিফ্যাভির ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। প্রথম ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্র্যায়ালে প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়ার পরই এটি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়।

অ্যাভিফ্যাভির হচ্ছে ফ্যাভিপিরাভিরের পরিবর্তিত সংস্করণ। ফ্যাভিপিরাভির জাপানে ফ্লুর চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। আর এটিকে সংস্কারের মাধ্যমে অ্যাভিফ্যাভির তৈরি করেছে রাশিয়া। যা তৈরি করা হয়েছে বিশেষ করে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য।

দাবি করা হচ্ছে, ‘এটি কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে বিশ্বের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রতিষেধক। ’

এ প্রতিষেধকের ফর্মুলা দ্রুতই বিশ্বকে জানানো হবে। একইসঙ্গে জুন মাসের মধ্যে রাশিয়ার হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করা হবে ওষুধটির ৬০ হাজার ডোজ।

রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ) ওষুধটি রাশিয়ান ফার্মাসিটিক্যাল ফার্ম চেমরারের সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি করেছে।

আরডিআইএফ বলছে, প্রথম ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সারিয়ে তুলতে অ্যাভিফ্যাভির খুবই কার্যকরী বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

ফ্যাভিপিরাভির।

আরডিআইএফ প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেন, ওষুধটির ক্লিনিক্যাল টেস্টে খুবই ভালো ফল পাওয়া গেছে। ওষুধটি ব্যবহারের চারদিন পর ৬৫ শতাংশ রোগীর শরীরেই ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত ধাপে বর্তমানে ৩৩০ জন রোগীর ওপর প্রয়োগ করা হচ্ছে ওষুধটি।

কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এটা গেম চেঞ্জার হতে যাচ্ছে। এটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ কমাবে।

এ ওষুধ দিয়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রাশিয়ার রোগীদের চিকিৎসা শুরু হবে ১১ জুন থেকে।

ফ্যাভিপিরাভির বানিয়েছে জাপানের ফুজিফিল্ম টোয়ামা কেমিক্যাল। এই ড্রাগের ব্র্যান্ড নাম হল ‘অ্যাভিগান’। ২০১৪ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের প্রকোপ যখন মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে তখন এই ওষুধ বানিয়েছিল জাপানের অন্যতম বড় ফার্মাসিউটিক্যালস ফুজিফিল্ম। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা সম্ভাবনা খুঁজে পাওয়ার পর জাপানে করোনা রোগীদের ওপর ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়। দেশটি কিছুটা সাফল্য পাওয়ার পর চীন, ইতালিতেও এর ব্যবহার শুরু হয়। আর রাশিয়া এর সংস্কার করে দিল ‘গেম চেঞ্জার’ ওষুধ তৈরির খবর।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪২ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২০
এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।